মেসিকে যে কারণে ‘আলখাল্লা’ পরালেন কাতারের আমির
ODD বাংলা ডেস্ক: স্বপ্নের সোনালী ট্রফিটা ছাড়া ফুটবল–ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য সবই ছিল তার শোকেসে। কিন্তু একটা বিশ্বকাপের হাহাকার শুধু দীর্ঘই হচ্ছিল। ফ্রান্সের বিপক্ষে জয় নিশ্চিতের পর যখনই ট্রফিটা ছুঁতে যাবেন, তখনই মেসিকে ডেকে নিলেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ। পরিয়ে দিলেন ‘আলখাল্লা’।
বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেই লিওনেল মেসিকে কালো আলখাল্লা পরিয়ে দিয়েছেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ। কাতার সংস্কৃতিকে সাধারণত এ পোশাক পরেন মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিরা। বিশ্বকাপ জেতায় মেসিকে সম্মানের প্রতীক হিসেবে এমন পোশাক পরানো হয়েছে। খবর মার্কার।
কাতারি ভাষায় এ পোশাকের নাম ‘বিস্ত’। দেশটিতে মূলত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভিআইপিরা এ পোশাক পরে থাকেন। তবে মেসিকে এমন পোশাক পরানোয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে এ পোশাক নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাননি বিশ্বজয়ী চ্যাম্পিয়ন ফুটবলের ম্যাজিকম্যান লিওনেল মেসি। আলখাল্লা পরে কাপ নিয়ে বিজয়োল্লাসে মেতেছেন তিনি।
টুইটবার্তায় ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মারুফ লিখেছেন, কাতারের সংস্কৃতি অনুসারে কাউকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে বিস্ত পরানো হয়। বিশ্বকাপ জেতার কারণে মেসিকে সম্মান করে কাতারের আমির এ পোশাক পরিয়েছেন। পশ্চিমা গণমাধ্যমের উচিত ভিন দেশের সংস্কৃতিকে সম্মান জানানো।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে নামার আগে অন্তত ৭টি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। গতকাল ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে নেমেই তিনি গড়ে ফেললেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড। শুধু তাই নয়, গোল করে মেসি গড়লেন আরও কয়েকটি রেকর্ড।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৫টি ম্যাচ খেলার আগের রেকর্ড ছিল জার্মানির লোথার ম্যাথাউসের। সেমিফাইনালেই ম্যাথাউসকে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন মেসি। এবার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে নামার পরই মেসির নামের পাশে যোগ হলো ২৬ ম্যাচ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড এখন মেসির।
শুধু সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডই নয়, বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় (মিনিট) খেলার রেকর্ডও এখন মেসির দখলে। ইতালিয়ান কিংবদন্তি পাওলো মালদিনি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২২১৭ মিনিট খেলেছিলেন। ফ্রান্সের বিপক্ষে ২৪ মিনিট খেলার পরেই মালদিনির রেকর্ড পার হয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ফাইনাল খেলতে নামার সময় মেসির নামের পাশে শোভা পাচ্ছিলো ২১৯৪ মিনিট। ফাইনালের ১২০ মিনিট শেষে তা গিয়ে দাঁড়ায় ২৩১৪ মিনিটে।
ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল করেই ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সম্রাট পেলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেন মেসি। বিশ্বকাপে পেলের মোট গোল ১২টি। পেনাল্টি থেকে গোল করার পর মেসিরও গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ১২। এরপর ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোল করে পেলেকে ছাড়িয়ে গেলেন লিওনেল মেসি। এখন তার গোল সংখ্যা ১৩। ফাইনাল পর্যন্ত ৮টি অ্যাসিস্ট করে স্বদেশি কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনাকে ছুঁয়েছেন মেসি। ৮ অ্যাসিস্টে অর্থাৎ গোলে সরাসরি অবদান মেসির ২১টিতে। যা ব্রাজলিয়ান কিংবদন্তি রোনাল্ডো নাজারিও এবং জার্মান তারকা জাড মুলার ও মিরোস্লাভ ক্লোসাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। এ তিনজনের অবদান ছিল ১৯টি। বিশ্বকাপে ২৬ ম্যাচ খেলে ১৭টি জয়ের স্বাদ পেয়ে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসা’কে স্পর্শ করলেন মেসি। ক্লোসা ২৪ ম্যাচে ১৭টি জয় পেয়ে এতোদিন শীর্ষে ছিলেন।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত একাধিকবার গোল্ডেন বল জিততে পারেননি কোনো খেলোয়াড়ই। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখা না হলেও ওই আসরের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন তিনি। আর এবার বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়ে দেখার পাশাপাশি গোল্ডেন বলও জিতেছেন লিওনেল মেসি।
Post a Comment