হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচতে চান তাহলে নারকেল তেল খান
ODD বাংলা ডেস্ক: দক্ষিণী ডেলিকেসিতে নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে থাকলেও উত্তর,পূর্ব এবং পশ্চিমী নানা পদে নারকেল তেলের প্রবেশাধিকার সেভাবে চোখে পরে না। এই কারণেই তো ভারতের এই অংশে হার্টের রোগের প্রকোপ এতটা বেশি।
বাঙালি খাদ্য রসিকেরা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ সরষের তেল খেতে বেশি ভালবাসলেও এবার থেকে মাঝে মধ্যে অল্প করে নারকেল তেল খাওয়াও শুরু করতে পারেন। কারণ এমনটা করলে শরীর বেজায় চাঙ্গা হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে কমবে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও। কিন্তু হার্টের ভালমন্দের সঙ্গে নারকেল তেলের কী সম্পর্ক? সম্প্রতি “বিবিসি২ ট্রাস্ট মি আই অ্যাম ডক্টর” সিরিজ একটি গবেষণ পত্র তুলে ধরেছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে যে নিয়মিত অল্প করে নারকেল তেল খাওয়া শুরু করলে শরীরে উপকারি কোলেস্টেরল বা এইচ ডি এল-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে হার্টের কর্মক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়।
ফলে করনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, একাধিক সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে আমাদের দেশে গত এক দশকে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্তের সংখ্যা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পয়েছে এবং সবথেকে ভয়ের বিষয় হল আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ৩০-এর নিচে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধু আপনার হার্ট চাঙ্গা আছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন যে বেড়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু! আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? খুব সহজ! নারকেল তেলকে বন্ধু বানিয়ে ফেলুন। দেখবেন হার্টের কোনও ক্ষতিই হবে না।
নারকেল তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ প্রায় ৮৬ শতাংশ হওয়ার কারণে বিজ্ঞানিদের একাংশের ধারণা এই তেলটি একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কিন্তু এই ধারণা যে একেবারেই ভুল, তা বিবিসি২-এর প্রকাশ করা রিপোর্টেই প্রমাণিত হয়ে গেছে। প্রায় ৯৪ জন ভলেন্টিয়ারের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে প্রতিদিন অল্প করে ভার্জিন কোকোনাট ওয়েল খেলে শরীরে এইচ ডি এল বা উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি তো হয়ই না, উল্টে নানা উপকার মেলে। যেমন…
১. ওজন কমে:
অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে নারকেল তেল খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদনটিতে উপস্থিত উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড পেটে এবং সার্বিকভাবে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদকে ঝরিয়ে ফলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে মেটাবলিক রেটকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে:
রোগমুক্ত জীবন পাওয়ার স্বপ্ন যদি পূরণ করতে চান, তাহলে রোজের ডায়েটে নারকেল তেলকে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এতে উপস্থিত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল লিপিড, ল্যারিক অ্যাসিড, ক্যাপরিক অ্যাসিড এবং ক্যাপরাইলিক অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করার পর ইমিউনিটিকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নারকেলে তেলে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান ইনফ্লয়েঞ্জা, সাইটোমেগালো ভাইরাস এবং এইচ আই ভি-এর মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে নারকেল তেলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই তেলটির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, তেমনি নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে হজম ক্ষমতা বাড়তে সময়ই লাগে না। প্রসঙ্গত, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও নারকেল তেল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়:
দাঁতের সুরক্ষায় ক্যালকিউমিন নামক একটি উপাদান বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই উপাদানটি যাতে ঠিক মতো শরীর দ্বারা শোষিত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে নারকেল তেল। এই কারণেই তো নারকেল তেল খাওয়া শুরু করলে দাঁতের কোনও ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে দাঁতে পোকা হওয়ার মতো রোগও দূরে থাকে।
৫. শরীরের সার্বিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
নারকেলে তেলে উপস্থিত মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে কিডনি এবং প্যানক্রিয়াসে যাতে কোনও ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। এক কথায় হার্টের পাশাপাশি দেহের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের খেয়াল রাখতে বাস্তবিকই নারকেল তেলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
Post a Comment