স্বর্গের চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর পাতাল! চোখ ঝলসে দেয় হিরে-মুক্তোর ছটা, জানিয়েছেন নারদ

 


ODD বাংলা ডেস্ক: স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল - হিন্দুধর্মে ত্রিলোক বা এই তিন জগতের কথা জানা যায়। স্বর্গ দেবতাদের বাসভূমি, মর্ত্য মানুষ ও পাতাল রাক্ষস বা অসুরদের বিচরণক্ষেত্র। মাটির নীচে অনেক গভীরে রয়েছে এই পাতাল লোক। শাস্ত্র অনুসারে দানব, রাক্ষস ও নাগেরা পাতালে বাস করে। মর্ত্য কেমন সে তো আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি। কিন্তু স্বর্গ ও পাতাল সম্পর্কে আদিকাল কৌতুহল রয়েছে মানুষের মনে। সাধারণ ভাবে মনে করা হয় দেবতাদের বাসভূমি স্বর্গ অত্যন্ত সুন্দর স্থান। সেই কারণে মর্ত্যের সুন্দর স্থানকে স্বর্গের সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু দেবর্ষি নারদের বর্ণনা অনুসারে পাতাল লোকের সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্য স্বর্গকে অনায়াসে হারিয়ে দেয়। জেনে নিন বিষ্ণু পুরাণে নারদের বর্ণনায় পাতাল লোক সম্পর্কে কী জানা যায়।


দেবর্ষি নারদ বলেছেন যে পাতালের সৌন্দর্য ও জাঁকজমক স্বর্গের থেকে অনেক বেশি। সেখানে সূর্য, চন্দ্র নেই বটে, কিন্তু তা বলে মোটেও অন্ধকার নয় পাতাল লোক। সেখানে সোনা, হিরে, মণি, মাণিক্যের ছড়াছড়ি সর্বত্র। এই সব রত্নের দ্যুতিতেই সূর্যের আলোর চেয়েও বেশি উজ্জ্বল পাতাল।


বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে সর্বত্রগামী নারদের একবার পাতালে যাওয়ার ইচ্ছে হয়। নিজের মনের কথা তিনি বিষ্ণুর কাছে প্রকাশ করেন। নারদের মনের ইচ্ছে পূরণ করতে তাঁকে পাতালে প্রেরণ করেন বিষ্ণু। কিছুদিন পর তিনি স্বর্গে ফিরে এলে অন্য দেবতারা তাঁর কাছে পাতাল লোক সম্পর্কে জানতে চান। নারদ তাঁদের বলেন যে স্বর্গের চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর ও ঐশ্বর্যশালী পাতাল। অজস্র মণিমুক্তোর ছটায় তা সব সময় ঝকমক করছে। সেই কারণে চাঁদ সূর্যের আলোর কোনও দরকারই নেই পাতালে।



সেখানে অসাধারণ সুন্দর সব বাগান, হৃদ ও নদী আছে। পাতালে সব সময়ই আলো, তাই আলাদা করে দিন ও রাত এখানে হয় না। সময় যেন থমকে আছে মাটির নীচের এই জগতে। কোনও কিছুর ভয় ও কষ্ট সেখানে নেই। পাতালে মহাসুখে বাস করে অসুর, রাক্ষস ও নাগেরা। দেবর্ষি নার


বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে মাটিরে নীচের পাতালে সাতটি জগত্‍ আছে। এগুলি হল - অতল লোক, বিতাল লোক, সুতল লোক, তালাতল লোক, মহাতল লোক, রসাতল লোক এবং পাতাল লোক। এছাড়া আছে পিতৃলোক ও নরক।


অতল লোক: এর রাজা হল মায়া রাক্ষসের পুত্র অসুর বাল। এই জগতে ৯৬ রকমের মায়ার সৃষ্টি করা আছে বলে প্রচলিত বিশ্বাস।


বিতাল লোক: শংকর হটকেশ্বর মহাদেব এই লোকে বাস করেন। এখানে হাটকি নামে একটি সুন্দর নদী আছে।


সুতল লোক: রাজা বলিকে বামন অবতার রূপে বধ করে এই লোকের রাজা বানিয়ে দেন বিষ্ণু। প্রতি বছর ওনামের সময় এই লোক থেকেই নাকি উঠে আসেন তিনি।


তালাতল লোক: দানবরাজ মায়া এই লোকের রাজা। তিনি হলেন দানবদের ইঞ্জিনিয়ার।


মহাতল লোক: এটি নাগেদের রাজ্য। এখানে তক্ষক, কালিয়, কাহুক এবং সুষেণের মতো প্রধান নাগেরা বাস করেন।


রসাতল লোক: এখানে অসুরদের বাস। দেবতাদের সঙ্গে তাদের চিরকালের শত্রুতা।


পাতাল লোক: এই জগত্‍ স্বর্গের চেয়েও সুন্দর বলে নিজের বর্ণনায় জানিয়েছেন নারদ। এই লোকের রাজা হলেন বাসুকী নাগ। শঙ্খচূড়, ধনঞ্জয়, দেবদত্ত, কুলিকের মতো সাপেরা এখানে বাস করে।


পিতৃলোক: এখানে আমাদের প্রয়াত পূর্বপুরুষদের বাস, যাদের আমরা পিত্রুদেবতা বলে থাকি।


নরক: এই জগতের রাজা হলেন সূর্যদেবের পুত্র যমরাজ। এখানে চিত্রগুপ্তের সঙ্গে বসে পাপ পূণ্যের বিচার করেন তিনি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.