বিদেশে পড়াশোনার কথা বলে ৩৮ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল নববধূ

ODD বাংলা ডেস্ক: উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পড়াশোনার ইচ্ছে রয়েছে তাদের মেয়ের। পড়াশোনার খরচাপাতি জোগালে বিয়ের পর তাদের মেয়ের সঙ্গে পাত্রও তো বিদেশে গিয়ে থাকতে পারেন! বিয়ের আগে নাকি পাত্রপক্ষকে এমন কথাই বলেছিলেন পাত্রীর আত্মীয়স্বজনেরা। সেই বিয়ের তিন দিন পরেই মাথায় হাত স্বামীর!
পাত্রপক্ষের কাছ থেকে হবু স্ত্রীর ইচ্ছাপূরণের প্রতিশ্রুতি আদায়ের পরই চারহাত এক হয়েছিল। সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন পঞ্জাবের দেবীন্দর সিংহ এবং হরজশনপ্রীত সিংহ। তবে বিয়ের ৩ দিন পরেই স্ত্রী নাকি কানাডা উড়ে গিয়েছিলেন। তার পর?

সে কথাই পুলিশকে জানিয়েছেন ভারতের মোগা জেলার বাসিন্দা গুরসেবক সিংহের ছেলে দেবীন্দর। তার অভিযোগ, স্ত্রীর উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাতে ৩৮ লাখ টাকা খসে গিয়েছে। তবে উচ্চশিক্ষার খরচ বহন করলেও বিয়ের তিন দিনেই কানাডায় উড়ে গিয়েছেন স্ত্রী। এমনকি, তার সঙ্গে যোগাযোগও রাখতে চান না।

২০১৮ সালের অগস্টে লুধিয়ানার বাসিন্দা সুখবিন্দর সিংহের মেয়ে হরজশনপ্রীতের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল দেবীন্দরের। মোগা জেলার পুলিশের কাছে দেবীন্দরের অভিযোগ, কানাডায় পৌঁছনোর পর তার প্রতি স্ত্রী আচরণ একেবারে পাল্টে গিয়েছে। তার সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্কও ছিন্ন করেছেন নতুন স্ত্রী।

বিয়ের দশ দিন পর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কাজের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ দেবীন্দরের। কানাডায় ফোন করলে তাকে নাকি গালিগালাজও করেছেন স্ত্রী।

স্ত্রীর আচরণ দেখে শেষমেশ শ্বশুরবাড়ি ছুটে গিয়েছিলেন দেবীন্দর। তবে সেখানেও নাকি অপমানিত হতে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মোগা জেলার বাধনিকালাম থানায় স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন দেবীন্দর।

পুলিশের কাছে স্ত্রী ছাড়া শ্বশুর সুখবিন্দর সিংহ, শাশুড়ি হরপ্রীত কউরের বিরুদ্ধেও নালিশ ঠুকেছিলেন দেবীন্দর। এছাড়া, হরজিৎ সিংহ, আমনজ্যোত কউর নামে দু’জন আত্মীয়র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। ওই আত্মীয়রা স্ত্রীর বাপের বাড়ি এলাকার বাসিন্দা।

গত বছর দেবীন্দরের কাহিনি ভেসে উঠেছিল সংবাদমাধ্যমে। ‘ভয়েস ফর মেন ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংবাদমাধ্যমটি দেবীন্দরের কাহিনি তুলে ধরেছে।

প্রসঙ্গত, লিঙ্গপক্ষপাতমূলক আইনের বিরুদ্ধে সরব ওই সংবাদমাধ্যমটি পুরুষের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে শামিল।

ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, অভিযোগ করলেও হরজশনপ্রীতের বিরুদ্ধে এফআইআর করতেই এগারো মাস কাটিয়ে দিয়েছিল স্থানীয় পুলিশ। তার পর স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা রুজু করেছিল তারা।

দেবীন্দরের দাবি, দু’পক্ষের সম্মতিতেই এ বিয়ে হয়েছে। বিয়ের আগে পাত্রীর আত্মীয়েরা জানিয়েছিলেন, বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং স্টিস্টেম (আইইএলটিএস) পরীক্ষায় পাশ করেছেন হরজশনপ্রীত।

দেবীন্দরের আরও দাবি, কানাডায় পা রেখেই তার সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন হরজশনপ্রীত। কী সমস্যা হয়েছে তা জানতে শ্বশুরবাড়ি ছুটে গিয়েছিলেন। তবে সেখানেও জুটে দুর্ব্যবহার।

শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরে স্ত্রীকে ফোন করলেও লাভ হয়নি। হরজশনপ্রীত তার উদ্দেশে অকথ্য কটূক্তিও করেছিলেন বলে দাবি দেবীন্দরের।

স্ত্রীর ও তার পরিবারের থেকে প্রতারণার শিকার দেবীন্দর। এমন দাবি করেছিল ‘ভয়েস ফর মেন ইন্ডিয়া’। তাদের প্রশ্ন, এ ধরনের ঘটনায় সচরাচর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে যান না স্বামী। ফলে প্রতারণা করেও ছাড় পেয়ে যান স্ত্রী।

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও করেছে ওই সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, পণের অভিযোগে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে দ্রুত তৎপর হয় পুলিশ। তবে স্ত্রীর হাতে স্বামী নির্যাতিত হলে তাদের তৎপরতা নেই।

যদিও এই ঘটনার তদন্তে নেমে মোগা জেলার পুলিশ জানিয়েছে, হরজশনপ্রীত-সহ তার মা-বাবার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ এবং ১২০-বি ধারায় প্রতারণার মামলা রুজু করা হয়েছে। হরজশনপ্রীতকে পাকড়াও করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.