একটি গাছের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ১৮৯৮ সাল, সে সময় ব্রিটিশ সেনা অফিসার জেমস স্কুইড একটি পুরোনো গাছকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজও পাকিস্তানের ল্যান্ডি কোটাল সেনানিবাসে শিকল পরিয়ে বন্দি রাখা হয়েছে মহীরুহটিকে।

এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশরা মূলত উপজাতিদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছিলেন যে, ‘ব্রিটিশ বিরোধিতা করা যাবে না’। 


পাকিস্তানের দূর্গম লান্ডিকোটাল এলাকায় গাছটি আজও দাঁড়িয়ে আছে।  গাছটি ঔপনিবেশিক শোষণের চিহ্ন বহন করে চলেছে।


কিংবদন্তী আছে, জেমস মদ্যপ অবস্থায় একদিন বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথের মধ্যে হঠাৎ তিনি দাঁড়িয়ে যান; দেখেন গাছটি তার দিকে এগিয়ে আসছে। বারবার গাছটিকে এগিয়ে আসতে নিষেধ করলেও নির্দেশ অমান্য করে সেটি এগিয়ে যায় তার কাছে। তার এ গল্প শুনে কেউ বিশ্বাস করেনি, কারণ পুরোটাই ছিল নেশার ঘোর। তারপরও শেকল দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় গাছটিকে।


গাছের যাবজ্জীবন দিয়ে তিনি থমকে যাননি। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও হুমকি দেয়া হয়, কেউ এই গাছকে মুক্ত করলে তাকেও শাস্তি পেতে হবে। কালের সাক্ষী হয়ে ল্যান্ডিকোটাল সেনানিবাসে বন্দি অবস্থায় থাকা গাছটি এখনো তাই মুক্তির দিন গুনছে। গাছটির গায়ে লেখা, ‘আই অ্যাম আন্ডার অ্যারেস্ট’।


পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুখতিয়ার দুররানি বলেন, ‘যদি এই গাছটি অন্য কোনো দেশে থাকত, তারা এর যত্ন নিত এবং এটিকে তাদের ইতিহাসের অংশ করে দিত। .


দুররানি যোগ করেছেন যে, এই গাছটি, তার বয়স এবং সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য, ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’


গাছটি আজও পশতুন আদিবাসীদের দুর্দশার করুণ গল্প বলে যায় নিরবে। এ এক বেদনাদায়ক অধ্যায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.