মন খারাপের দশমীকে কেন বলে 'বিজয়া' দশমী? জানুন তাত্‍পর্য

 


ODD বাংলা ডেস্ক: দুর্গাপুজোর এই শেষ দিনটিকে দশমী বা বিজয়া দশমী বলা হয়ে থাকে। কেন দশমীকে বিজয়া দশমী বলা হয়, তাই এখন জেনে নেব আমরা।


পৌরাণিক মত

পুরাকালে মহিষাসুর নামে এক অসুর ব্রহ্মার বর পেয়ে প্রবল ক্ষমতাশালী হয়ে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নেন। তিনি দেবরাজ ইন্দ্রকে স্বর্গ থেকে বিচ্যুত করেন। ব্রহ্মা তাঁকে বর দিয়েছিলেন যে কোনও পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবেন না। তবে কোনও নারী তাঁকে বধ করতে পারবেন না, এমন পর দেওয়া হয়নি। তখন সব দেবতার সম্মীলিত শক্তি থেকে আবির্ভূত হলেন দেবী দুর্গা। পুরাণে মহিষাসুর বধের কাহিনী অনুসারে টানা নয় দিন ও নয় রাত্রি যুদ্ধের পর শুক্লা দশমীতে দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন। এই বিজয় লাভকেই বিজয়া দশমী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।


রামায়ণ অনুসারে

ত্রেতা যুগে লংকার রাজা রাবণ শ্রীরামচন্দ্রর পত্নী সীতাকে অপহরণ করেছিলেন। দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে রাম স্ত্রীকে উদ্ধার করতে লংকা আক্রমণ করেন। শুক্লা দশমীতেই তিনি রাবণকে বধ করেন। রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রামের জয়লাভকেও চিহ্নিত করে বিজয়া দশমী।


মহাভারত অনুসারে

মহাভারতেও এই বিশেষ তিথিটির উল্লেখ রয়েছে। ১২ বছর বনবাস ও এক বছর অজ্ঞাতবাসের শেষে পাণ্ডবরা আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমীতেই একটি শমীগাছের কোটরে তাঁদের লুকনো অস্ত্র পুনরুদ্ধার করেন এবং নিজেদের পরিচয় ঘোষণা করেন।


বৌদ্ধ ধর্ম মতে

অনেকে মনে করে বিজয়া দশমীর আসল নাম অশোক বিজয়া দশমী। কলিঙ্গ যুদ্ধে জয়ের পর ১০ দিন ধরে মৌর্য সম্রাট অশোক বিজয় উত্‍সব পালন করেছিলেন, সেটিই অশোক বিজয়া দশমী। আর শুক্লা দশমীতেই তিনি বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই বৌদ্ধদের কাছেও এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ।


বিজয়া দশমীর তাত্‍পর্য

আবার অনেকে মনে করেন দেবীকে মাটির প্রতিমা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এদিন। সেই কারণেই এটি বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। চার দিন ধরে চিন্ময়ী দেবীকে যে মৃন্ময়ী রূপে পুজো করা হয়, দশমীতে বিসর্জনের পর তার থেকে মুক্তি পান দেবী দুর্গা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.