কালীপুজো ও ভূত চতুর্দশী এবার এক তিথিতে! এদিন যম প্রদীপ জ্বালানোর গুরুত্ব কী, জানুন

ODD বাংলা ডেস্ক: কালীপুজোর ঠিক আগের দিন পালিত হয়ে ভূত চতুর্দশী।আলোর এই উত্‍সবে গোটা দেশই আলোর রোশনাই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। দেশের প্রতিটি কোণেই সাড়ম্বড়ে পালিত হয় এই আলোর উত্‍সব। কালীপুজোর আগে ধনতেরাস ও তারপরই পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। এই বিশেষ দিনটি ছোট দীপাবলি, নরক চতুর্দশী, যম চতুর্দশী, রূপ চতুর্দশী বা রূপ চৌদাস নামেও পরিচিত। এই দিনে যমের পুজো করা হয়, জ্বালানো হয় যম প্রদীপ। নরক চতুর্দশীর দিনে যম প্রদীপ কেন জ্বালানো হয়, তার গুরুত্ব কী, তা দেখে নিন…

ছোট দীপাবলি বা নরক চতুর্দশীকে বাংলায় ভূত চতুর্দশী বলা হয়। ধনতেরাসের পরের দিনই এই বিশেষ দিনটি পালিত হয়। তবে এই বছর এই দিনি ধনতেরাসের পরের দিন নয়, একদিন পর পালিত হবে। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি, ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যে ৬টা ৪ মিনিটে শুরু হবে। শেষ হবে ২৪ অক্টোবর বিকেল ৫টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত। উদয় তিথি অনুসারে, নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী পালিত হবে আগামী ২৪ অক্টোবর।

যম প্রদীপের গুরুত্ব

এই বিশেষ দিনে বাড়ির সদর দরজায় ও ঠাকুর ঘরে যম প্রদীপ জ্বালানো হয়। বিশ্বাস করা হয়, এমনটা করলে মৃত্যুভয় তাড়া করে বেড়ায় না। যমের আরাধনা করলে বাড়ির সদস্যদের উপরও বিপর্যয় নেমে আসে। তাই এই দিন যমের প্রদীপ জ্বালানো হয়। এবার এই তিথিতেই পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। মনে করা হয়, এইদিনে সন্ধে নামার পরই অশীরীরী প্রেতাত্মারা বাড়ির চারিদিকে ঘুড়ে বেড়ায়। তাদের হাত থেকে মুক্তি পেতে গৃহস্থ বাড়িতে মোট ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। শুধু তাই নয় ১৪ শাকও খাওয়ার চল রয়েছে। মনে করা হয়, এই তিথিতে নিয়ম মেনে চৌদ্দ পুরুষের আত্মাদের চলাফেরার পথ যাতে আলোকময় হয়, শান্তি বজায় রাখেন, তার জন্য এই চৌদ্দটি প্রদীপ জ্বালানো হয়।

মাটির নয়, প্রদীপ তৈরি করা হয় ময়দা দিয়ে 
আত্মাদের অভিশাপ থেকে বাঁচতে এদিন অনেক আচার পালন করা হয়। হিন্দুদের কাছে এটি একপ্রকার হ্যালুইন উত্‍সব। বিদেশে এইদিন বিরাট মাপের মিষ্টি কুমড়োর মধ্যে চোখ-মুখ এঁকে মোমবাতি জ্বালিয়ে পালন করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই প্রেতাত্মারা খুব খুশি হন। সন্ধ্যের সময় পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনায় ও যাতায়াতের পথকে আলোকিত করতে সাতটি প্রদীপ দেওয়া হয়। একে বলে যম প্রদীপ। নরক চতুর্দশীতে প্রদীপ দান করারও বিশেষ তাত্‍পর্য রয়েছে। এইদিনে যম নামে একটি বড় প্রদীপ জ্বালানোই রীতি। মনে রাখা দরকার, এইদিনে মাটির নয়, ময়দার তৈরি প্রদীপ ব্যবহার করা শুভ। ময়দার প্রদীপ তৈরি করে তাতে সরষের তেল ও সুতুলি দিন। তারপর সেই প্রদীপটি সারা ঘরে ঘোরান ও বাড়ির বাইরে কোথাও একটি জায়গা রাখুন। মনে রাখবেন, অন্যের বা পাশের বাড়িতে প্রদীপ রাখতে যাবেন না।

পুজোর পদ্ধতি

কার্তিক কৃষ্ণ চতুর্দশীর রাত্রি শেষে যেদিন চতুর্দশী চন্দ্রোদয়ের সময় এই শ্লোক যপ করলে তা কার্যকরী হয়।

‘যমলোকদর্শনভাবকমোহমাভ্যাঙ্কসনাম করিষ্যে।’

এই বিশেষ দিনে পুজো করলে সূর্যোদয়ের আগে স্নান করে আয়ুর্বেদ অনুসারে উপবাস রাখুন। সন্ধ্যের সময় যম নামের প্রদীপ জ্বালান। এতে পরিবারের জন্য অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। মনে করা হয়, এই প্রদীপ জ্বালিয়ে যমলোকে যাওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.