৩০ বছর পর কুম্ভে শনি, অশুভ প্রভাব থেকে বাঁচতে আগেভাগেই করুন এই উপায়



ODD বাংলা ডেস্ক: শনি ১৭ জানুয়ারি কুম্ভ রাশিতে গোচর করবে। কুম্ভ শনির রাশি। ৩০ বছর পর স্বরাশিতে শনির গোচর হবে। কুম্ভ রাশিতে এসে শশ নামক রাজযোগ তৈরি করবে এই গ্রহ। সমস্ত রাশির ওপর শনির শুভ প্রভাব পড়বে। অন্য দিকে শনির রাশি পরিবর্তনও সমস্ত রাশির জাতকদের প্রভাবিত করবে। মিথুন ও তুলা রাশির ওপর শনির আড়াইয়ের প্রভাব সমাপ্ত হবে। আবার কর্কট ও বৃশ্চিক রাশির জাতকদের জীবনে আড়াইয়ের সূচনা হতে চলেছে। আবার ১৭ জানুয়ারির পর থেকে ধনু রাশিপ জাতকরা সাড়েসাতি থেকে মুক্তি পাবেন। অন্যদিকে মীন রাশির জীবনে সাড়েসাতি শুরু হবে। এ ছাড়াও শনির গোচর বিভিন্ন ভাবে প্রত্যেককে প্রভাবিত করবে। শনির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য শনির রাশি পরিবর্তনের আগে কিছু উপায় করে নিন। এর ফলে তাঁর অশুভ প্রভাব কমবে এবং সুফল লাভ করতে পারবেন। বৈদিক জ্যোতিষের নিয়ম মেনে কোন উপায়ে শনিকে শান্ত করবেন জেনে নিন।


​শনির বৈদিক মন্ত্র জপ


শনিকে প্রসন্ন করার জন্য তাঁর বৈদিক মন্ত্র জপ করুন। এটি হল ওম শন্নো দেবী রভিষ্টয় আপো ভবন্তু পীপতয়ে শনয়ো রবিস্র বন্তুনঃ। এ ছাড়াও শনির বীজমন্ত্র জপ করতে পারেন। এই বীজ মন্ত্রটি হল ওম শং শনৈশ্চরায় নমঃ। এর পাশাপাশি শনি শান্তি পাঠ করাতে পারেন। শনির মন্ত্র পাঠ করার ফলে সাড়েসাতি ও আড়াইয়ের অশুভ প্রভাব কম হয়। পাশাপাশি শনি গোচরের ফলে শুভ ফলদায়ী পরিণাম লাভ করবেন। শনির বৈদিক মন্ত্রের সংখ্যা ২৩০০ হওয়া উচিত। কতদিনে এই মন্ত্র জপ পূর্ণ করবেন, তার সংকল্প করতে ভুলবেন না।


​শনি গোচরে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের লাভ


শনির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য প্রতিদিন মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করুন। শিবের এই মন্ত্রের প্রভাবে শনির পাশাপাশি মাঙ্গলিক দোষ, কালসর্প দোষ, ভূতৃ-প্রেত দোষ, সন্তান বাধা ইত্যাদি সমস্ত দোষের নাশ হয়। এই মৃত্যুর ফলে অকালমৃত্যুর ভয় দূর হয়। নিজে এই মন্ত্র জপ করতে না-পারলে কোনও যোগ্য ব্রাহ্মণকে দিয়ে এই মন্ত্র জপ করবেন।


​তিল স্নান


শনির দশা, অন্তর্দশা ও গোচরে তিল স্নান করা অত্যন্ত শুভ ফলদায়ী। কুম্ভে রাশিতে গোচরের সময়ে মকর, কুম্ভ, মীন, কর্কট, বৃশ্চিক ও মিথুন রাশির জাতকরা জলে তিল মিশিয়ে স্নান করুন। পাশাপাশি কালো তিল দান করতে পারেন। এর প্রভাবে শনির সাড়েসাতি ও আড়াইয়ের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আবার শনির আশীর্বাদে এই দশায় খুব বেশি কষ্ট ভোগ করতে হবে না।


​শনি অভিষেক


৩০ বছর পর পাকাপাকি ভাবে স্বরাশি কুম্ভে প্রবেশ করছে শনি। শনির অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে শনিবার আশপাশের শনি মন্দিরে গিয়ে শনির প্রতিমায় সর্ষের তেল দিয়ে অভিষেক করুন। এর পর কালো তিল, খোসা-সহ বিউলি ডাল, নীল পোশাক, ফুল অর্পণ করুন। এই উপায়ে শনির দশার অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এমনকি শনির আশীর্বাদ পাবেন। এর ফলে নিজের দশায় শনি আপনাকে খুব বেশি কষ্ট দিতে পারবেন না। কঠিন সময়ে সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারবেন।


​শনির গোচরের সময় কী দান করবেন?


শনির আশীর্বাদ থাকলে ব্যক্তি ভিখিরি থেকে রাজা হতে পারেন। শনির অশুভ প্রভাব কম করার জন্য শনি সংক্রান্ত দান করুন। কালো পোশাক, লোহা, তিল, চামড়া, কালো কম্বল ইত্যাদি দান করা উচিত। এর পাশাপাশি শনির পূজার্চনা করুন। শনি সংক্রান্ত জিনিস দান করলে কষ্ট ও সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শনিকে তুষ্ট রাখতে দরিদ্র, অসহায়, কুষ্ঠরোগীদের সেবা করুন।


​শনি গোচরে কী খাবেন ও কী খাবেন না?


শনির দশা, মহাদশা বা গোচরের সময়ে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। এ সময় স্বচ্ছ পোশাক পরিধান করা উচিত। সাত্বিক খাওয়া-দাওয়া করুন। মাছ-মাংস খাবেন না, তা না-হলে আপনার সমস্যা বাড়তে পারে। মন সংযমিত রাখুন। এই উপায়ে শনির প্রতিকূল প্রভাব থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে পারবেন। মনে রাখবেন, শনির বক্রদৃষ্টি প্রবল সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। তাই এই উপায়ে নিজেকে চিন্তামুক্ত করতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.