"গান্ধীকে আমিই মেরেছি", আদালতে ১৫০টা কারণ দেখিয়েছিলেন গডসে
ODD বাংলা ডেস্ক: ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি নাথুরাম গডসে ব্ল্যাক পয়েন্ট রেঞ্জ থেকে মহাত্মা গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো হত্যা করার পর নাথুরাম গডসে সেখান থেকে পালানোর কোন চেষ্টাই করেনি। কারণ সে চেয়েছিল তার এই জঘন্যতম হত্যার কথা সারা দেশবাসী যাতে জানতে পারে। এবার আপনাদের যেটা জানাবো সেটা অবাক করে দেওয়ার মতো ঘটনা। গান্ধীজী কে হত্যা করার জন্য তিনি একটা নয় দুটো নয় মোট ১৫০টি কারণ দেখিয়েছিল। তবে সেই সময় কংগ্রেস সরকার এই সমস্ত কারণগুলি প্রকাশ্যে আসতে দেয়নি। কিন্তু নাথুরামের দাদা গোপাল গডসের দীর্ঘতম আইনি লড়াইয়ের পর তা প্রকাশ পায়। গান্ধীজী কে হত্যা করার পেছনে নাথুরাম গডসে জেড এর সঠিক কারণ তুলে ধরা হয়েছিল তার মধ্যে সবগুলি এখানে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। মোটামুটি ১০টির উল্লেখ করা হল এখানে।
১) ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের মূল জেনারেল ডায়ারের গোটা দেশ শাস্তি চেয়েছিল। কিন্তু গান্ধী সেই দাবি খারিজ করেন।
২) ভারতবাসী চেয়েছিল যে বিপ্লবী ভগৎ সিং এবং সুখদেবের ফাঁসি আটকানোর জন্য গান্ধী কিছু পদক্ষেপ করুক। কিন্তু এই সব কিছু তিনি করেননি। উল্টা আবার গান্ধী বলেন, এরা পথ ভ্রষ্ট বিপ্লবী, এরা যে পথে হাঁটছিল সেগুলি সন্ত্রাসের পথ, তাদের ফাঁসি তিনি আটকাবেন না।
৩) ১৯৮৬ সালের ৬ মে যখন দেশের নানা প্রান্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে সেই সময় গান্ধী হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলেন যে তারা যেন মুসলিম লিগের লোকের বিরুদ্ধে যেন না লড়াই করে। সেই সময় মুসলিম লীগের লোকেরা কেরালায় প্রায় ১৫০০ হিন্দুকে হত্যা করেছিল। এছাড়া আরও ২০০০ হিন্দুকে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করানো হয়।
৪) কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে কাশ্মীর ছেড়ে দিতে বলেন গান্ধী। কারণ কাশ্মীরে মুসলিমদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল।
৫) অনেকবার ভারতের মহান যোদ্ধা শিবাজী মহারাজ, রানা প্রতাপ এবং গুরু গোবিন্দ সিং কে পথ ভ্রষ্ট ভারতীয় বলেছিলেন গান্ধী।
৬) ত্রিপুরা কংগ্রেস অধিবেশনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু গান্ধী নিজের ক্ষমতা বলে নিজের অনুগত পট্টভি সিতারামাইয়াকে কংগ্রেসের সভাপতি করেন।
৭) ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট কংগ্রেস সরকার ঠিক করে যে তারা ভারত বিভাজনের বিরোধীতা করবে। তবে যে সভাতে এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া হবে সেই সভাতে গান্ধী একদম শেষ সময়ে পৌঁছান এবং দেশভাগের বিষয়টিকে তিনি সমর্থন করেন। এর আগে গান্ধী নিজেই বলেছিলেন দেশ ভাগ তার নিজের লাশের উপর দিয়ে হবে।
৮) ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর সর্দার প্যাটেল প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু গান্ধীর নির্দেশে নেহেরুকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়।
৯) এরপর নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে ভারত সরকার সোমনাথ মন্দির আবার নির্মাণ করবেন, কিন্তু সেই সময় গান্ধী সরকারে না থাকা সত্ত্বেও সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করান। আবার ঠিক একই সময়ে অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি দিল্লির মসজিদ যাতে সরকারি টাকায় নির্মাণ করা হয় তার জন্য তিনি অনশনে বসেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি তার দাবি মানতে বাধ্য করান সরকারকে।
১০) ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তান কাশ্মীরে হামলা করলে গান্ধী আবার ভারত সরকারের বিরুদ্ধেই অনশনে বসেন। এর ফলস্বরূপ ভারত সরকার পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়। গান্ধীর এমন সিদ্ধান্ত দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে সেই সময় ভারতের মুসলিমদের খুশি করতে হিন্দুদের নানা ভাবে প্রতারিত করেছেন তিনি।
Post a Comment