সহজে মিশতে বা বন্ধু তৈরিতে সন্তানের অনীহা?



 ODD বাংলা ডেস্ক: করোনার আবহে বড়দের সঙ্গে সঙ্গে ছোটদেরও গৃহবন্দী থাকতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। ওই দুই বছরে হাজার হাজার শিশু হারিয়েছে তাদের স্বাভাবিক শৈশব। স্কুলে যাওয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সামনে বসে পড়া শোনা, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আলাপ-খুনসুটি, ভাগ করে টিফিন খাওয়া, মাঠে নেমে খেলাধুলো, নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করা, সবই যেন সুদূর অতীতের গল্প হয়ে উঠেছিল। শিশুদের জগৎ হয়ে উঠেছিল কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রিন।


এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতিমারি শিশুদের অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর করে তুলেছে। পাশপাশি মানুষ, পরিবেশ, বা আশেপাশের থেকে দূরে নিয়ে গেছে।


এটা ঠিক যে নতুন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা বা যে কারও সঙ্গে হঠাৎ করে কথোপকথন শুরু করতে অনেক সময় বড়দেরও সমস্যা হয়। তারপরও প্রাপ্তবয়স্করা এমন কোনও পরিস্থিতি হলে সামাল দিতে পারলেও, শিশুদের ক্ষেত্রে তা সত্যিই কঠিন। এক্ষেত্রে বাবা-মাকেই অগ্রণী হতে হবে। কয়েকটি উপায় অনুসরণ করলে সন্তানদের নতুন বন্ধু তৈরি করতে ও তাদের সঙ্গে রাখতে-থাকতে উৎসাহ জোগাবে। যেমন-


প্রশ্ন করার অভ্যাস গড়তে তাদের উৎসাহ দিন: শিশুদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে উৎসাহ দিন। সংযোগ তৈরির সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা। এই অভ্যাস অন্যদের সঙ্গে শিশু যোগাযোগ তৈরি করবে। সন্তানকে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে উৎসাহিত করুন যার উত্তর হ্যাঁ বা না-এর চেয়ে বেশি হতে হবে।


শিশুদের পছন্দের কাজে নিজেও অংশ নিন: সামাজিক সাচ্ছন্দ্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে শিশুদের পছন্দের কাজে নিজেও অংশ নিন। শিশুর খেলা, পছন্দের বাদ্যযন্ত্র বা তার পছন্দের যে কোনও কাজে নিজেও অংশ নিন। পছন্দের কাজে পরিচিত কারও সঙ্গ পেলে তারা অনেক সহজভাবে মিশতে পারবে বাকিদের সঙ্গেও।


সন্তানের সঙ্গে কথাবার্তা বেশি প্রয়োজন : শিশুরা যা দেখে তাইই শেখে। এ কারণে আপনি তাদের সঙ্গে কীভাবে মিশছেন সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সন্তানের সঙ্গে বা আশেপাশের মানুষের সঙ্গে কীভাবে ব্যবহার করছেন বা মিশছেন তার বড় প্রভাব পড়ে শিশুদের ওপর। ফলে ভাল 'রোল মডেল' হয়ে ওঠা প্রয়োজন।


শিশুর সীমাবদ্ধতা বুঝুন: সব শিশু সমান হয় না। কোনও কোনও শিশু এমনও হয় যারা বেশি কথা বলে, সকলের সঙ্গে অনায়াসেই মিশে যায়। তাদের তুলনায় চুপচাপ কোনও শিশুর মিশতে পারার ক্ষমতা অনেকটাই কম হবে।  আপনার শিশু কোন ধরনের পরিস্থিতিতে স্বস্তিতে থাকবে সেটা একেবারেই তার চরিত্রের ওপর নির্ভর করছে। আপনার সন্তান যদি অন্তর্মুখী হয়, তাহলে বাইরের জগতের সঙ্গে সহজে মিশতে তার সময় লাগবে সেটা মাথায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাকে জোর করবেন না, ছোট হলেও তার অনুভূতিকে সম্মান দিন। আপনার ব্যবহারে সামান্য অসম্মানও শিশুমনে চিরস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.