শীতের ছুটিতে কোথায় বেড়াতে যাবেন? জেনে নিন রাশি অনুযায়ী



 ODD বাংলা ডেস্ক: শীতকালে বছর শেষ হওয়ার এই সময় কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য আমাদের প্রায় সবারই মন একটু উড়ু উড়ু করে। হালকা শীতের মিঠ রোদ গায়ে মেখে কোথাও বেড়িয়ে আসতে না পারলে কিছু ভালো লাগে না। আসলে গ্রীষ্মপ্রধান আমাদের দেশে শীতকালের মনোরম আবহাওয়ার কারণে এই সময় ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না কারোরই। তার সঙ্গে থাকে বছর শেষের আগে অফিস থেকে পাওনা ছুটি-ছাটা। তাই এই সময় ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়তে চান সবাই।


কিন্তু কোথায় যাবেন তা ভেবেছেন কি? জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে বিভিন্ন রাশির জাতকদের স্বভাব ও পছন্দ আলাদা আলাদা। সেই হিসেবে আলাদা আলাদা রাশির জাতকদের কারোর পাহাড় পছন্দ হয়, কারোর সমুদ্র, কারোর আবার গভীর অরণ্য। শীত ভালো ভাবে পড়ার আগেই জেনে নিন এবার রাশি অনুযায়ী বেড়াতে যাওয়ার জন্য কোন স্থান আপনার জন্য আদর্শ হবে।

​মেষ রাশি


অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ মেষ রাশির জাতকদের। সেই কারণে আপনার পরবর্তী গন্তব্য হোক মানালি। অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের স্বর্গ বলা হয়ে থাকে হিমাচলপ্রদেশের শৈলশহর মানালিকে। ২০৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মানালিকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে হিমালয়। সোলাং ভ্যালিতে স্কি এবং পার্বতী ভ্যালিতে ট্রেকিং-এর আকর্ষণ উপেক্ষা করা যায় না। এর সঙ্গে রয়েছে বিয়াস নদীতে হরেক রকমের ওয়াটার স্পোর্টস। আর শীতকালেই যে শীতের জায়গার আসল আনন্দ, তা কে না জানে?


​বৃষ রাশি


একা একা নয়, পরিবারের সঙ্গেই ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন বৃষ রাশির জাতকরা। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটানোর আদর্শ স্থান হতে পারে উটি। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য খুবই সুন্দর। এছাড়া বোটানিক্যাল গার্ডেন, অ্যাভালাঞ্চ লেক, ডিয়ার পার্ক, কামরাজ সাগরের মতো দ্রষ্টব্য স্থান এখানে। পরিবারের সবার সঙ্গে শান্তিতে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসার জন্য বৃষ রাশির জাতকদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান উটি। এছাড়া কেরালা যেতে পারেন, এখানকার নৈস্বর্গিক দৃশ্য অপূর্ব। আবার পঞ্জাবের অমৃতসরও আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে। এখানকার পঞ্জাবি খাবার আপনার মন ভালো করে দেবেই।


​মিথুন রাশি


সবার সঙ্গে মেলামেশা করতে ও হুল্লোড় করতে পছন্দ করেন মিথুন রাশির জাতকরা। এঁরা মিশুকে ও বহির্মুখী প্রকৃতির। আপনার জন্য এই শীতের আদর্শ ডেস্টিনেশন হতে পারে গোয়া। গোয়ার শপিং ডেস্টিনেশন ক্যান্ডোলিম মিথুন রাশির জাতকদের জন্য আদর্শ। এছাড়া এখানকার নাইট লাইফ দুর্দান্ত। ওল্ড লাইটহাউস টাওয়ার এবং আগুয়াড়া ফোর্ট ক্যান্ডোলিমের অন্যতম দ্রষ্টব্য। এছাড়া অজানাকে জানার জন্য মিথুন রাশির আগ্রহ তাঁকে নিয়ে যেতে পারে উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালতেও।


