শীতে শুধু ঘুম পায় কেন? জানুন সমাধান

 


ODD বাংলা ডেস্ক: শীতকালে ঘুমের ঘোরে মন ভরে থাকে। ক্লান্তি থাকলেও ঘুম আসে ক্লান্তি না থাকলেও ঘুম আসে। না ঘুমালে ঘুম তো আসেই অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে ওঠার পরেও ঘুম চলেই আসে। শীতে ঘুম আর ঘুম ঘুম ভাবের কারণে আমাদের জীবনের অনেককিছুই ‘মিস’ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতুভেদের সঙ্গে সঙ্গে শরীর ও মনে কিছু পরিবর্তন হবে, এটাই স্বাভাবিক।


দেখে নিন শীতকালে কেন বেশি ঘুম আসে:


সূর্যের আলোর অভাব


শীতে দিন ছোট হয়ে যায়। এতে কাজের চক্রে পরিবর্তন আসে। এই দিন ছোট হওয়ার বিষয়টি বা সূর্যের আলোর ঘাটতি মস্তিষ্ক থেকে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোনের কারণে ঘুমঘুম ভাব বাড়ে। আলো ও আঁধারের সঙ্গে এই হরমোন তৈরির একটি যোগ রয়েছে। যেহেতু শীতে দিন ছোট, সূর্যের আলো কম পাওয়া যায় এবং রাত বড়, তাই আমাদের শরীর বেশি ঘুমাতে চায়।


ঘুম থেকে ওঠার পর ঘরে আলো প্রবেশের জন্য জানালা খুলে দিন। বেশিরভাগ সময় সূর্যের আলোর কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে কাজের সময় পরিবর্তন করুন। কাজের জায়গায় আলো বেশি রাখার চেষ্টা করুন।


ভিটামিন-ডি’র অভাব


সূর্যের আলো ভিটামিন-ডি’র অন্যতম উৎস। ভিটামিন-ডি পেতে সকালের আলোতে যেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। শীতে ঘর থেকে কম বের হওয়া হয় বলে ভিটামিন-ডি’র অভাব হতে পারে। এতে শরীর ক্লান্ত লাগে।


তেলযুক্ত মাছ, স্যামন, সারডিন, ম্যাকরেল ইত্যাদি মাছ খেতে পারেন। ডিমও ভিটামিন-ডি’র আরেকটি উৎস। পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে কীভাবে ডিম খাবেন, জেনে নিন। এ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন।


ঘুমের ঘাটতি


ভালোভাবে না ঘুমালেও কিন্তু বেশি ঘুম পায়। অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী ঘুমান। ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার সময় ঠিক রাখুন।


শীতকালে জড়তা বেশি থাকে, আলস্য কাজ করে। তবু উঠতে হবে। তা না হলে অভ্যাস চলে যাবে। আমাদের দেহের সুস্থতা নির্ভর করে কতটুকু ঘুমাচ্ছি, কতটা সকালে উঠছি তার উপরে। যতই কাজ থাকুক না কেন, পর্যাপ্ত ঘুম ও সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করার দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কখন আমরা ঘুম থেকে উঠছি, তা কিন্তু আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি আর কর্মস্পৃহার ওপর প্রভাব ফেলে।


শীতে ভোরে জেগে উঠতে যা খেয়াল রাখতে হবে:


শীতে ঘুমের আড়ষ্টতা কাটাতে এক কাপ চা দিয়ে শুরু করতে পারেন দিনটা। শীতের সকালে বাড়তি উষ্ণতা দেবে। আর প্রতিদিন সকাল সকাল পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে চা পানের অভ্যাস থাকলে আপনার দিনের শুরুটা অন্য রকম হবেই।

শীতে নিজে তো উঠবেনই, পরিবারের শিশু ও কিশোরদেরও ঘুম থেকে ভোরে উঠতে উৎসাহ দিন।

সকালে ব্যায়াম কিংবা হাঁটাহাঁটি করলে জড়তা চলে যাবে। হালকা গরম জলে হাত-মুখ ধুয়ে নিলে ফুরফুরে লাগবে। কাজেও মনোযোগ আসবে।

শীতের সকালে বাড়িতে মুঠোফোন বা কম্পিউটারে শ্রুতিমধুর গান শুনতে শুনতে নিজের কাজ আনন্দ নিয়ে করার অভ্যাস করলে মনের উৎফুল্লতা বাড়বে।

শীতে রাতে ঠান্ডা বাড়ে। তাই বেশি রাত জেগে কাজ না করে সকালের জন্য কাজ গুছিয়ে রাখার অভ্যাস তৈরিতে মনোযোগ দিন।

শীতে এমনিতেই সকলে একটু জড়সড় থাকেন। তাই সারা দিন কী করবেন, সেই কাজের তালিকা সকালে জলখাবার খেতে খেতে করতে পারেন। ঘুমানোর সময় মুঠোফোন বিছানা থেকে দূরে রাখুন। ঘুমানোর আধঘণ্টা আগে মুঠোফোন, টেলিভিশন আর ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না।

মুঠোফোনের নীল আলো আমাদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটায়। ঘুমানোর আগে শুয়ে শুয়ে ফোনে সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে ঘোরাঘুরি কিংবা গেমস খেলা থেকে বিরত থাকুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.