লন্ডনের সাধারণ এক বাসিন্দা সমাধান করলেন ২০,০০০ বছর পুরোনো বরফ যুগের গুহাচিত্রের রহস্য

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বরফ যুগের আদিম মানুষেরা কেন তাদের গুহাচিত্রগুলো এঁকেছিলেন, সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। আর এ অনুসন্ধানে সহায়তা করেছে আরেকটি আবিষ্কার, যার কৃতিত্ব লন্ডনের একজন আসবাব সংরক্ষকের। খবর জানিয়েছে বিবিসি।


বেন ব্যাকন নামক ওই ব্যক্তি ২০,০০০ বছর পুরোনো গুহাচিত্রগুলোতে থাকা বিভিন্ন চিহ্ন বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন: ওই চিহ্নগুলোকে চান্দ্র পঞ্জিকা (লুনার ক্যালেন্ডার) হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন আদিম মানুষেরা।


আদিম শিকারি মানুষদের আঁকা রেইনডিয়ার, মাছ, গবাদিপশু ইত্যাদির নানা চিত্রকর্ম ইউরোপের বিভিন্ন গুহায় পাওয়া গিয়েছে।


কিন্তু এসব ছবিতে থাকা বিন্দু ও অন্যান্য চিহ্নের অর্থ বের করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। তাই বেকন ভাবলেন, বিষয়টি তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন।


এরপর ইন্টারনেট ও ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে অসংখ্য ঘণ্টা ব্যয় করে ছবিগুলোর বিষয়ে যথাসম্ভব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সেগুলোর মধ্য প্যাটার্ন খুঁজতে শুরু করেন তিনি।


বিভিন্ন ছবিতে একটি ইংরেজি 'ওয়াই' (Y) অক্ষরের মতো চিহ্নকে পরীক্ষা করে তিনি ধারণা করেন, এর দ্বারা আদিম মানুষেরা 'জন্ম দেওয়ার' ধারণা বুঝিয়েছেন।


'প্রত্নতত্ত্বের লোক না হয়েও' বন্ধু ও জ্যেষ্ঠ অ্যাকাডেমিকদের পরামর্শে নিজের অনুসন্ধান চালিয়ে গেছেন বেকন। ডারহাম ইউনিভার্সিটির দুইজন এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একজন অধ্যাপকের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে শুরু করেন বেকন।


গবেষণার তথ্য ও উপাত্তের মাধ্যমে এ দলটি ধারণা করছেন, গুহাচিত্রগুলোতে এসব চিহ্ন দিয়ে আদিম মানুষেরা চান্দ্র মাসের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রাণীর সঙ্গম মৌসুমের হিসেব রেখেছিলেন।


এ দলটির অনুসন্ধানটি কেমব্রিজ আর্কিওলজিক্যাল জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়েছে।


ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল পেটিট জানান, 'বরফ যুগের শিকারিরা প্রথমবারের মতো নিয়মমাফিক ক্যালেন্ডার ও চিহ্ন ব্যবহার করে ওই ক্যালেন্ডারের মধ্যকার বৃহৎ বাস্তুতান্ত্রিক তথ্যের রেকর্ড রেখেছিলেন।'


এর মাধ্যমে তারা সময়ের হিসাবের এমন এক রেকর্ড রেখে গেছেন যা এখন আমাদের প্রজাতিতে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে পরিণত হয়েছে, বলেন তিনি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.