বাস্তু মেনে বাড়িতে রাখুন এই ১৫টি জিনিস, দূর হবে প্রেত-ভয়
ODD বাংলা ডেস্ক: বাস্তু শাস্ত্রের উপায় মেনে তা করাও সম্ভব। বাস্তুর বিভিন্ন উপায় মেনে চললে পরিবারে নেতিবাচক শক্তির প্রভাব দূর করা যায়। শাস্ত্রে, অগ্নি, জল, বায়ু, পৃথিবী ও আকাশ এই পাঁচটি তত্বের গুরুত্ব স্বীকার করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকটির একটি নির্দিষ্ট শক্তি রয়েছে, যা আমাদের জীবনে সৌভাগ্য, স্বাস্থ্য ও সম্পদের সঞ্চার করতে পারে।
এখানে এমন কয়েকটি বাস্তু শাস্ত্র সম্মত বস্তুর উল্লেখ করা হল, যা এই পাঁচটি তত্বের শক্তিকে আকৃষ্ট করতে পারে।
১. বাঁশ
বাড়িতে বাঁশ গাছ লাগালে এর চারপাশে লাল ফিতে বেঁধে দিন। বাঁশ গাছ কাঠ এবং লাল ফিতে অগ্নির প্রতীক। যে কোনও দিকে এই গাছটি রাখতে পারেন। তবে পূর্ব দিকে এটি রাখলে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যোন্নতি ঘটে এবং সৌভাগ্যের আগমন হয়।
২. বুদ্ধ
বুদ্ধ বা লাফিং বুদ্ধর মূর্তি বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাখলে সৌভাগ্য, শান্তি, সাফল্য ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা যায়। বাজারে নানান ধরনের মুদ্রার বুদ্ধ মূর্তি পাওয়া যায়। এই প্রতিটি মুদ্রার একটি পৃথক মাহাত্ম্য রয়েছে।
৩. সাদা সেজ
বাস্তু মতে বাড়িতে সাদা সেজ পোড়ালে তৎক্ষণাৎ নেতিবাচক শক্তি দূর হয়। এর পাশাপাশি পোড়া সেজপাতার গন্ধে ব্যাক্টিরিয়া ও জীবাণু দূর করা যায়। বাতাস শুদ্ধ হয়।
৪. কচ্ছপ
চিনা ফেঙ্গশুই শাস্ত্রে কচ্ছপের আংটি পড়ার উল্লেখ পাওয়া যায়। মনে করা হয় এর ফলে ব্যক্তি দীর্ঘায়ু লাভ করে ও বাড়িকে ইতিবাচর শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও কচ্ছপের মূর্তিও রাখা যায়। বুধবার ও শুক্রবার বাড়িতে কচ্ছপের মূর্তি এনে রখুন। ধাতুর কচ্ছপ রাখবেন উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে। কাঠের কচ্ছপ পূর্ব ও উত্তর-পূর্বে, দক্ষিণ-পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিকে রাখতে হয় ক্রিস্টালের কচ্ছপ। পাথরের কচ্ছপ রাখার উপযুক্ত স্থান পশ্চিম দিক।
৫. ড্রিমক্যাচার
এটি সাধারণত বাচ্চাদের বিছানার ওপর লাগানো হয়, যাতে কোনও দুঃস্বপ্ন তাঁদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে না-পারে। বাস্তু মতে ড্রিমক্যাচারের মাকড়সার জালের মতো গঠন তার মধ্যে দিয়ে শুধু ভালো স্বপ্নই প্রবেশ করে, যা এতে ঝোলানো পালকের মধ্যে দিয়ে শিশুর কাছে পৌঁছয়। বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে এটি লাগাতে পারেন।
৬. জলের ফোয়ারা
