মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে ফেরা বিশ্বের প্রথম নারী ডাক্তার
ODD বাংলা ডেস্ক: একজন নারী হবেন চিকিৎসক, এমনটা প্রাচীন গ্রীসে ভাবনারও বাইরে ছিল। ঐ সভ্যতায় নারীদের চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন নিষিদ্ধ ছিল। ৩০০ খ্রিস্টপূর্ব সালে জন্মগ্রহণকারী, অ্যাগনোডিস তার চুল কেটে আলেকজান্দ্রিয়া মেডিকেল স্কুলে একজন পুরুষের পোশাকে প্রবেশ করেন।
ডাক্তারি শিক্ষা গ্রহণ শেষ করে এথেন্সের রাস্তায় হাঁটার সময় তিনি প্রসবকালীন একজন নারীর কান্না শুনতে পান। সেই নারী তখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কিন্তু তিনি কাউকে স্পর্শ করতে দিচ্ছিলেন না। এমনকি অ্যাগনোডিস যখন এগিয়ে আসেন তাকেও স্পর্শ করতে দেননি। কারণ ভেবেছিলেন যে অ্যাগনোডিস একজন পুরুষ।
অ্যাগনোডিস বিপদাপন্ন ঐ নারীকে চিকিৎসা করার জন্য নিজের লজ্জা বিসর্জন দিলেন। নিরুপায় হয়ে সবার আড়ালে অ্যাগনোডিস তার জামাকাপড় খুলে নারীকে দেখান। প্রমাণ করেন তিনি একজন নারী। তারপর ঐ নারীর সন্তান প্রসব করিয়ে- অ্যাগনোডিস প্রমাণ করলেন তিনি দক্ষ ডাক্তার।
এই ঘটনা নারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং সর অসুস্থ নারীরা অ্যাগনোডিসের কাছে যেতে শুরু করে। ঈর্ষান্বিত, পুরুষ ডাক্তাররা অ্যাগনোডিসকে আদালতে টেনে নিয়ে যায়। নিজের জীবন বাঁচাতে অ্যাগনোডিস বলেন তিনি একজন নারী, পুরুষ নন। এই মিথ্যে পরিচয়ের অভিযোগে আদালতে হাজির করা অ্যাগনোডিসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
তারপর এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটলো। নারীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন, বিশেষ করে সেই বিচারকদের স্ত্রীরা, যারা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, যদি অ্যাগনোডিসকে হত্যা করা হয় তবে তার সঙ্গে তারাও সহমরণে যাবেন। তাদের স্ত্রী এবং অন্যান্য নারীদের চাপ সহ্য করতে অপারগ বিচারকরা অ্যাগনোডিসের সাজা তুলে নেন এবং তখন থেকে নারীদেরও ডাক্তারি অনুশীলন করার অনুমতি দেওয়া হয়, তবে তারা শুধুমাত্র নারীদের দেখাশোনা করবে।
তবে অধিকাংশ ইতিহাসবিদদের মতে, অ্যাগনোডিসের কাহিনী সত্য নয়। তবে এটি একটি ঐতিহাসিক চরিত্র হিসেবে বিবেচিত। তাকে নিয়ে তৈরি হওয়া গল্পটি ক্রমাগতভাবে নারীদেরকে ধাত্রীবিদ্যা অথবা চিকিৎসাবিদ্যা পেশায় এগিয়ে দিয়েছে। তিনি একজন অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র।
Post a Comment