৩১ বিয়ে ৩০ বিবাহ বিচ্ছেদ, তার জীবনকাহিনী জানলে অবাক হবেন

 


ODD বাংলা ডেস্ক: কথায় বলে,'দিল্লির লাড্ডু- যে খায় সে পস্তায় যে খায়না সেও পস্তায়'। বিয়েকে মানুষ দিল্লির লাড্ডু মনে করে।  এই দিল্লির লাড্ডুর স্বাদ মানুষ কম বেশি সবাই গ্রহণ করেন। তবে তা এক, দুই কিংবা চার বা পাঁচ বারের কথা শুনেছেন। তবে কখন কী ৩১ বারের কথা শুনেছে? কী বিশ্বাস হচ্ছে না? 

বিশ্বাস না হলেও এমনটাই করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক পাদ্রি। তিনি একবার, দুবার নয়, ৮৮ বছরের জীবনে সর্বমোট ৩১ বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। নাম তার গ্লিন উলফ।


তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা। পেশায় তিনি ব্লাইদ এলাকার একজন পাদ্রি। তবে পেশাগত কারণে তিনি খবরের শিরোনামে আসেননি। তার পরিচিতির আসল কারণ হলো তার ব্যক্তিগত জীবন। বিশ্বে সবচেয়ে বেশিবার বিয়ে এবং বিবাহবিচ্ছেদের নজির গড়ে "গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস" এর পাতায় নিজের নাম উঠিয়েছিলেন গ্লিন।


জানা যায়, ১৯২৬ সালে প্রথমবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন গ্লিন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল মার্সি ম্যাকডোনাল্ড। তবে বিয়ের এক বছরের মাথায় মার্সির মৃত্যু হয়। গ্লিনের ৩১ জন স্ত্রীর মধ্যে ৫ জন অসুস্থতার কারণেই মারা গিয়েছিলেন। মার্সির মৃত্যুর পর নিঃসঙ্গ জীবনের দুঃখ দুর করতেই নাকি তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। এরপর থেকেই বিয়ে যেন তার নেশায় রূপান্তরিত হয়। 


কারোর সঙ্গে মাত্র ১৯ দিন, আবার কারোর সঙ্গে টানা ১১ বছরও সংসার করেছেন গ্লিন। আবার একথাও শোনা যায়, তার ৩১ জন স্ত্রীর মধ্যে তিন জন এমনও ছিলেন, যাদের তিনি আগেও বিয়ে করে ডিভোর্স দিয়েছিলেন।


গ্লিনের বিবাহবিচ্ছেদের কারণগুলো আরো অদ্ভুত। কখনো ভুলে গ্লিনের টুথ ব্রাশ ব্যবহার করে ফেলার জন্য কোনো একজন স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দেন। আবার, কখনো স্ত্রী বিছানায় বসে সূর্যমুখীর বীজ খাচ্ছেন বলে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন তিনি। তবে গ্লিন তার ২৮ তম স্ত্রীর সঙ্গে ১১ বছর সংসার করেছিলেন। তার নাম ছিল ক্রিস্টিন কামাচো। গ্লিন তার বৈবাহিক জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় ক্রিস্টিনের সঙ্গেই অতিবাহিত করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গ্লিন এবং ক্রিস্টিনের বয়সের ব্যবধান ছিল ৩৭ বছর।


১৯৯৭ সালের ৮৮ বছরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গ্লিন। ৮৮ বছরের দীর্ঘজীবনে তিনি ১৯ জন সন্তানের জন্ম দেন। তার ৪০ জন নাতি এবং ১৯ জন পুতি থাকা সত্ত্বেও শেষজীবন নিঃসঙ্গ কাটিয়েছেন গ্লিন। এমনকি, মারা যাওয়ার পর তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতেও কেউ এগিয়ে আসেননি। তার ৩১ তম তথা সর্বশেষ স্ত্রী ছিলেন লিন্ডা উলফ। বিবাহের একসপ্তাহ পরই লিন্ডা ইন্ডিয়ানায় ফিরে গেলে ক্যালিফোর্নিয়ায় সম্পূর্ণ একাকী জীবন কাটাতে শুরু করেন গ্লিন। তবে, জানা গিয়েছে, স্বামীর ৮৯ তম জন্মদিন এবং তাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী পালন করতে লিন্ডা এসেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। তবে, তার আগেই গ্লিন ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন। 


গ্লিনের অন্ত্যেষ্টক্রিয়ায় যখন সবাই মুখ ফিরিয়ে নেন, তখন গ্লিনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর ৩৩৬ ডলার দিয়েই কাউন্টির তরফ থেকে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়। তবে, গ্লিন ঠিক কি কারণে এতগুলো বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.