বিশ্বের কয়েকটি ভূতুড়ে পুতুল! যারা দেখেছেন, তাদের হাড়হিম হয়ে গেছে

ODD বাংলা ডেস্ক: এই সব পুতুলের দেখা যারা পেয়েছেন তাদের আছে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা। সেই সব পুতুল আর তাদের মালিকদের কথা জানা যাক চলুন।

‘পুতুল’ শব্দটা উচ্চারণ করলেই কেমন একটা আদুরে অনুভূতি হয়। মনে পড়ে শৈশব। কিন্তু সত্যিই কি পুতুল মানে কেবল আহ্লাদি, নরম ছেলেমানুষির সামগ্রীবিশেষ? এমনটা ভেবে থাকলে একবারটি ঘুরে আসতে পারেন মার্কিন মুলুকের এক অতিপ্রাকৃত জাদুঘর থেকে। সেদেশের মুডাস কানেক্টিকাটের ‘লরেন ওয়ারেনস অকাল্ট মিউজিয়ামে’ রয়েছে একটি পুতুল। দেখতে একেবারে নিরীহদর্শন, হাসিমুখের সেই পুতুলকে ঘিরে জমে থাকা ভয়ের গল্পগুলো শুনলে অবাক হবেন। অবশ্য সেটাকে ‘গল্প’ বলতে চান না প্রত্যক্ষদর্শীরা। এই পুতুলই সেলুলয়েডে ‘অ্যানাবেল’নামে পরিচিত।

এই গল্পের সূত্রপাত গত শতাব্দীর সাতের দশকে। ডোনা নামের একজন নার্স একটি পুতুল উপহার পান। তার অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন আরেক বান্ধবী অ্যাঞ্জি। মিষ্টি দেখতে ঐ পুতুলটিকে পেয়ে বেশ আহ্লাদই হয়েছিল ডোনার। কিন্তু সময় গড়াতেই শুরু আসল রহস্যভেদ। তিনি এবং অ্যাঞ্জি দুইজনেই খেয়াল করেন পুতুলটা ঠিক ‘স্বাভাবিক’ নয়। থেকে থেকেই সেটার পজিশন বদলে বদলে যায়। এমনকি এক ঘরে রাখা হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় অন্য ঘরে। একদিন তারা খুঁজে পেলেন ‘হেল্প মি’ লেখা একটা নোট। একেবারে শিশুর হাতের লেখায়। একদিন দেখা গেল চোখের কোণ থেকে উপচে পড়ছে রক্তের ধারা! ভয় পেয়ে গেলেন ডোনা ও তার বান্ধবী।

ক্রমে সময় যত গড়াল তত চড়ল আতঙ্কের পারদ। একদিন অ্যাঞ্জির বয়ফ্রেন্ড লউ ভয়ার্ত কণ্ঠে শোনালেন তার হাড়হিম অভিজ্ঞতার কথা। জানালেন, মধ্যরাতে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ঘুম থেকে জেগে উঠেছিলেন তিনি। সারা শরীর ভয়ে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তার শরীর বেয়ে কে যেন ওঠার চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে তার গলা টিপে ধরার! আর সেই ঘাতক কোনো মানুষ নয়,  শরীরটা এক পুতুলের!

লউ যখন এসব গল্প শোনালেন প্রেমিকাকে, তখন আর ব্যাপারটাকে ‘মনের ভুল’ বলে থামিয়ে রাখতে রাজি হলেন না অ্যাঞ্জিরা। তারা দ্বারস্থ হলেন এক মিডিয়ামের। মিডিয়াম মানে যারা ইহজগতে থেকেও অতিপ্রাকৃতের দুনিয়ার সংকেত সম্পর্কে বলতে পারেন। সেই মিডিয়ামই তুলে ধরলেন এক হতভাগ্য শিশুকন্যার কথা। অ্যানাবেল হিগিন্স নামের সেই সাত বছরের শিশুটি মারা গেলে তার আত্মাকে বন্দি করা হয়েছে ঐ পুতুলের মধ্যে! যদিও মিডিয়াম দাবি করলেন, এই আত্মা নেহাতই নিরীহ। কোনো ক্ষতি করার ইচ্ছে এর নেই।

এরপর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হন এড ও লরেন ওয়ারেন। এই দম্পতির কথা সারা পৃথিবীর অতিপ্রাকৃতের চর্চাকারী মাত্রেই জানেন। একের পর এক ‘ভূতূড়ে’ ঘটনার পেছনে থাকা অলৌকিক কারণ খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করতেন তারা। হালফিলের ‘কনজুরিং’ সিরিজের ছবিগুলি যারা দেখেছেন তারা চিনে থাকবেন। অ্যানাবেল নামের পুতুলটিকে পরীক্ষা করে এই দম্পতি জানিয়ে দিলেন, মোটেই এই পুতুলটি ‘নিরাপদ’ নয়। এর মধ্যে আছে শয়তানের উপস্থিতিও। বাড়িটিতে ‘ভূত তাড়ানোর শুদ্ধিকরণ’ করে অ্যানাবেলকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে যান তারা।

গল্পের এখানেই শেষ নয়। লেখার শুরুতেই কানেক্টিকাটের যে অকাল্ট মিউজিয়ামের কথা বলা হয়েছে, সেখানেই ঠাঁই পেয়েছে পুতুলটি। কিন্তু কাঁচের আলমারিতে বন্ধ অবস্থাতেও সে নাকি ‘খেল’ দেখিয়েছে। এক ব্যক্তি তার আলমারির দরজায় নাকি ধাক্কা দিয়েছিল। ফেরার পথেই ঘটে যায় ভয়ংকর বাইক দুর্ঘটনা। এমন ঘটনা আরো রয়েছে।

এই হল অ্যানাবেলের গল্প। এমন কত শত পুতুল যে ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বজুড়ে! ভয়ংকর পুতুলের নাম রবার্ট। ‘রবার্ট দ্য ডল’ অবশ্য আজকের পুতুল নয়। ১৯০৫ সালে মার্কিন দ্বীপশহর কি ওয়েস্টে জিন নামের এক চার বছরের শিশুর হাতে এসেছিল পুতুলটি। 

‘রবার্ট দ্য ডল’
জিন বড় হয়ে বিয়ে করে। তারপর কালের নিয়মেই একদিন মারাও যায়। রবার্ট কিন্তু তখনো ছিল। পরে তাকে এক মিউজিয়ামে স্থান দেওয়া হয়েছে। শোনা যায় সেখানেও নাকি এক ঘর থেকে অন্য ঘরে চলাফেরা করে বেড়ায় সে। নানা অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটিয়েছে সে। তাই তাকেই সবচেয়ে ভয়ংকর পুতুলের তকমা দেওয়া হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.