হতাশ মানুষেরা কেন কষ্টের গান বেশি শুনে

ODD বাংলা ডেস্ক: বাজে মানসিকতাকে নিয়ন্ত্রণ নয় বরং কষ্টের গানগুলো হতাশ মানুষদের মানসিক প্রশান্তি দেয়,মনের উৎকর্ষ সাধন করে বলে ধারনা অনেকের। আমাদের মেজাজের উপর গানের প্রভাব কেমন তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা! তাইতো প্লে-লিস্টে কাজের সময়গুলোর জন্য ধুম-ধড়ক্কা মিউজিক থাকে, চা খাওয়ার সময়ের জন্য থাকে কোমল সুরের মিউজিক আর অবসাদের সময়গুলোর জন্য থাকে বিষাদের মিউজিক। নেতিবাচক আবেগের বিশোধনের জন্য আমরা মিউজিক ব্যবহার করি। এ বিষয়ে প্রাচীন গ্রীসে একটি শব্দের ব্যবহার ছিল ‘ক্যাথারসিস’। এটি একটি চাপমুক্তির প্রক্রিয়া, শক্তিশালী অবদমিত আবেগ থেকে মুক্তির প্রক্রিয়া। হতাশ মানুষ যখন বিষাদের গান শুনে তখন তাদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মিল পাওয়া যেতে পারে: অজ্ঞাতসারেই এহেন কাজ তাদের কষ্টের অনুভূতি থেকে পরিত্রাণ দেয় এবং নেতিবাচক আবেগকে পরিশোধন করে।

কয়েক বছর আগে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে,হতাশার ভুক্তভুগী মানুষ কষ্টের মিউজিক বেশি শুনে। এর কারণ হিসেবে অনেকে নেতিবাচক অনুভূতির নিয়ন্ত্রণ অনুসন্ধানকে দায়ী করেছেন। আরেক গবেষণায় যদিও এ ধারণার প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলা হয়েছে, হতাশ মানুষ নেতিবাচকতাকে স্থায়ী করতে চায়না বরং তাদের বিষাদের মিউজিক শুনে ভালো লাগে। আর ভালো লাগলেই যে নেতিবাচকতা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তার কী নিশ্চয়তা আছে?

যাহোক, প্রথম গবেষণায় ৩৮ জন শনাক্তকৃত হতাশ এবং হতাশ নন এমন ৩৮ জন বিভিন্ন ধরনের গান শুনতে দেয়া হয়। গবেষণার প্রথমাংশের ফলাফল উপরোল্লিখিত ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ- যারা হতাশ তারা অন্যদের থেকে বিষাদের মিউজিক শুনতে বেশি আগ্রহ দেখায়। এমনটি করার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, এ ধরনের গান তাদের মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। দ্বিতীয়বার কষ্টের গান শুনতে দিলে হয় অংশগ্রহণকারীরা অধিক আনন্দানুভূতি এবং কম বিষাদের অনুভূতির কথা জানান।

গবেষকগণ বলেন,‘গান শোনার প্রতীকধর্মী এ কাজে মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে (এমডিডি) আক্রান্ত মানুষ বিষাদের গান শোনায় বেশি আগ্রহ দেখায়। এ ধরনের মিউজিকের এনার্জি লেভেল কম হওয়ায় মিউজিকগুলো তাদের বিষাদের অনুভূতি বাড়াতে বা কমাতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে।’ গবেষণাটি ঠিক কেন হতাশ মানুষ বিষাদের গান শোনায় আগ্রহ বেশি দেখায় তার কারণ জানাতে ব্যর্থ হয়।তবে এটা বলা যায় যে, হতাশাগ্রস্ত মানুষ বিষাদের সময়গুলোতে বিষাদের গানকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করে যার সাথে সব কথা শেয়ার করা যায়। সর্বোপরি বলতেই পারি, বাজে সময়ে বিষাদের গান হতাশ মানুষদের নেতিবাচক আবেগ-অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.