মেঝেতে বসে খাবার খাওয়ার উপকারিতা



 ODD বাংলা ডেস্ক: নাগরিক সভ্যতার বিস্তারে মেঝেতে বসে ভাত খাওয়ার চল প্রায় উঠেই গিয়েছে। শহরের দিকে বহু মানুষই চেয়ারে বসে খাবার খান। বাড়ি-রেস্তোরাঁ তো বটেই, অনেকে অফিসে গিয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে নেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই। গ্রামের দিকে অবশ্য এখনও অনেকে মাটিতে বসে খাবার খান। মাটিতে বসে খাওয়া নিয়ে ছুতমার্গও যে নেই, তা নয়। 

বিশেষ করে টেবিলে বসে খাওয়া আর মেঝেতে বসে খাওয়ার মধ্যে কোথাও ধনী-গরিবের বৈষম্যবোধও লুকিয়ে থাকতে পারে। অথচ এ সবের বাইরে যদি স্বাস্থ্যগত দিকটি নিয়ে ভাবা হয়, তবে মেঝেতে বসে খাওয়ার কিন্তু বহু উপকারিতা খুঁজে পাওয়া যাবে।


মাটিতে বাবু হয়ে বসে খাবার খাওয়ার সময়ে প্রতি গ্রাসেই ঝুঁকতে হয়। এর ফলে পেটের পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ ভালো হয়। এতে পাচন রসের ক্ষরণও যায় বেড়ে। ফলে হজম হয় দ্রুত। বিশেষ করে যাদের গ্যাস, অম্বলের মতো সমস্যা রয়েছে, তারা এভাবে খাবার খেলে উপকৃত হতে পারেন। তাছাড়া, রক্তসঞ্চালনও ভালো হয় মেঝেতে বসে খেলে।


মেঝেতে বসে খাবার খেলে অনেক বেশি ঝরঝরে থাকে শরীর। বিশেষ করে যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য নিচে বসে খাবার খাওয়া খুবই উপকারী হতে পারে। এর নেপথ্যেও রয়েছে বিজ্ঞান। হাঁটু মুড়ে মেঝেতে খেতে বসলে পেটের পেশিতে এমনিতেই চাপ পড়ে। পেটের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ বজায় রাখে ভেগাস নামের একটি স্নায়ু। পেটের উপর চাপ পড়লে এই স্নায়ু জানান দেয় যে, উদরপূর্তি হয়ে গিয়েছে। আর খাওয়ার দরকার নেই। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার সমস্যা কমে। নিয়ন্ত্রণে থাকে ভুঁড়িও।


মাটিতে বসে খাবার খেলে আমাদের অজান্তেই সুখাসন, স্বস্তিকাসন কিংবা সিদ্ধাসনের মতো কয়েকটি যোগাসন করা হয়ে যায়। সুখাসনে হজমের ক্ষমতা বাড়ে। মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বাড়ে। শরীরে রক্ত চলাচল ভালো হয়। স্বস্তিকাসন হৃদ্‌যন্ত্রের উপকার করে। মানসিক চাপ কমাতেও সহায়তা করে। আর সিদ্ধাসন কমায় হাঁটুর ব্যথা। প্রস্টেট গ্রন্থির নানা সমস্যা কমে এই আসন করলে। কাজেই একই সঙ্গে এতগুলো উপকার মিলতে পারে মাঝেতে বাবু হয়ে বসে খেলে।


তবে মাথায় রাখতে হবে, নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণে অনেকেই চেয়ারে বসে খেতে বাধ্য হন। চিকিৎসকরা তাদের সেই পরামর্শ দেন। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অমান্য করা ঠিক নয়। কোনো পূর্ববর্তী অসুবিধা না থাকলে মাটিতে বসে খেতেই পারেন। রোজ সম্ভব না হলেও, সপ্তাহে এক বা দুইদিন মাটিতে বসে খেলেও লাভ হয় শরীরের।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.