কোন দিকে থাকবে ফ্রিজ, কোথায় গ্যাস ওভেন? জেনে নিন রান্নাঘরের সঠিক বাস্তু

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বাড়ির সদস্যদের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য রান্নাঘরের বাস্তু সঠিক রাখার পরামর্শ দেয় বাস্তু শাস্ত্র। রান্নাঘরের অবস্থান, জল রাখার স্থান, আবার গ্যাস ওভেন কোথায় রাখবেন সে বিষয়েও জানিয়ে থাকে এই শাস্ত্র। বাস্তু সম্মত রান্নাঘর কেমন হওয়া উচিত জেনে নিন।


১. রান্না করার সময় মুখ যাতে পূর্ব দিকে থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। আবার পানীয় জল থাকতে হবে উত্তর-পূর্ব দিকে। রান্নার জন্য ব্যবহৃত অগ্নি আমাদের স্বাস্থ্য, যশ ও সমৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। আগ্নেয় কোণ অর্থাৎ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রান্নাঘরের অবস্থানকে শাস্ত্র সম্মত মনে করা হয়।


২. কোনও কারণে এমন সম্ভব না-হলে পূর্ব দিকে রান্নাঘর বানাতে পারেন। ভুলেও উত্তর-পূর্ব দিকে রান্নাঘর বানাবেন না। কারণ এর ফলে মানসিক অবসাদ বাড়তে পারে। পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার ব্যয়ও বহুগুণ বেড়ে যায়। অর্থ অপচয় হতে পারে।


৩. নৈঋত্য কোণ অর্থাৎ দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের রান্নাঘরকেও সঠিক মনে করা হয় না। এর ফলে গৃহ কলহ, সমস্যা, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আবার বায়ব্য কোণ অর্থাৎ উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত রান্নাঘর ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কাও বাড়িয়ে দেয়।


৪. বায়ব্য কোণে রান্নাঘর হলে, সেই পরিবারের সদস্যরা রান্নায় মনোনিবেশ করবেন না, বরং একে অপরকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত থাকবেন।


৫. রান্নাঘরের প্ল্যাটফর্ম পূর্ব বা আগ্নেয় কোণে হওয়া উচিত। এই রান্নাঘরে রান্নার সময় স্বাভাবিক ভাবেই মুখ পূর্ব দিকে থাকবে।


৬. পানীয় জল, ওয়াশ বেসিন ঈশান কোণে থাকা ভালো। মেঝে উত্তর-পূর্ব দিকে ঢালু থাকতে হবে। রান্নাঘরে ফ্রিজ রাখলে তা পশ্চিমের দেওয়ালে রাখবেন। মিক্সার, টোস্টার, ওভেন রাখতে হবে আগ্নেয় কোণ বা দক্ষিণ দিকে।


৭. রান্নার কাজে ব্যবহৃত জিনিস রাখার জন্য স্ল্যাব, ক্যাবিনেট দক্ষিণ বা পশ্চিম দিকে রাখুন। অন্ন, শস্য, ডাল রাখবেন বায়ব্য কোণে। রান্নাঘরের জানালা বড় হওয়া ভালো।


৮. রান্নার সময় গৃহিণীর পিঠ যাতে রান্নাঘরের প্রবেশদ্বারে না-থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।


৯. রান্নাঘরে হাল্কা রঙ করাবেন। গোলাপী, কমলা, হাল্কা নীল বা সাদা রঙ ভালো।


১০. গ্যাসওভেন পরিবারের ধন-সমৃদ্ধির কারক, তাই এটিকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। তা না-হলে সমৃদ্ধির পথে বাধা আসবে এবং স্বাস্থ্য দুর্বল হবে।


১১. রান্নাঘরের গ্যাসওভেন বাড়ির প্রবেশদ্বার থেকে যাতে বাইরে না-দেখা যায়, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। তবে এমন সম্ভব না-হলে হাল্কা পর্দা লাগিয়ে রান্নাঘর ঢাকার চেষ্টা করুন।


১২. শৌচালয়ের ওপর, নীচে, পাশে বা সিঁড়ির নীচে রান্নাঘর বানাবেন না। এমন রান্নাঘর স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, পাশাপাশি অর্থ ও ভাগ্যের ওপরও দুষ্প্রভাব ফেলে।


১৩. রান্নাঘরে জল ও আগুন একসঙ্গে রাখলে পরস্পর বিরোধী পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের মহিলাদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। পরিবারে কলহ বাঁধে।


১৪. এ ছাড়াও গ্যাসের মুখোমুখি স্থানে ফ্রিজ ও জল রাখবেন না। ওয়াশিং মেসিনও গ্যাসের সোজাসুজি রাখতে নেই।


১৫. বাড়ির সঠিক স্থানে জল রাখলে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য অনুকূল থাকে এবং সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি হয়। রান্নাঘরের উত্তর-পূর্ব বা পূর্ব দিকে জল রাখা উচিত।


১৬. ঈশাণ কোণ জলের স্থান। অতএব জলের ট্যাঙ্ক বা বোরিং পূর্ব, উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে থাকা শ্রেয়। জলের পাম্পও এদিকে রাখবেন।


১৭. দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর-পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে কুঁয়ো অথবা টিউবওয়েল থাকা উচিত নয়। এর জন্য উত্তর-পূর্ব স্থানটিই উপযুক্ত। এর ফলে বাস্তুর ভারসাম্য বজায় থাকে। এ ছাড়া অন্য দিকে কুঁয়ো বা টিউবওয়েল থাকলে তা বন্ধ করে দিন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.