পরিযায়ী পাখিরা যেভাবে আকাশ ছোঁয়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ‘বার হেডেড গুজ’ বা দাগি রাজহাঁস হিসেবে পরিচিত এক ধরনের পরিযায়ী রাজহাঁস। এই হাঁসগুলোকে ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়াও মধ্য এশিয়ার নানা দেশে দেখা যায়। এইগুলোকে রীতিমত দক্ষ অ্যাথলিট বলা যায়।

শীতের সময় এই পাখিগুলো মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিযায়ী হয়ে আসে। বসন্তকালে আবার মধ্য এশিয়ায় চলে যায়। সেখানকার পার্বত্যাঞ্চলে ও জলাশয়ে বিচরণ ও প্রজনন করে। এ জন্য তাদের সাত হাজার মিটার উঁচু হিমালয় অতিক্রম করতে হয়৷ আট ঘণ্টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত হিমালয় পার হতে পারে তারা অনায়াসে।


এত উঁচুতে বাতাসও বেশ পাতলা। অর্ধেক অক্সিজেনে কাজ চালিয়ে নিতে হয় তাদের। এটা অবশ্য পাখিগুলোর জন্য কোনো সমস্যাই নয়। এই পাখিগুলো কেমন করে এই পরিস্থিতি কাটাতে পারে, সেটা জানার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। এ জন্য স্বচ্ছ একটি প্লাস্টিকের বাক্সে রানিং ব্যান্ডে দৌড়াতে দেন হাঁসগুলোকে অক্সিজেনের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে দেন।


অনেকটা হিমালয়ের আবহাওয়ার মতো। হাঁসগুলো তাদের গতি ১৫ মিনিট ধরে রাখতে পারে।‘প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পর্বাতারোহীদের জন্যও এটা অসম্ভব।’


পর্বতারোহীদের মতে,  মানুষের শরীর ধীরে ধীরে কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত হয়। অনেক দিন বা সপ্তাহও লেগে যায়। পর্বাতারোহীদের মাঝে মাঝে ঘুমের জন্য বিরতি দিতে হয়। এছাড়া এক স্থান থেকে আরেক স্থান পর্যন্ত একটানা ৩০০ মিটারের বেশি ওপরে ওঠা উচিত নয়। 


প্রশ্ন জাগতে পারে, পরিযায়ী হাঁসগুলো কোন কৌশলে কোনো রকম অসুবিধা ছাড়াই এই পথ অতিক্রম করতে পারে? পেশির কাজের জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন। এটি রক্তের লোহিতকণিকার মাধ্যমে বাহিত হয়। শরীরের সেল বা কোষে অক্সিজেন থেকে শক্তি সৃষ্টি হয়। পরিযায়ী হাঁসগুলোর সুবিধা হলো তাদের পেশিতে বহু রক্ত-ধমনী রয়েছে। এজন্য ভালোভাবে রক্ত সরবরাহ হয়। মনে করেন গবেষকরা। এছাড়া তাদের রক্তের লোহিতকণিকা কিছুটা ভিন্ন ধরনের। এটা অক্সিজেন শক্ত করে ধরে রাখতে পারে।এই কারণে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পেশিতে আসতে পারে।


প্রকৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে: আর একটা কৌশল হলো এই পাখিদের মাইটোকন্ড্রিয়া রক্তের ধমনী সংলগ্ন থাকে। তাই তারা দ্রুত অক্সিজেন গ্রহণ করে শক্তি হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.