​​কর্কট রাশি


অন্যের প্রতি যত্নশীল কর্কট রাশির জাতকরা। এঁরা সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে পারেন। ছুটি কাটাতে কর্কটের জাতকদের জন্য আদর্শ জায়গা হল মহাবালেশ্বর। এখানকার মারপো গার্ডেনে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে স্ট্রবেরি তুলতে খুবই পছন্দ করবেন কর্কট রাশির জাতকরা। এছাড়া ভেনা লেকে বোটিং করেও ভালো সময় কাটবে মহাবালেশ্বরে। এছাড়া যেতে পারেন আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। এখানকার নানারকম ওয়াটার স্পোর্টস এবং সি ওয়াকিং করে দুর্দান্ত সময় কাটবে আপনার।


​সিংহ রাশি


সবচেয়ে দুঃসাহসী ও নজরকাড়া ব্যক্তিত্ব থাকে সিংহ রাশির জাতকদের। বেড়াতে যাওয়ার জন্য এঁদের বাকেট লিস্টে থাক এ রাজ্যের কালিম্পং। এখানকার স্বাভাবিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, ক্যাকটাস নার্সারি সবই মনের মতো সিংহ রাশির জাতকদের। কালিম্পং-এ রয়েছে স্কাই ডাইভিং ও প্যারাগ্লাইডিং-এর ব্যবস্থা। এছাড়া ভুতুড়ে বাড়ি নামে বিখ্যাত মরগ্যান হাউসের রহস্যময় হাতছানি তো আছেই। এছাড়া প্রাচীণ ভারতের প্রতিও আগ্রহ আছে সিংহের জাতকদের। তাই আপনার ট্যাভেল বাকেটে থাকতেই পারে খাজুরাহো অথবা হাম্পি হসপেট।


​কন্যা রাশি


উত্তর-পূর্ব ভারতের সুন্দরী শৈলশহর গ্যাংটক আদর্শ ভ্রমণ স্থান কন্যা রাশির জাতকদের জন্য। কন্যা রাশির জাতকরা অন্যের খেয়াল রাখেন এবং স্বাভাবিক সৌন্দর্যের পূজারী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হোক বা ট্রেকিং, সেভেন সিস্টার ওয়াটারফলে পিকনিক হোক বা ছাঙ্গু লেকে ইয়াক সাফারি। গ্যাংটকের আকর্ষণ উপেক্ষা করতে পারবেন না কন্যা রাশির জাতকরা। এছাড়া যেতে পারেন রাজস্থানে পুস্কর। সংস্কৃতি, আরাম ও বিলাসিতার মিশ্রণ পাবেন এখানে।


​​তুলা রাশি


প্রেম ভালোবাসার প্রতি সব সময় আকৃষ্ট তুলা রাশির জাতকরা। এদের নিয়ন্ত্রণকারী গ্রহ হল শুক্র। বেড়াতে যাওয়ার জন্য রাজস্থানের উদয়পুর এঁদের জন্য আদর্শ জায়গা। এই হৃদ শহরের অসাধারণ প্রাসাদ মুগ্ধ করে দেয়। চোখ টেনে রাখে এখানকার আকর্ষণীয় রিসর্টগুলিও। তুলার জাতকদের রোম্যান্টিক গেটওয়ের জন্য পারফেক্ট উদয়পুর। পিচোলা হৃদে বোটিং করে, ফতেহ প্রকাশ প্যালেসে সূর্যাস্ত দেখে মনে ভরে যাবেই। এছাড়া কেরালার মুন্নারও আপনার জন্য আদর্শ হলিডে ডেস্টিনেশন হতে পারে।


