লক্ষী পুজোয় বানিয়ে ফেলুন নাড়ু থেকে মোয়া কিংবা নিমকি, এই সকল পদের সঙ্গে জড়িত বাঙালির নস্টালজিয়া

 


ODD বাংলা ডেস্ক: রাত পোহালেই চারিদিকে উচ্চারিত হবে মা লক্ষ্মীর মন্ত্র। শুরু হবে দেবীর আরাধনা। যদিও আজ রাত থেকেই পড়ছে লক্ষ্মী পুজোর তিথি। কিন্তু, কাল ঘরে ঘরে পুজিত হবেন ধনদেবী। এবছর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর তিথি পড়ছে ৮ অক্টোবর শনিবার রাত ৩/২৯/৪২। থাকবে ৯ অক্টোবর রাত ২/২৫/৫ পর্যন্ত। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোতে অধিকাংশ রমণীরা মায়ের ভোগ রান্না করে থাকেন। খিচুড়ি, পায়েস, লাবড়া যেমন অনেকে বানান। তেমন অনেকে তৈরি করে নাড়ু কিংবা মোয়ার মতো মিষ্টান্ন। পুজোর ভোগে রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য। 



বাঙালির লক্ষ্মী পুজোর সঙ্গে নাড়ু, মুড়ির মোয়া কিংবা নিমকির একটি ঐতিহ্য জড়িত আছে। এক সময় মা-ঠাকুমারা নিজের হাতে বানাতেন এই সকল পদ। গুড় জ্বাল দিয়ে তাতে মুড়ি দিয়ে হাতে পাকিয়ে বানাতেন মোয়া। কিংবা নারকেল কুড়ি তার সঙ্গে গুড়ের মতো নানান উপাদান মিশিয়ে বানাতেন নাড়ু। নাড়ুর গন্ধে ম ম করত চারিদিন। 




কিন্তু, সময় বদলেছে। এখন রমণীরা অফিস ও বাড়ি এক সঙ্গে সামলে চলেছেন। সে কারণে বাড়িতে নাড়ু, মোয়া, কিংবা মিষ্টান্ন বানানোর সময় নেই। এখন সকলেরই ভরসা মিষ্টির দোকান। সকলের কথা মাথায় রেখে প্রতি বছর পুজোর আগে নানা রকম মিষ্টি বানিয়ে থাকেন তারা। মোয়া থেকে হরেক নাড়ু এমনকী বিভিন্ন স্বাদের নিমকিও মেলে দোকানে।  



এখন প্রায় সব মিষ্টির দোকানেই পাওয়া যায় নাড়ু ও মুড়ি মোয়া। কিংবা মেলে নিমকি। লক্ষ্মী পুজোর দিন অধিকাংশ বাড়িতেই অতিথি সমাগম হয়। এই দিন পুজোর সঙ্গে বিজয়াও সাড়তে আসেন অনেকে। সে কারণে মিষ্টি ও নিমকি উপস্থিত থাকে প্রায় সব হেঁসেলে। সময় থাকতে দোকান থেকে এই সকল খাবার কিনে আনেন সকলে। 




বছরটা নয় হোক একেবারে অন্য রকম। এই বছর দেবীর ভোগ থেকে অতিথি আপ্যায়নের মিষ্টি বানান নিজের হাতে। ব্যস্ততম জীবন থেকে সময় বের করে নিয়ে ভোগের জন্য বানিয়ে ফেলুন মুড়ির মোয়া ও নাড়ু। সঙ্গে বানান নিমকি। আজ রইল বাঙালির এই প্রিয় তিন পদের রেসিপি। এক ঝলকে দেখে নিন কীভাবে বানাবেন।   



মা লক্ষ্মীকে তুষ্ট করতে প্রায় সকল রমণীরা নিজের হাতে ভোগ রাঁধেন। খিচুড়ি, পায়েস থেকে লাবড় -সবই তৈরি হয় হেঁসেলে। সঙ্গে থাকে মিষ্টান্ন। আবার অনেক বাড়িতে দেবীকে শুধু নাড়ু-মোয়ার মতো মিষ্টি নিবেদন করা হয়। এবার এই সকল মিষ্টি পদও বানান নিজের হাতে। জেনে নিন কীভাবে বানাবেন।    




লক্ষ্মী পুজোর দিন মুড়ির মোয়া সকলেই দেবীকে নিবেদন করে থাকেন। এই মুড়ির মোয়া বানাতে প্রয়োজন  মুড়ি (২৫০ গ্রাম), আখের বা খেঁজুর গুড় (১০০ গ্রাম), জল (পরিমাণ মতো), ঘি (পরিমাণ মতো)। এই কয়টি উপকরণ দিয়ে সহজে বানিয়ে ফেলুন মুড়ির মোয়া। 



প্রথমে মৃদু আঁচে কড়াই বসান। এবার তাতে অল্প জল দিয়ে গুড় দিয়ে দিন। এভাবে জ্বাল দিন। গুড় গলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। গুড় আঠালো হয়ে এলে তাতে মুড়ি দিয়ে দিন। গুড় ও মুড়ি ভালো করে নেড়ে নিন। এবার তা নিমেয় ঠান্ডা হতে দিন। অল্প ঠান্ডা হলে হাতে তালুতে ঘি মাখিয়ে এই মিশ্রণ থেকে মোয়া গড়ে নিন। তৈরি ভোগের মুড়ির মোয়। 




তিলের নাড়ু নবেদন করুন ধন দেবীকে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সাদা তিল (২০০ গ্রাম), আখের গুড় (২০০ গ্রাম), জল (হাফ কাপ), ঘি (১ চামচ)। তিলের নাড়ু বানাতে প্রথমে তিল শুকনো খোলায় ভেজে নিন। এবার প্যানে জল দিয়ে তাতে গুড় দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। গুড় জলের সঙ্গে মিশে আঠালো হয়ে গেলে তাতে তিল দিয়ে দিন। এবার নামিয়ে অল্প ঠান্ডা হলে এর থেকে গড়ে নিন তিলের নাড়ুন। 



লক্ষ্মী পুজোর দিন বানাত পারে নিমকি। এই দিন অনেকের বাড়িতেই অতিথির আগমন হয়ে থাকে। এদিন বানিয়ে ফেলুন নিমকি। উপকরণ- ময়দা (২ কাপ), তেল (২ চা চামচ), নুন (পরিমাণ মতো), চিনি (হাফ চা চামচ), কালোজিরে (১ চা চামচ), জল (হাফ কাপ), সাদা তেল (পরিমাণ মতো)। এই সকল উপকরণ দিয়ে সহজে নিমকি বানানো সম্ভব। 



নিমকি বানাতেগেলে প্রথমে সামান্য তেল, নুন, চিনি, কালো জিরে দিয়ে ময়দা মেখে ডো তৈরি করে নিন। এবার তা বেলে নিন। এর থেকে ছুঁড়ি দিয়ে কেটে নিমকির তৈরি করে নিন। কড়াইয়ে তেল গরম হলে তা ভেজে নিন। তৈরি নিমকি। লক্ষী পুজোয় বানিয়ে ফেলুন নাড়ু থেকে মোয়া কিংবা নিমকি। বাঙালির আবেগের সঙ্গে জড়িত এই সকল পদ। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.