যে বিয়েই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল জেরি লুইসের ‘রক অ্যান্ড রোল’ ক্যারিয়ারে
ODD বাংলা ডেস্ক: 'কিং অব রক' উপাধির জন্য এলভিস প্রিসলিকেও চ্যালেঞ্জ করতে পারার মতো জনপ্রিয়তা ছিল জেরি লি লুইসের। 'দ্য কিলার' খ্যাত লুইসের ব্যক্তিত্ব এবং পিয়ানো বাজানোর দক্ষতা মন কেড়েছিল দর্শকদের। 'গ্রেট বল অফ ফায়ার' এবং 'হোল লোটা শেকিন শেকিন গোইন অন'-এর মতো গানগুলো দিয়ে ষাটের দশকজুড়ে খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন লুইস। এর মাধ্যমেই প্রিসলিকে টক্কর দেওয়ার মতো ক্যারিয়ার তৈরি হতে নিয়েছিল তার।
তবে একসময় যে উচ্চতায় পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন, শেষ পর্যন্ত তা পূরণ হয়নি তার। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ৮৭ বছর বয়সে লুইসের মৃত্যুর পর আবারও তার উঠতি ক্যারিয়ারে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। নিয়মনীতির বিরুদ্ধে চলা (যদিও এলভিস প্রিসলি একই কাজ করেছিলেন) এবং এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনের কিছু ঘটনায় লুইসের উঠতি ক্যারিয়ারের অবসান ঘটেছিল।
যে কেলেঙ্কারি থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাননি লুইস
জেরি লি লুইস জীবনের পুরোটা সময়জুড়েই নিজের লাগামহীন প্রেমের সম্পর্কের জন্য বারবার আলোচনায় এসেছেন। বিয়েও করেছিলেন সাতবার। তবে ২২ বছর বয়সে তৃতীয় বিয়েটিই ছিল তার ক্যারিয়ার ধ্বংসের অন্যতম প্রধান কারণ।
১৯৫৭ সালে নিজের ১৩ বছর বয়সী এক কাজিন (চাচাতো/মামাতো বোন)-কে বিয়ে করেছিলেন লুইস। যদিও লুইসের দাবি, বিয়ের সময় মাইরা গ্যাল ব্রাউনের বয়স ছিল ১৫ বছর। বয়সের পার্থক্য ছাড়াও, ব্রাউন তার ফার্স্ট কাজিন হওয়ায় বেশ বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। এই কেলেঙ্কারির জেরে রেডিও স্টেশন এবং যেসব ভেন্যুতে তিনি প্রোগ্রাম করতে সেসব জায়গা থেকে বয়কট করা হয়েছিল তাকে। এই বিয়ের আগে যেখানে লুইস এক রাতের প্রোগ্রাম থেকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করতেন, সেখানে কেলেঙ্কারির পর তার আয় গিয়ে ঠেকেছিল মাত্র ২৫০ ডলারে।
শুধু তাই নয়, বয়সের ব্যবধানের কারণে লুইসকে নানান ধরনের অপমানসূচক তকমাও দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পর ইংল্যান্ড ভ্রমণে গিয়েছিলেন ব্রাউন এবং লুইস। সেখানে মিডিয়া তাদের বয়সের পার্থক্য আবিষ্কারের পর লুইসকে নির্বাসনের দেওয়ার আবেদনের পাশাপাশি তাকে 'ক্র্যাডল রবার' এবং 'ছেলেধরা' তকমাও দিয়েছিল।
ব্রাউনকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন লুইস
১৯৫৭ সালে ব্রাউনকে বিয়ে সময়ও নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী জেন মিশামের সঙ্গে বৈধভাবে বিবাহিত ছিলেন লুইস। বিবাহবিচ্ছেদের পর, লুইস এবং ব্রাউন ১৯৫৮ সালের জুনে পুনরায় বিয়ে করেন। ১২ বছর টিকেছিল তাদের বিয়ে। ১৯৭০ সালে লুইসের ওপর একাধিক অনৈতিক সম্পর্ক রাখা এবং অ্যাবিউজের অভিযোগ এনে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন মাইরা গ্যাল ব্রাউন। স্টিভ এবং ফিবি নামে তাদের দুই সন্তান ছিল।
এরপর আরও চারবার বিয়ে করেছেন জেরি লি লুইস। সবশেষ বিয়েটি করেন ২০১২ সালে, মাইরা গ্যালের ভাইয়ের প্রাক্তন স্ত্রী জুডিথ লুইসকে। শেষ পর্যন্ত এই বিয়েটিই টেকেছে তার।
গেল দুই দশকে রক অ্যান্ড রোল কিংবদন্তি হিসেবে দর্শকদের মাঝে জনপ্রিয়তা লাভ করলেও নিজের ফার্স্ট কাজিনকে বিয়ে করার জন্য দর্শক কখনোই লুইসকে ক্ষমা করেনি। বিশেষ করে, ব্রাউনকে যখন তিনি বিয়ে করেন, তখনও সে শিশু ছিল। মূলত এ কারণেই এলভিস প্রিসলির 'কিং অফ রক' খ্যাতি নিজের করে নিতে পারেননি লুইস।
Post a Comment