রাবণের পায়ের তলায় উল্টো শুয়ে থাকা নীল ব্যক্তি কে? সত্য জানলে চমকে উঠবেন



 ODD বাংলা ডেস্ক: নিজের শক্তি, বুদ্ধির ওপর অভিমান, অহংকার ছিল রাক্ষসরাজ রাবণের। শক্তির জোরে যে কোনও ব্যক্তিকে নিজের বশবর্তী করতে পারতেন তিনি। শনির বক্র দৃষ্টি, দশা, অন্তর্দশা থেকে বাঁচতে তাঁকেও বন্দি করে রেখেছিলেন রাবণ। শুধু শনিই নয়, বরং অন্যান্য় গ্রহও ছিল রাবণের কারাগৃহে। কিন্তু শনিকে কোথায় রেখেছিলেন রাবণ? রামায়ণ ধারাবাহিকে দেখা যায় যে রাবণের পায়ের নীচে এক নীল রঙের ব্যক্তি শুয়ে রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সকলের মনে প্রশ্ন জাগে যে কে এই ব্যক্তি?


কোনও কোনও পুরাণ অনুযায়ী শনি রাবণের কারাগৃহে বন্দি ছিলেন। আবার কোথাও বলা হয়েছে যে সিংহাসনের নীচে শনিকে রেখেছিলেন রাবণ। কিন্তু রামায়ণ ধারাবাহিক অনুযায়ী যে নীল রঙের ব্যক্তি রাবণের পায়ের তলায় ছিলেন তিনিই শনি। রাবণের সিংহাসনের নীচে উল্টো শুয়ে থাকতে দেখা যায় শনিকে।



কিন্তু কেন শনির এমন দশা করেছিলেন রাবণ?


পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী মায়াবী রাক্ষস রাবণ তন্ত্র-মন্ত্রের সিদ্ধির দ্বারা জ্যোতিষ শাস্ত্রের বিদ্বান হয়ে ওঠেন। নিজের শক্তির জোরে রাবণ নবগ্রহকে নিজের বশবর্তী করে রাখে। নিজের কাছে তাঁদের বন্দি করে রাখেন। কথিত আছে যে সমস্ত গ্রহকে নিজের পায়ের তলায় চেপে রাখতেন তিনি। নবগ্রহকে নিজের বশবর্তী রেখে পুত্রের কোষ্ঠীতে গ্রহের দশা নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই গ্রহের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শনি।


কী ভাবে মুক্তি পেলেন শনি?


পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী হনুমান যখন রামের বার্তা নিয়ে লঙ্কা যান, তখন লঙ্কা দহনের সময় শনি রাবণের কবল থেকে মুক্তি পেয়ে যান। কথিত আছে যে লঙ্কা দহনের আগে শনিকে কারাগৃহে বন্দি করে দেন রাবণ। সেই কারাগৃহের বাইরে একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করে দেন। যাতে তাতে পা রাখার ভয়ে শনি সেখান থেকে বেরোনোর চেষ্টাই করতে না-পারেন। হনুমান রাবণের লঙ্কা আগুন লাগানোর সময় শনিকে সেখান থেকে মুক্ত করেন।


জ্যোতিষ শাস্ত্রে শনি


জ্যোতিষ শাস্ত্রে শনিকে নিষ্ঠুর ও শক্তিশালী গ্রহ মনে করা হয়। মনে করা হয় যে শনির বক্র দৃষ্টি মর্ত্যে উপস্থিত যে ব্যক্তির ওপর পড়ে তার জীবনে সর্বনাশ ঘনিয়ে আসে। কিন্তু রাবণ এতই শক্তিশালী ছিলেন যে তিনি শনিকে বন্দি করে নেন। উল্লেখ্য, নিজের পুত্র মেঘনাদের কোষ্ঠী তৈরির সময় রাবণ সমস্ত গ্রহের স্থান নিজের গণনা অনুযায়ী পরিবর্তন করে মেঘনাদের জীবনে শুভ প্রভাব বৃদ্ধি করেন। কোষ্ঠীর প্রতিটি গ্রহ রাবণের ইচ্ছামতো কাজ করত। কিন্তু শনি নিজের ইচ্ছামতো বার বার স্থান পরিবর্তন করতেন। এর ফলে মেঘনাদের জীবনে বড়সড় সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। তখন শনিকে কয়েদ করেন রাবণ। তাঁকে নিজের পায়ের তলায় চেপে রাখতেন তিনি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.