​​বৃশ্চিক রাশি


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের থেকে নগর সভ্যতাই বেশি আকর্ষণ করে বৃশ্চিক রাশির জাতকদের। এঁদের সবথেকে পছন্দের জায়গা হতে পারে হায়দরাবাদ। এখানকার চারমিনার, গোলকোণ্ডা ফোর্ট, হুসেন সাগর সবই বৃশ্চিক রাশির জাতকদের পছন্দের তালিকায়। হায়দরাবাদের দম বিরিয়ানির টানও উপেক্ষা করা যায় না। হায়দরাবাদি মুক্তো কিনে এবং অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবে প্যারাগ্লাইড করে আনন্দে কাটবে ছুটির কয়েকটা দিন। এছাড়া রাজস্থানের ছবির মতো শহর যোধপুরও আপনাকে টেনে রাখবে চুম্বকের মতো।


​ধনু রাশি


স্বভাবগত ভাবেই পর্যটক ধনু রাশির জাতকরা। এঁরা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন। এবার শীতের ছুটিতে ধনুর জাতকরা যেতে পারেন পঞ্জাবের অমৃতসরে। স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। জানবেন পঞ্জাবের নিজস্ব ঐতিহ্যের কথা। জালিয়ানওয়ালা বাগ প্রত্যক্ষ করে আসবেন। দেখবেন রনজিত্‍ সিং মিউজিয়াম এবং গোবিন্দগড় ফোর্ট। কাশ্মীরের গুলমার্গও আপনার জন্য আদর্শ স্থান হতে পারে। এখানকার অসাধারণ সৌন্দর্য আপনাকে চমত্‍কৃত করবে।


​​মকর রাশি


মকর রাশির জাতকরা অত্যন্ত বাস্তববাদী। এঁরা সাহসী ও অ্যাকশন পছন্দ করেন। এঁদের জন্য আদর্শ ভ্রমণস্থান হতে পারে হৃষিকেশ, যাঁকে ভারতের 'অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল' বলা হয়। মাউন্টেইন বাইকিং, প্যারাগ্লাইডিং, রিভার rafting এবং বাঞ্জি জাম্পিং-এর মতো সবকিছুই করতে পারবেন এখানে। এছাড়া ইতিহাসের কোলে ফিরে যেতে চাইলে মকরের জাতকরা যেত পারেন আগ্রা। প্রকৃতির কোলে ঘুরতে চাইলে মকরের আদর্শ জায়গা হবে লোনাভালা


কুম্ভ রাশি


অত্যন্ত স্বাধীনচেতা কুম্ভ রাশির জাতকরা। বেড়াতে যাওয়ার জন্য সব সময় অফবিট ডেস্টিনেশন খোঁজেন এঁরা। কুম্ভ রাশির জাতকদের জন্য আদর্শ ভ্রমণস্থল হত পারে তামিলনাড়ুর ভালপারাই। এই হিল স্টেশনে এখনও পর্যন্ত খুব একটা বেশি পর্যটক ভিড় জমান না। নির্জন পাহাড়ি জায়গায় ডালপালা মেলবে কুম্ভ রাশির সৃজনশীল মন। নিরিবিলিতে কয়েকটা দিন ছুটি কাটানোর জন্য ভালপারাই আদর্শ। এছাড়া আপনি যেতে পারেন হিমাচল প্রদেশের থাই উপত্যকায়।


মীন রাশি


শিল্পকলার দিকে ঝোঁক আছে মীন রাশির জাতকদের। তাই রাজস্থানের জয়পুর এঁদের জন্য বেড়াতে যাওয়ার আদর্শ জায়গা। ভারতের শিল্প ও সংস্কৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে জয়পুরে। পিংক সিটিতে দেখার মতো অনেক কিছু আছে। এখানকার ফোর্ট, হাওয়া মহল, জলমহল দেখে চোখ সরানো যায় না। এছাড়া স্থানীয় বাজারে ঘুরে মার্বেলের জিনিস, কার্পেট, কাপডিশ, গয়না কিনতে পারেন। জয়পুর আগে ঘোরা হলে এবারের শীতে ঘুরে আসতে পারেন লাক্ষাদ্বীপ থেকে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.