স্বাস্থ্যকর রেসিপি: চিকেন মাঞ্চুরিয়ান

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সাধারণত মুরগির বুকের গোশত দিয়ে তরকারি রান্না করলে এটি খেতে আমাদের কাছে খুব একটা ভালো লাগে না। তাই রেসিপি তৈরির এই লেখায় আমরা বেছে নিয়েছি মুরগির বুকে গোশত দিয়ে একটা চমৎকার ডিশ তৈরির পদ্ধতি। যার নাম— চিকেন মাঞ্চুরিয়ান। ঈদের বিশেষ এই রেসিপিতে আমরা আলোচনা করব কিভাবে খুব মজা করে মুরগির বুকের মাংস রান্না করা যায়। পদ্ধতিটি খুবই সহজ, ফলে যে কেও অল্প সময়ে বাসায় ঝটপট তৈরি করতে পারবে। এবং খাবার হিসেবে এটি খুবই সুস্বাদু।  


উপকরণ


মুরগির বুকের গোশত

আদা বাটা

রসুন বাটা 

গোলমরিচের গুঁড়া 

লবণ

কর্ণফ্লাওয়ার 

ডিম 

তেল

গারনিশ (ধনে পাতা + পেঁয়াজের পাতা)

জল

প্রণালী

প্রথমে ৩০০ গ্রাম পরিমাণ মুরগির বুকের গোশত খুব ছোট সাইজের কেটে নিয়ে এক টেবিল চামচ পরিমাণ আদা বাটা, রসুন বাটা, গোলমরিচের গুঁড়া, আর লবণ একটি বাটিতে নিয়ে মেখে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো রেখে দিতে হবে। ম্যাগনেশিয়ান হয়ে গেলে চিকেনগুলো কর্ণফ্লায়ার বাটার দিয়ে কোট করতে হবে। বাটার তৈরি করতে লাগবে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ কর্ণফ্লাওয়ার, একটা ডিম, এক টেবিল চামচ জল। কর্ণফ্লাওয়ের এই কোটিং দিয়ে ভাজাটা সাহায্য করবে সস রিটেন করতে এবং এতে হবে মুরগির চমৎকার জুসি আর ফ্লেভারফুল। 


বাটার তৈরি করতে চিকেন ডুবা তেলে ভাজতে হবে। মিডিয়াম হিটে মাত্র ৩-৪ মিনিট ফ্লাই করলেই হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এই পর্যায়ে চিকেনগুলো অনেকক্ষণ ভাজা যাবে না। অতিরিক্ত ভাজলে ড্রাই হয়ে যাবে; এতে মুরগির যে জুসি আর টেন্ডার টেস্টটা চাই, সেটা পাওয়া যাবে না।  


মুরগির বুকের গোশত রান্না হতে সময় লাগে প্রায় ৬ মিনিটের মতো। এখন বাকি সময়টুকু রান্না হবে সসের সাথে। এই রেসিপিটা রান্না করতে উচ্চ তাপে খুব সহায়ক দেশি কড়াই, অথবা কার্বন ষ্টিলের ওক (WOK)। তেলের ক্ষেত্রে সয়াবিন অথবা ভেজিটেবল তেল এক টেবিল চামচ নিতে হবে। এই পর্যায়ে আদা, রসুন এবং কাঁচা মরিচ গরম তেলে দিতে হবে। উচ্চ তাপমাত্রায় ১ মিনিট গরম হওয়ার পর হালকা ব্রাওন হয়ে আসলে ১/২ মিডিয়াম সাইজের লাল পেঁয়াজ এবং দুই রঙের ২ স্লাইস ক্যাপসিকাম যোগ করতে হবে। এগুলো আমাদের সসকে দিবে খাবারে একটা চমৎকার প্ল্যাভার। এই পর্যায়ে দুই টেবিল চামচ সয়া সস এবং দুই টেবিল চামচ টমেটো সস আর একটু গোলমরিচের গুঁড়া দিতে হবে। তারপর দেড় কাপ জল মিশ্রিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, চুলার তাপমাত্রা যেন উচ্চ থাকে। আমরা দেড় কাপের মতো জল দিয়েছি যাতে একটু ঝোল থাকে আর ভাতের সাথে খাওয়া যায়। জল দেওয়ার পর বাবল আসা শুরু করলে চিকেনগুলো যোগ করে হাই হিট মেইনটেইন করে রান্না করতে হবে মাত্র ২ মিনিটের মতো। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলো গরম জল দিলে কুকিং টাইম কম লাগবে। এতে কড়াইয়ের তাপমাত্রা দ্রুত কমবে না এবং সসটা ভালো হবে। 


রান্নাটা শেষ হবে চার টেবিল চামচ কর্ণফ্লাওয়ার মিক্স যোগ করার মাধ্যমে। কর্ণফ্লাওয়ার মিক্স যোগ করার সাথে সাথেই সসটা ঘন হয়ে আসবে। এতে মাঞ্চুরিয়ান সস ভালোভাবে চিকেনে ইন্টিগ্রেট হবে। কর্ণফ্লাওয়ার আর জলের এই মিশ্রণটা সস ঘন করার একটা চমৎকার উপায়। সর্বশেষ কাজ চুলা বন্ধ করার পর গারনিশ করা পেঁয়াজের পাতা আর ধনে পাতা দিয়ে। ব্যস হয়ে গেল আমাদের চিকেন মাঞ্চুরিয়ান।


কিছু পুনর্পাঠ

এই রেসিপির জন্য সয়া সস আর কর্ণফ্লাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্তা সস থাকলে সেটিও একটু যোগ করতে পারেন, তবে এটি অনৈচ্ছিক। সয়া সস আর ওয়েস্তা সস এগুলো থেকে বিভিন্ন ফ্লেভার পাওয়া যায়। এতে মিষ্টি, তেতো, টক, নুনতা এই চারটি মৌলিক স্বাদের পাশে পঞ্চমি স্বাদ পাওয়া যায়। মাঞ্চুরিয়ান সস হলো এই সবগুলো সসের একটা গ্রেট কম্বো। 


এবার সংক্ষপে জেনে নেওয়া যাক এই রেসিপির উৎপত্তি সম্পর্কে 

মাঞ্চুরিয়ান চিকেন দেশি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাওয়ার কারণে অনেকে মনে করে থাকেন এটি চাইনিজে উৎপত্তি কিন্তু এটি প্রকৃতপক্ষে চাইনিজ ডিশ না। বরং এটির উৎপত্তি হয়েছে ভারতে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.