এই সব খাবার খেয়ে আপনার মৃত্যুও হতে পারে

 


ODD বাংলা ডেস্ক: এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের মৃত্যুও ঘটাতে পারে। আবার কোনও কোনও খাবারের কারণে হওয়া ক্ষতি তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা না গেলেও তা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ক্ষতি করে থাকে। আজকে আমরা জানবো এমন কিছু খাবের বিষয়ে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্যে ক্ষতি করতে পারে, এমনকি বয়ে আনতে পারে মৃত্যু।


মাশরুমঃ মাশরুমের হাজার রকমের জাত রয়েছে এবং এগুলোর অনেকগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন- শুধু উত্তর আমেরিকাতেই মাশরুমের ১০ হাজারের বেশি প্রজাতি রয়েছে। খাবার হিসেবে গ্রহণ করলে এগুলোর ২০ শতাংশই মানুষকে অসুস্থ করে দিতে পারে। আর শতকরা এক ভাগ তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে মেরেও ফেলতে পারে।


পটকা মাছঃ দক্ষিন এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ, চীন, জাপান, কোরিয়া-সহ বেশ কিছু দেশের মানুষের কাছে পটকা মাছ বা পাফার ফিশ বেশ জনপ্রিয় একটি মাছ। কিন্তু এই মাছটি ঠিকভাবে প্রসেস করা সম্ভব না হলে এটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। কেননা, এর শরীরে থাকে বিষাক্ত টিউরোটক্সিন নামক উপাদান, যা সায়ানাইডের তুলনায় বহুগুণ বেশি কার্যকর।


খেসারি ডালঃ ভারতে মসুর ও মুগডালের পাশাপাশি অনেকের খাদ্য তালিকায় খেসারি ডালও থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ডালে বোয়া (BOAA) নামের এক প্রকার অ্যালানাইন অ্যামিনো অ্যাসিড থাকতে পারে, যা বিষাক্ত নিউরোটক্সিন তৈরি করে। এই অ্যাসিড ‘নিউরো-ল্যাথারিজম’ বা স্নায়ুবিক পঙ্গুতা তৈরি করতে পারে। এই রোগের লক্ষণ অনেক সময় হঠাৎ করেই দেখা দেয়। এতে করে হাঁটতে গিয়ে অসুবিধা এবং অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া কিংবা পা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পরে। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ আয়েশা সিদ্দিকা জানান, বেশিদিন ধরে খেসারির ডাল খেলে এই রোগ হতে পারে।


আলুঃ দীর্ঘদিন যাবৎ পড়ে থাকলে আলুতে শেকড়ের জন্ম হলে সেখানে গ্লাইকোঅ্যালকালোইড নামের এক ধরণের উপাদান তৈরি হয়। বিশেষ করে, জন্ম হয়। অনেক সময় গাছের পাতায় বা কাণ্ডেও এই উপাদান থাকে। বিশেষ করে, আলুর গায়ে শেকড় জন্মালে যে লাল রঙের গাদ তৈরি হয়, সেখানে এই উপাদান বেশি থাকে। বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, এই গ্লাইকোঅ্যালকালোইড শরীরে প্রবেশ করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


টমেটোঃ টমেটো গাছের পাতা এবং কাণ্ডে অ্যালকালাই থাকে, যা পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কাঁচা টমেটোর ভেতর এই উপাদান থাকে বলে মনে করা হয়। এই কারণে ভালো করে রান্না না করে কাঁচা টমেটো খাওয়া উচিত নয়। কারণ, বেশি পরিমাণে কাঁচা টমেটো খেলে যে কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এমনকি- “কাঁচা টমেটো খেয়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।’ তাই টমেটো গাছের পাতাও কোনওভাবে খাওয়া উচিত নয় বলে জানান তিনি।


কাজু বাদামঃ কাজু বাদামের দুইটি জাত রয়েছে – একটি মিষ্টি, অপরটি তিতকুটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি পুষ্টিকর খাবার হলেও তেতো কাজুবাদামের ভেতর সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড নামের একটি বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ তা শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। প্রতিটা তেতো কাজুবাদামের ভেতর ছয় মিলিগ্রাম হাইড্রোজেন সায়ানাইড থাকে। কারো শরীরে ১০০ মিলিগ্রাম হাইড্রোজেন সায়ানাইড প্রবেশ করলে তা তার মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট হতে পারে।


আপেলের বিচিঃ আপেলের বিচির ভেতর খানিকটা পরিমাণে সায়ানাইড থাকে। ফলে কারো শরীরের ভেতর যদি বেশি পরিমাণে আপেল বিচি বা বিচির নির্যাস প্রবেশ করে, তাহলে তা তাকে মেরে ফেলার মতো সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। আর সায়ানাইড হলো একটি মারাত্মক ধরণের বিষ। এ বিষয়ে বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, “অনেক সময় অনেকে আপেলের জুস তৈরি করে খান। তখন যদি অনেকগুলো বিচি-সহ আপেলের জুস করা হয়, তাহলে সেই বিচির কারণে ওই জুসে মারাত্মক বিষ তৈরি হতে পারে।”


মৌমাছির চাক ভাঙ্গা কাঁচা মধুঃ মৌমাছির চাক ভাঙ্গা তাজা মধু সংগ্রহ করতে অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাস্তুরায়িত করা হয়নি এমন কাঁচা মধু শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ কাঁচা মধুর মধ্যে অনেক বিষাক্ত উপাদান থাকতে পারে, যার কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.