সন্তানের শত্রু হন এমন বাবা-মায়েরা! বারবার সাবধান করেছেন চাণক্য
ODD বাংলা ডেস্ক: মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত ও তাঁর পুত্র বিন্দুসারের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন চাণক্য। তিনি একাধারে ছিলেন শিক্ষক, লেখক, দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও কূটনীতিবিদ। কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি। মনে করা হয় ভারতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতির জনক ছিলেন চাণক্য। তীব্র বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন চাণক্য তাঁর চাণক্য নীতি গ্রন্থে জীবনের নানা দিক সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন।
পরিবার, সমাজ, ধর্ম, রাজনীতি ও শিক্ষার বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন চাণক্য। তাঁর এই সমস্ত পরামর্শ আজও আমাদের জীবনে সমান কার্যকরী। সন্তানকে সঠিক ভাবে লালন-পালন করা যে কোনও বাবা-মায়ের জীবনের সবচেয়ে বড় কর্তব্য। কারণ ছোটবেলায় সন্তানকে সঠিক দিশা দেখাতে না পারলে, বড় হয়ে দিগভ্রষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যে ব্যক্তি ছোটবেলা থেকে সুশিক্ষা লাভ করেন, তিনি বড় হয়ে নিজের মধ্যে দিয়ে সমাজকে একজন আদর্শ নাগরিক উপহার দিতে পারেন। সেই কারণে সন্তান লালন-পালন করার বিষয়টি যে কোনও যুগে, যে কোনও দেশে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
জেনে নিন এই বিষয়ে কী পরামর্শ দিয়েছেন আচার্য চাণক্য।
* চাণক্য বলেছেন, যে বাবা-মা সন্তানকে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেন, তাঁরাই সন্তানের সবচেয়ে বড় শত্রু। কারণ মূর্খ হয়ে থাকলে সেই সন্তান বড় হয়ে জীবনে কিছুই করতে পারবে না।
* সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে না পারলে, জীবনের সঠিক পাঠ দিতে না পারলে শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষা তার জীবনের পথে প্রায় কোনও কাজেই লাগবে না।
* চাণক্য বলেছেন যে শিক্ষা আমাদের সবকিছু সঠিক ভাবে বুঝতে শেখায়, আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। তাই মূর্খ হয়ে থাকলে সেই সন্তানের মধ্যে কখনোই আত্মবিশ্বাস জন্মাবে না। তাই যে বাবা মা সন্তানের লেখাপড়ার দিকে যথেষ্ট মনোযোগী নন, তাঁরাই সন্তানের সবচেয়ে বড় শত্রু।
* চাণক্য আরও বলেছেন, যে মানুষ হয়েই জন্মালেই কেউ বুদ্ধিমান হয়ে যায় না। বুদ্ধির উন্মেষ ঘটাতে ছোটবেলা থেকেই প্রতিটি শিশুর মানসিক ঘসামাজা করা জরুরি, যাতে তার বুদ্ধির ধার তীক্ষ্ণ হয়। আর সেই কাজটা বাবা-মাকেই করতে হবে। সন্তানের বুদ্ধিকে জাগাতে যে বাবা-মা সচেষ্ট নন, তাঁদের থেকে বড় শত্রু সেই সন্তানের জন্য আর কেউ নেই।
* প্রতিটি মানুষের দুটো হাত, দুটো পা, একটা মাথা থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয় জ্ঞান, পাণ্ডিত্য ও বুদ্ধির বিচারে।
* ঠিক যেমন এক ঝাঁক হাঁসের মধ্যে একটি বক ঢুকে গেলেও তাকে আলাদা করে চেনা যায়, হাঁসের ঝাঁকের মধ্যে বককে কখনোই দেখতে ভালো লাগে না, তেমনই কোনও মূর্খ ব্যক্তি কখনোই পণ্ডিতদের সঙ্গে সমান ভাবে মিশতে পারেন না। তাই সব বাবা-মায়েরই উচিত সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করা।
Post a Comment