গ্রীষ্মের তাপদাহে কত লিটার জল পান করা উচিত, জানালেন পুষ্টিবিদ

 


ODD বাংলা ডেস্ক: তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা। বাড়ির বাইরে পা রাখলেই সূর্যের রোদ যেন ঝলসে দিচ্ছে। শরীর থেকেই ঝরনার মতো বেরোচ্ছে ঘাম। এই পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন।

প্রশ্ন হলো, এই তপ্ত আবহাওয়ায় দিনে কতটা জল পান করা উচিত? সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরি।


​১. কেন জল পান জরুরি?​


কোয়েল পাল চৌধুরি জানান, জল আমাদের দেহে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর কাজের অন্ত নেই। রক্ত তৈরি থেকে শুরু করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়মিত করে জল। এছাড়া জল আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হজমে সাহায্য করে, মেটাবলিজম বা বিপাককে ত্বরান্বিত করে, শরীর থেকে খারাপ পদার্থ বের করে দেয়, জয়েন্টকে পিচ্ছিল রাখতে সাহায্য করে ইত্যাদি। তাই জলকে জীবন বলাই যায়। ফলে কিছুটা সময়ান্তরে জল পান করুন। বিশেষত, গরমে জল পান তুলনায় বাড়াতে হবে।


২. গ্রীষ্মের দিনে কতটা জল পান করা উচিত?​


কোয়েল পাল চৌধুরির কথায়, একজন ব্যক্তির কতটা জল জরুরি তা তার পেশা, ওজন, উচ্চতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণ হিসাবে বলা যেতে পারে দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার জল পান তো করতেই হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষের এই পরিমাণ জল অবশ্যই পান করা উচিত। তবেই এই গরমে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন। নাহয় সমস্যা কয়েকগুণ বাড়তে পারে। এমনকি জলের ঘাটতি থেকে অনেক সময় প্রাণহানির আশঙ্কাও তৈরি হয়।


৩. বাইরে থাকলে জল পান বাড়ান​


আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন, তবে জল পানের মাত্রা বাড়াতে হবে। সঙ্গে অবশ্যই জলের বোতল রাখুন। যখনই তৃষ্ণা পাবে জল পান করুন। গলা ও জিভ শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। বরং তার আগেই জল পান করুন। তাহলেই শরীর সুস্থ থাকবে। এছাড়া খুব গরমে দুপুরের দিকে না বেরোনোই মঙ্গল। রোদের তাপ কমলে বাইরে পা ফেলুন। তবে একান্তই বাইরে যেতে হলে টুপি, ছাতা সঙ্গে রাখুন। আর জলের বোতল সঙ্গে থাকা মাস্ট। আর যারা এসিতে রয়েছেন, তারাও নিয়মিত গলা ভিজিয়ে নিন। এতেই শরীর হাইড্রেট থাকবে।


​৪. জলের বিকল্প কী?​


এই সময়ে খেতে পারেন ডাবের জল। এর মাধ্যমে শরীরের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। এছাড়া বাড়িতে ফল কিনে এনে জুস করে খেতে পারেন। এতেও ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মিলবে। সঙ্গে তৃষ্ণাও মিটবে। তবে বাইরের কাটা ফলের জুস কিনে খাবেন না। এমনকি দোকান থেকে প্যাকেটবন্দি জুসও খাওয়া চলবে না। এতে আলাদা করে সুগার মেশানো থাকে যা ক্ষতিকর। এছাড়া গ্রীষ্মের দিনে চা, কফি কম পান করুন। এতে লাভের বদলে ক্ষতি হয়।


৫. কারা জল খাবেন মেপে?​


কিডনির অসুখে ভুক্তভোগীদের জল পান করতে হবে মেপে। এক্ষেত্রে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন। এছাড়া হার্টের বিভিন্ন অসুখেও মেপে জল খেতে হয়। তাই হার্ট ডিজিজে আক্রান্তদেরও জল পান নিয়ে সচেতন হতে বললেন কোয়েল পাল চৌধুরি। আশা করছি এই নিয়ম মেনে চললেই এবারের গরম নিশ্চিন্তে উতরে যেতে পারবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.