কোন দেব-দেবীর কতবার পরিক্রমা করলে সুফল পাবেন? জানাচ্ছে শাস্ত্র

 


ODD বাংলা ডেস্ক: শাস্ত্র মতে সর্বপ্রথম গণেশ ও কার্তিকেয় শিব-পার্বতীর পরিক্রমা করেন, তার পর থেকে পরিক্রমা বা প্রদক্ষিণ করার প্রথা প্রচলিত হয়েছে। কোন দিক থেকে কোন দিকে পরিক্রমা করা হবে সে বিষয়েও শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে। প্রগতং দক্ষিণমিতি প্রদক্ষিণং অনুযায়ী দক্ষিণ অংশে প্রস্থান করাকে প্রদক্ষিণা বলা হয়ে থাকে। পরিক্রমার সময় ব্যক্তির শরীরের ডান অংশটি দেবতাদের দিকে থাকে। শব্দকল্পদ্রুম-এ বলা হয়েছে যে, দেবতাদের উদ্দেশে দক্ষিণাবর্ত ভ্রমণ করাকেই প্রদক্ষিণা বলা হয়। কোন দেবতাকে কতবার প্রদক্ষিণা করা উচিত সে বিষয়ে এখানে জানানো হল।


কোন দেবতার কতবার প্রদক্ষিণা করবেন?


কোন দেব-দেবীর কতবার পরিক্রমা করবেন, সে সম্পর্কে কর্ম লোচন নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, একা চণ্ড্যা রবেঃ সপ্ত তিস্রঃ কার্য়া বিনায়কে। হরেশ্চতস্রঃ কর্তব্যাঃ শিবস্যার্ধপ্রদক্ষিা। এর অর্থ হল--


১. শিবের অর্ধেক পরিক্রমা করা উচিত।


২. দুর্গাকে একবার প্রদক্ষিণ করুন। এর ফলে দুর্গা নিজের ভক্তদের শক্তি প্রদান করবেন।


৩. বজরংবলী ও গণেশের তিন বার প্রদক্ষিণা করবেন। গণেশের পরিক্রমার ফলে তাঁর ভক্তরা রিদ্ধি, সিদ্ধি লাভ করতে পারেন।


৪. বিষ্ণুর ৪ বার পরিক্রমা করলে অক্ষয় পুণ্য ফল লাভ করা যায়।


৫. একমাত্র প্রত্যক্ষ দেবতা সূর্যের ৭ বার পরিক্রমা করলে সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়।


৬. অশ্বত্থ গাছের ১০৮ বার পরিক্রমা করা উচিত।


৭. যে দেবতাদের পরিক্রমা করার বিধান নেই, তাঁদের তিনবার প্রদক্ষিণ করতে পারেন।


শাস্ত্র মতে, কাশী পরিক্রমা করার পরবিত্র পথ। এই পথে সেখানকার সমস্ত পুণ্যস্থল ঘিরে রয়েছে। এমনই পথ মথুরা, অযোধ্যা, প্রয়াগ, চিত্রকূটে বর্তমান। আবার তিলক কাটার পর যজ্ঞ দেবতা অগ্নি বা বেদীর তিন বার পরিক্রমা করবেন। এই তিন পরিক্রমা জন্ম, জরা ও মৃত্যুর বিনাশ এবং মন, বচন ও কর্মের দ্বারা ভক্তির প্রতীক রূপে বাঁ দিক থেকে ডান দিকে করা হয়ে থাকে।


হিন্দু শাস্ত্রে কিছু প্রধান পরিক্রমা সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেবী-দেবতা ছাড়াও নদী, পর্বত, বৃক্ষ ইত্যাদি প্রদক্ষিণ করার বিধান রয়েছে। প্রধান পরিক্রমা সম্পর্কে শাস্ত্র কী বলে জেনে নিন--


দেবমন্দির ও মূর্তি পরিক্রমা-- জগন্নাথ পুরী, রামেশ্বরম, তিরুবন্নমল, তিরুবনন্তপুরম পরিক্রমা। দেবমূর্তি শিব, দুর্গা, বিষ্ণু, গণেশ, বজরংবলী, কার্তিকেয় ইত্যাদি।


নদী পরিক্রমা- নর্মদা, গঙ্গা, শতদ্রু, শিপ্রা, গোদাবরী, কাবেরী।


পর্বত পরিক্রমা- গোবর্ধন, গিরনার, কামদগিরি, তিরুমলৈ পর্বত পরিক্রমা।


বৃক্ষ পরিক্রমা- অশ্বত্থ, বট ইত্যাদি।


তীর্থ পরিক্রমা- যেমন চৌরাসী ক্রোস পরিক্রমা, অযোধ্যা, উজ্জয়িনী, প্রয়াগ, পঞ্চকোশী, রাজিম পরিক্রমা ইত্যাদি।


চার ধাম পরিক্রমা


ভরত খণ্ড পরিক্রমা- পরিব্রাজক সাধু সন্ত ভরত খণ্ড যাত্রার সূচনা করেন সিন্ধু যাত্রার মাধ্যমে, তার পর পর্যায়ক্রমে, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, নর্মদা, মহানদী, গোদাবরী, কাবেরী, কৃষ্ণা ও শেষে কন্যাকুমারীর যাত্রা করেন।


বিবাহ পরিক্রমা- মনু স্মৃতি অনুযায়ী বিবাহের সময় বর ও কনে আগুনের চার ধারে মোট সাতবার পরিক্রমা করেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.