মৃত্যুর ২০০০ বছর পর যেভাবে জীবন্ত হলেন নারী

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ২০০০ বছর পুরনো সমাধিতে পাওয়া গেছে এক নারীর দেহাবশেষ। সেখান থেকে তার মুখাবয়ব তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর নাবাতিয়ান জনগোষ্ঠীর ঐ নারীর চেহারা পুনর্নির্মাণ করতে সক্ষম হন তারা।

সৌদি আরবের উত্তরের একটি প্রাচীন জনগোষ্ঠীর নাম নাবাতিয়ান। ২০১৫ সালে সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাচীন মরূদ্যান শহর আলউলাতে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হেগ্রার সমাধিক্ষেত্রে থেকে ঐ নারীর মরদেহ আবিষ্কৃত হয়। সমাধিক্ষেত্রটি ২০০০ বছরের পুরনো।


ঐ নারীর নাম হিনাত। এই নাম শনাক্ত করা হয় তার সমাধিতে পাওয়া শিলালিপি থেকে। হিনাত হচ্ছেন তার জনগোষ্ঠীর প্রথম ব্যক্তি, যার চেহারা পুনর্গঠন করা হলো। আলউলার রয়্যাল কমিশনের অর্থায়নে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে হিনাতের মুখায়বব পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। সমাধিতে পাওয়া ঐ নারীর দেহাবশেষ বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞদের একটি দল চেহারা পুনর্গঠনের কাজ করেন। এর জন্য তারা নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নানা তথ্য ব্যবহার করেন। পরে একজন ভাস্কর থ্রিডি প্রিন্টারের সাহায্যে হিনাতের চেহারা জীবন্ত করেন।



ইতিহাস থেকে জানা যায়, নাবাতিয়ান জনগোষ্ঠী ২০০০ বছর আগে সৌদি আরবে উত্তরে ও লিভান্টে বসবাস করত। জর্ডানের প্রাচীন শহর পেত্রা ছিল তাদের রাজধানী। এই শহর সেই সময় মশলা, ওষুধ ও কাপড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। এছাড়া পেত্রা সে সময় ঐ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল। হিনাতের মুখ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ইতিহাসপ্রেমীরা আলউলার হেগরায় রক্ষিত হিনাতের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। একসময় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি সমৃদ্ধ কেন্দ্র এবং নাবাতিয়ানদের আবাসস্থল হেগরা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। 


২০২০ সালে এটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের পরিচালক লেবানিজ-ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ লায়লা নেহমি বলেন, নাবাতিয়ানরা কিছুটা রহস্যময়। আমরা তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। এই সমাধি খননের ফলে পরকাল সম্পর্কে তাদের চিন্তাভাবনাগুলো জানা দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।


হিনাতের দেহাবশেষ সম্পর্কে নেহমি বলেন, তার সমাধিটির সম্মুখভাগে একটি খুব সুন্দর শিলালিপি খোদাই করা আছে। যা বলে যে এটি হিনাত নামে একজন নারীর ছিল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.