মহিলারা দণ্ডবত প্রণাম করলে হতে পারে মস্ত ক্ষতি! কারণ জানেন?

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ভারতীয় সংস্কৃতিতে ঠাকুর-দেবতা ও বড়দের প্রণাম করার প্রথা প্রচলিত আছে। শাস্ত্রে সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবত প্রণামের প্রথা প্রচলিত রয়েছে। মনে করা হয় দণ্ডবত প্রণাম করলে যজ্ঞের সমান পুণ্য লাভ করা যায়। হিন্দু ধর্মে ষড়শোপচার পুজো অর্থাৎ ১৬ বস্তুর দ্বারা ঈশ্বরের স্তুতি করা হয়। দণ্ডবত প্রণাম হল সেই স্তুতির শেষ পর্যায়। মন্দির, তীর্থ স্থান বা পবিত্র স্থানে দণ্ডবত প্রণাম করেন সকলে। এ ভাবে প্রণাম করলে ব্যক্তির মন, কর্ম, বচনের মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে সমর্পিত হয়। হিন্দু ধর্মে পুরুষদের দণ্ডবত প্রণাম করার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, কিন্তু মহিলাদের এভাবে প্রণাম করতে বারণ করা হয়েছে। শাস্ত্র মতে কেন মহিলারা দণ্ডবত প্রণাম করতে পারেন না, জেনে নেওয়া যাক।


মহিলারা দণ্ডবত প্রণাম কেন করতে পারেন না?


দণ্ডবত প্রণামের অর্থ স্বয়ংকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পিত করে দেওয়া। তবে বেদ ও ধর্মগ্রন্থে মহিলাদের দণ্ডবত প্রণাম করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শাস্ত্র মতে মহিলাদের কখনও কাউকে দণ্ডবত প্রণাম করা উচিত নয়।


ধর্মসিন্ধু গ্রন্থের একটি স্লোকে উল্লিখিত যে, 'ব্রাহ্মণস্য গুদং শঙ্খং শালিগ্রামং চ পুস্তকম বসুন্ধরা ন সহতে কামিনী কুচ মর্দনং', অর্থাৎ ব্রাহ্মণের পশ্চাৎদেশ, শঙ্খ, শালিগ্রাম ও ধর্মীয় গ্রন্থকে সরাসরি ভূমিতে রাখতে নেই। পাশাপাশি মহিলারাও ভূমিতে সরাসরি পেটের ওপর ভর দিয়ে শায়িত হবেন না। মহিলাদের দণ্ডবত প্রণাম করায় নিষেধাজ্ঞার কারণ হল, শাস্ত্র মতে মহিলাদের পেট ও বক্ষস্থল ভূমিতে রেখে শায়িত হওয়া উচিত নয়।


কেন এমন? মহিলারা নিজের গর্ভে নতুন প্রাণ বহন করে চলেন, পরবর্তীকালে বক্ষস্থলের মাধ্যমে সেই প্রাণের পোষণ করেন। মহিলারা দেবী রূপে পূজিত। তাই মহিলাদের নিজের এই দুই অঙ্গ ভূমিতে স্পর্শ করাতে নেই। ধরিত্রী মহিলাদের এই দুই অংশের ভার বহন করতে পারেন না। তা সত্ত্বেও যে মহিলারা দণ্ডবত প্রণাম করেন, তাঁদের অষ্টলক্ষ্মী কেড়ে নেওয়া হয়। শাস্ত্র মতে দণ্ডবত প্রণাম করার পরিবর্তে মহিলাদের সবসময় আসন বিছিয়ে তাতে হাঁটু গেড়ে প্রণাম করা উচিত। এর ফলে পুজোর সঠিক ফল লাভ করতে পারবেন তাঁরা।


তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এ ভাবে প্রণাম করার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। দণ্ডবত প্রণামের কিছু লাভ সম্পর্কেও জানানো হয়েছে--


১. সাষ্টাঙ্গ দণ্ডবত প্রণাম করার সময়ে শরীরের ৮টি অঙ্গ পৃথিবীতে স্পর্শ করে। এ সময় ব্যক্তির মন শান্ত হয়। পৃথিবীর ইতিবাচক শক্তি শরীরে সঞ্চারিত হয়।


২. ব্যক্তি যখন ঈশ্বরের হাতে সমস্ত কিছু ছেড়ে দিয়ে দণ্ডবত প্রণাম করে, তখন তাঁর মনে কষ্ট মুক্তির অনুভূতি উৎপন্ন হয়। এর ফলে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সাষ্টাঙ্গ মুদ্রা একটি যোগাসন, এর ফলে শারীরিক অবসাদ দূর হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.