মরুভূমিতে নিজেদের বিষ্ঠা থেকে তৈরি গ্যাস দিয়ে রান্না করেন দম্পতি
ODD বাংলা ডেস্ক: হুইটনি নিউকার্ক এবং স্বামী ট্রেন্ডের নামে এক দম্পতি। তাদের শহুরে জীবন ভালো লাগে না। তাই শহর থেকে দূরে কোথাও ঘর বাঁধার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু তা বলে মরুভূমি? প্রথমে নিজেরাই একটু সংশয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই অসাধ্য সাধন করে দেখালেন দুইজন।
আমেরিকার মরুভূমির মাঝে এখন চুটিয়ে সংসার করছেন তারা। আমেরিকার উইসকনসিনে থাকতেন ৩৪ বছরের হুইটনি আর ২৬ বছরের ট্রেন্ড। দুই বছর আগে শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। এ-ও ঠিক করেন, শহর থেকে যতটা সম্ভব কম জিনিসপত্র কিনে আনবেন। তা সে যতই প্রয়োজনীয় হোক। নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করবেন।
২০২০ সালে উইসকনসিন থেকে তিন হাজার ২১৮ কিলোমিটার দূরে মরুভূমিতে বাস করার সিদ্ধান্ত নেন হুইটনিরা। ক্যালিফোর্নিয়ার জোশুয়া জাতীয় উদ্যানে নিজেদের ঠিকানা গড়ার উদ্যোগ নেন। মরুভূমির মাঝে দুই দশমিক তিন একর জমি কেনেন। ২০২০ সালে যার দাম পড়েছিল মাত্র সাত হাজার পাউন্ড। জমি কেনার পর তাতে বাড়ি করে বাসযোগ্য করে তুলতে আরো ২০ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হয় হুইটনিদের।
মরুভূমির মাঝে বিরাট এক তাঁবু বেঁধেছেন হুইটনিরা। মধ্য এশিয়ায় যাযাবররা যেমন করে তাঁবু বাঁধেন, সেই রীতিতে বাঁশ, কাঠ দিয়ে তৈরি করেছেন আস্তানা। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে কাঠামোর উপর রয়েছে মোটা কাপড়ের আচ্ছাদন। একে বলে ইয়ার্ট।
হুইটনি জানিয়েছেন, তিনি মানুষজন ভালোবাসেন। কিন্তু ভিড় পছন্দ করেন না। তাই সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন। তবে তা কার্যকর করার বিষয়টা সহজ ছিল না। কারণ দিনের বেলা ঐ এলাকার তাপমাত্রা থাকে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। ২০২০ সাল থেকে নিজেদের আস্তানা তৈরির কাজ করছেন হুইটনিরা। অবশেষে তা শেষের পথে। হুইটনির কথায়,‘মনে হচ্ছে, আমরা এভারেস্ট জয় করেছি। এতো আনন্দ জীবনে আগে পাইনি।’
মরুভূমির মাঝে হুইটনিদের ঘরে জ্বলে আলো। গরম থেকে বাঁচতে চলে এসি। কোথা থেকে আসে বিদ্যুৎ? দম্পতি জানিয়েছেন, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তারা। মরুভূমিতে ঐ একটি জিনিসের অভাব নেই। আমেরিকার ঐ দম্পতি রান্না করেন গ্যাসে। তা কিন্তু শহর থেকে আনেন না। নিজেরাই জৈব গ্যাস উৎপাদন করেন। শাক-সবজির খোসা, ফেলে দেওয়া খাবার, এমনকি নিজেদের বিষ্ঠার প্রক্রিয়াকরণ করে জৈব গ্যাস তৈরি করেন তারা। সেই দিয়েই স্টোভ এবং এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করেন।
হুইটনি জানিয়েছে, এখনও নিজেদের ‘ঘাঁটি’ তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। আরো অনেক কাজ বাকি। আরো অনেক পরিষেবার ব্যবস্থা করতে চান তারা। হুইটনি জানালেন, মরুভূমিতে সব থেকে সমস্যায় পড়তে হয় জল নিয়ে। এখনও যেটুকু পানি সঞ্চয় রয়েছে, তা দিয়ে দুই জন প্রতিদিন একবার গোসল করেন। বাসনও মাজেন। তারা চেষ্টা করছেন, ধীরে ধীরে এই জলের সঞ্চয় বাড়ানোর।
এখনও গরম জলের ব্যবস্থা করতে পারেননি হুইটনিরা। আগামী দিনে সেই ব্যবস্থাও করে ফেলবেন বলে আশা তাদের। আরো একটি লক্ষ্য রয়েছে হুইটনিদের। ঠিক করেছেন, শাক-সবজিও আর শহরের বাজার থেকে কিনে আনবেন না তারা। নিজেদের জমিতেই তৈরি করবেন গ্রিনহাউস। সেখানেই চাষ করবেন শাক-সবজি।
Post a Comment