যেভাবে গর্ভের বাড়ন্ত শিশুকে নিরাপদ রাখবেন

 


ODD বাংলা ডেস্ক: হবু সন্তানের সুস্থতার কথা মাথায় রেখে প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে। এজন্য গর্ভাকালে আপনার শরীরের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিছু অভ্যাসও বদলাতে হবে।

আপনার গর্ভে বড় হতে থাকা শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে গর্ভকালে কিছু বিষয় এড়িয়ে চলতে কিছু টিপস দেওয়া হলো-


গর্ভাকালে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন


আপনি এবং আপনার শিশু, উভয়ের জন্য একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতে নিরাপদ পুষ্টি গ্রহণ অপরিহার্য। এই সময়ে ক্ষতিকর সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা নিচে কিছু সুপারিশ তুলে ধরছি-


গর্ভাবস্থায় খাবেন না


> কাঁচা, পাস্তুরিত দুধ


> পাস্তুরিত দুধ থেকে তৈরি নরম পনির


> মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার


> কাঁচা মাংস


> যথাযথ রান্না না করা মাংসের খাবার, যেমন সসেজ ও কোল্ড কাট


> রান্না না করা মাছ এবং সামুদ্রিক খাবার


> স্মোকড ফিস বা পোড়া মাছ


> রান্না না করা অঙ্কুরিত বীজ, শস্য ও মটরশুটি এবং


> কাঁচা ডিম।


খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক টিপস


> খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন


> ব্যবহারের পর খাবারের সব পাত্র ভালো করে ধুয়ে নিন


> মাংস ভালো করে রান্না করুন


> খাওয়ার আগে শাকসবজি, সালাদ পাতা এবং ফল সাবধানে ধুয়ে নিন


> উপযুক্ত তাপমাত্রায় খাবার সংরক্ষণ করুন


> রান্নার পরপরই খাবার খেয়ে নিন।


অ্যালকোহল এবং গর্ভাবস্থা


আপনি সম্ভবত শুনেছেন যে, গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল পান বিপজ্জনক। কেনো বিপজ্জনক সেটাই এখানে তুলে ধরছি: গর্ভে থাকাকালীন অ্যালকোহলের সংস্পর্শে আসা শিশুদের প্রতিবন্ধীতা বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয় এবং তাদের স্নায়ুজনিত রোগ হতে পারে। এর ফলে তাদের শেখা ও আচরণগত গুরুতর সমস্যা হয়। এমনকি অল্প পরিমাণে অ্যালকোহলের সংস্পর্শে আসা শিশুদেরও একই রকম হয়, তবে তা হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় আপনার সন্তানের স্বার্থে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান থেকে বিরত থাকুন।


ধূমপান এবং গর্ভাবস্থা


ধূমপান ছেড়ে দেওয়া কঠিন হতে পারে; কিন্তু আপনার ছোট্ট শিশুকে জীবনের একটি সুস্থ সূচনা দেওয়ার জন্য তামাকের ধোঁয়া থেকে তাকে রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিগারেট আপনার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ সীমিত করে দিতে পারে। এটি তার কম ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ায়। যেসব শিশুর বাবা-মা ধূমপান করেন তাদেরও হাঁপানি এবং অন্যান্য গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই তামাক ছাড়তে সাহায্যের জন্য আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। এ সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ, গবেষণা ও নির্দেশনা অনলাইনে পাওয়া যায়।


ক্যাফিন ও গর্ভাবস্থা


আপনার দ্বিতীয় কাপ চা বা কফি ছেড়ে দেওয়া কঠিন হতে পারে; কিন্তু গর্ভধারনের সূচনা থেকে পরবর্তী নয় মাস আপনাকে ক্যাফিন গ্রহণের দিকে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন গ্রহণ গর্ভে ভ্রূণের বিকাশ ব্যাহত করে। তাই গর্ভবতী নারীদের প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফিন গ্রহণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। খাবার ও পানীয়তে ক্যাফিনের পরিমাণ পরিবর্তন হয়, তাই পুষ্টির মাত্রা সম্পর্কে পড়াশোনা করে ভালোভাবে জানতে ভুলবেন না।


গর্ভাবস্থায় নিজেই নিজের যত্ন


গর্ভবতী হওয়ার পর একজন মানুষ হিসেবে আপনার শরীর বেড়ে উঠছে- এটি অলৌকিক কোনো ঘটনার চেয়ে কম নয়। এই সময়ে নিজেই নিজের যত্ন নেওয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।


> গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন, মাংস, বাদাম, বীজ, শস্য, মটরশুটি, ফল ও শাকসবজি খান, যা আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে সাহায্য করবে।


> আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান প্রসবের আগে ভিটামিন নিন।


> ভারী বস্তু উত্তোলন এড়িয়ে চলুন।


> পরোক্ষ ধূমপান (সেকেন্ড-হ্যান্ড স্মোক) এড়িয়ে চলুন।


> একজন বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের সঙ্গে অনুভূতি ভাগ করে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। আপনি যদি বিহবল বোধ করেন এবং মাঝারি ধরনের শারীরিক কার্যকলাপে যুক্ত হন; তবে শান্তভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।


> আপনার শরীর নড়াচড়া করুন, তবে নিজেকে ক্লান্ত করবেন না। গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করার সময় কারো সঙ্গে আপনার কথা চালিয়ে যাওয়া উচিত।


> গর্ভাবস্থায় কোনো খাবার বা আচরণ নিরাপদ কিনা তা নিয়ে আপনি যদি অনিশ্চয়তায় থাকেন; তবে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সঙ্গে পরামর্শ করুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.