ডিম খেলে স্ট্রোকসহ যেসব কঠিন রোগের ঝুঁকি কমে

ODD বাংলা ডেস্ক: প্রতিদিনের জীবনে ডিমের ব্যবহার সবক্ষেত্রেই। ডিমকে বলা হয় পরিপূর্ণ খাদ্য। পৃথিবীতে মাত্র কয়েকটি খাদ্যকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ডিম অন্যতম। খাওয়া থেকে শুরু করে রূপচর্চা কিংবা চুলের যত্নেও ব্যবহৃত হয় ডিম। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। ডিমে থাকে ৯টি ‘প্রয়োজনীয়’ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা প্রোটিনের বিল্ডিং ব্লক।

ডিমে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে যেমন- ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামিনো অ্যাসিড। এছাড়া এতে উচ্চ মানের প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, কোলিন, ভিটামিন বি ১২, একাধিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। যা শরীরের কোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ডিম শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ, শরীর নিজে এই অ্যাসিডগুলো তৈরি করতে পারে না। ডিমের সাদা অংশে অর্ধেক পরিমাণ প্রোটিন থাকে। আর চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম থাকে। জানলে অবাক হবেন যে, ডিম খেলে কমে স্ট্রোকের ঝুঁকি। এছাড়া বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও কমাতে পারে ডিম।

‘ভালো’ কোলেস্টেরল বাড়ায়
ডিমে থাকা কোলেস্টেরল শরীরে ‘ভালো’ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। যাকে বলা হয় এইচডিএল। যারা দিনে তিন বা তার বেশি ডিম খান তাদের শরীরে এইচডিএলের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর বা খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের পরিমাণ কমতে শুরু করে।

ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে পারে
শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেড়ে গেলে বাড়ে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি। এক্ষেত্রে ডিম খেলে এতে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম করে।

স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়া স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। সাম্প্রতিক একটি চীনা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে প্রায় একটি করে তাদের রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক থেকে মারা যাওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কম।

দ্রুত পেট ভরায়
একটি ডিমে প্রায় ৭০ ক্যালোরি থাকে। যে কোনো সময় ঝটপট আপনি ডিম সেদ্ধ কিংবা অমলেট করে খেতে পারেন।

এর সঙ্গে সালাদ বা ব্রেড যোগ করেও দ্রুত সেরে ফেলতে পারেন সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার হিসেবে।

ডিম সহজলভ্যও বটে
মাছ-মাংসের তুলনায় ডিমের দাম কম। তাই এর ব্যবহার বেশি। আবার এতে উচ্চ-মানের প্রোটিনও থাকে। তাই নিয়মিত ডায়েটে ডিম রাখা সবার পক্ষেই সম্ভব।

হার্ট সুস্থ রাখে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ডিম বেশি খান তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এমনকি প্রি-ডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তরাও ওজন কমানোর ডায়েটে ডিম রেখে উপকৃত য়েছেন। সাম্প্রতিক চীনা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন একটি ডিম খেয়েছেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ কম অন্যদের তুলনায়।

বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমায়
দৈনিক সকালের নাস্তায় ডিম খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকবে। আবার সারা দিন অতিরিক্ত খাওয়ার লোভ ও প্রবণতা কমাবে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা সকালে একটি ডিম খান তারা দুপুরের খাবারে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি কম গ্রহণ করেন।

চোখ ভালো রাখে
ডিমে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট লুটিন ও জেক্সান্থিন আপনার চোখের রোগ যেমন ছানি ও বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয় থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাকেও থাকে এমন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

মস্তিষ্ক তীক্ষ্ণ করে
ডিমে ভিটামিন ডি থাকে, যা অন্যান্য খাবারে পাওয়া যায় না সহজে। এতে কোলিন নামক কিছু আছে, যা নোগিনের স্নায়ু কোষগুলোকে (নিউরন) একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগে সহায়তা করে। গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো নারীদের জন্যও কোলিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি মস্তিষ্কের বিকাশে বড় ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ডিম খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। ডিমের গুণগত মান সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আজ শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ২০তম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্রতিদিন একটি ডিম, পুষ্টিময় সারাদিন’। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত আই ই সি ভিয়েনা কনফারেন্স থেকে দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী চলছে একটি ইতিবাচক ক্যাম্পেইন। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিমের প্রয়োজনীয়তার বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে- প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবারে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.