রান্নাঘরের সবচেয়ে বেশি জীবাণুর বাস মসলাপাত্রে, নতুন গবেষণা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: রান্নাঘরের কোন অংশে সবচেয়ে বেশি জীবাণু গিজগিজ করে বলে আপনার মনে হয়? কেউ কেউ বলবেন ফ্রিজের হাতল, কারও মনে হবে কাটিং বোর্ডের কথা, কেউবা আবার সিংকের অভ্যন্তরকেই মেনে নেবেন। কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়ার মতো জীবাণু আস্তানা গাড়তে পারে রান্নাঘরের অপ্রত্যাশিত জায়গায়: মসলা রাখার স্থানে। খবর দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এর।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের ফুড সেফটি অ্যান্ড ইন্সপেকশন সার্ভিস-এর সহায়তায় করা এ গবেষণা অনুযায়ী, রান্নাঘরের অত্যাধিক জীবাণুপূর্ণ স্থানটি হচ্ছে মসলা রাখার পাত্রগুলো। এগুলো জীবাণুতে আক্রান্ত হয় ক্রস-কন্টামিনেশনের মাধ্যমে তথা অন্য পদার্থের সংস্পর্শ থেকে।


বিভিন্ন ধরনের রান্নাঘরে টার্কি রান্নার মাধ্যমে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। এসব রান্নাঘরে ব্যবহৃত মসলার পাত্রগুলোর ৪৮ শতাংশে টার্কি থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে।


সম্প্রতি জার্নাল অব ফুড প্রটেকশন-এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। 'সাধারণত মসলার পাত্রে জীবাণুর ঝুঁকি থাকে না বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। ফলে ভোক্তারা হয়তো এগুলো পরিষ্কারের ব্যাপারে বিশেষ মাথা ঘামান না,' গবেষণাটিতে বলা হয়।


গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারী ৩৭১ ব্যক্তি টার্কি রান্না করেন। ওই টার্কিগুলোতে ক্ষতিকারক নয় এমন কিছু 'ট্রেসার' ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে দেন গবেষকেরা। রান্না শেষ হওয়ার পর গবেষকেরা বাসনপত্র ও মসলা রাখার স্থানসহ মোট ১২টি স্থান থেকে সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন।


বেশিরভাগ স্থানে ২০ শতাংশ সময় জীবাণু পাওয়া যায়। অন্যদিকে মসলাপাত্র রাখার স্থানে ৪৮ শতাংশ সময় জীবাণু খুঁজে পান গবেষকেরা। এছাড়া মসলায় পাওয়া জীবাণুর ঘনত্বও বেশিরভাগ স্থানের তুলনায় বেশি ছিল।


গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন রুটজার্স স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস-এর খাদ্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডোনাল্ড শাফনার। তিনি জানান, এ গবেষণার ফলাফল সংশ্লিষ্ট গবেষকদেরও অবাক করেছে।


তবে নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটির কৃষি ও মানব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং এ গবেষণার একজন জ্যেষ্ঠ লেখক বেঞ্জামিন চ্যাপম্যান মনে করেন না, গবেষণাটির ফলাফল দেখে মানুষজনের তাড়াহুড়ো করে মসলা রাখার স্থান ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধুয়ে ফেলার কোন প্রয়োজন আছে।


পৃষ্ঠতলের ওপর অনেক প্যাথোজেন দুর্বল হয়ে পড়ে বলেও উল্লেখ করেন চ্যাপম্যান। তবে কেবল খাবার তৈরির আগে ও পরে হাত না ধুয়ে খাবার রান্না করার মাঝ পর্যায়েও হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এ অধ্যাপক।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.