বাস্তু মতে, বাড়িতে জলের ফোয়ারা রাখাও শুভ। বাড়ির উত্তর দিকে এই ফোয়ারা রাখা উচিত। তবে ভুলেও দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব বা পশ্চিম দিকে এই ফোয়ারা রাখবেন না। উৎকৃষ্ট ফলাফল লাভের জন্য ফোয়ারার সঙ্গে বুদ্ধর স্ট্যাচুও রাখতে পারেন। তবে ফোয়ারা রাখা সম্ভব না-হলে জলের ফোয়ারার পেন্টিং রাখতে পারেন। এই প্রবাহিত জল ইতিবাচক শক্তিকে আকৃষ্ট করে।
৭. সল্ট ল্যাম্প
নুন-জলে স্নান করলে যেমন শরীর ডিটক্স হয়, তেমনই গোলাপী হিমালয়ান সল্ট ল্যাম্পে চারপাশের পরিবেশ ডিটক্স করে। হিমালয়ান নুনের একটি পাথরের ভিতরের অংশ ফাঁপা করে তাতে বাল্ব ফিট করা থাকে। বাড়িতে এই ল্যাম্প রাখলে মন ভালো থাকবে পাশাপাশি মেজাজ ভালো রেখে পর্যাপ্ত ঘুমেও সাহায্য করবে।
৮. অ্যাকর্ন
প্রাচীনকাল থেকে এই অ্যাকর্নকে সর্বাধিক সৌভাগ্যশালী সম্পদ মনে করা হয়ে আসছে। একটি পাত্রে অনেকগুলি অ্যাকর্ন রেখে টেবিলে সাজিয়ে রাখতে পারেন।
৯. ক্রিস্টাল
শয়নকক্ষে ক্রিস্টাল রাখলে সৌভাগ্য বৃদ্ধি হয়। এ ছাড়াও বাড়ির বিভিন্ন স্থানে এটি রাখা যায়। যেমন কার্নেলিয়ান ও অ্যাপেটাইট ক্রিস্টাল রান্নাঘরে রাখা উচিত, এটি সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে। অ্যাজুরাইট ও পাইরাইট ক্রিস্টাল সম্পদ ও একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। ভালোবাসার জন্য বাড়িতে গোলাপ কোয়ার্টজ নামক ক্রিস্টাল রাখতে পারেন। আবার বাড়িতে ৯টি কার্নেলিয়ান ক্রিস্টাল রাখলে মুক্তমনস্কতা বৃদ্ধি পায়।
১০. ঘোড়ার নাল
বাস্তু শাস্ত্রে ঘোড়ান নালকেও শুভ মনে করা হয়। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী প্রবেশদ্বারে এটি লাগালে বাড়িতে অশুভ শক্তি প্রবেশ করতে পারে না।
১১. মাছ
বাস্তুতে মাছকেও অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। মাছ প্রতিক্ষণ সচল থাকে। তাদের গতি ও চলাচল সম্পদের শুভ শক্তিকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। বাড়িতে ড্র্যাগন ফিশ রাখা সবচেয়ে শুভ। বৈঠকখানার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অ্যাকোয়েরিয়াম রাখবেন। শয়নকক্ষে রাখতে হলে উত্তর দিক শুভ।
১২. ধূপ
প্রাচীনকাল থেকে দেবালয় ও বাড়ির ঠাকুরঘরে ধূপকাঠির ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী ধূপকাঠির ধোঁয়া সমস্ত ধরনের নেতিবাচক শক্তি দূর করে।
১৩. হাতি
বাস্তু শাস্ত্রে হাতিকে শক্তি, ভদ্রতা, আনন্দ, বুদ্ধি, জ্ঞান ও সমৃদ্ধির প্রতীক মনে করা হয়। বাড়ির প্রবেশদ্বারে পাথরের জোড়া হাতির মূর্তি রাখলে শুভ ফলাফল লাভ করা যায়।
১৪. গাছ
ইতিবাচক শক্তি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখতে বাড়িতে গাছ রাখা যায়। বাস্তু শাস্ত্রে এমন বিভিন্ন ধরনের গাছের নাম পাওয়া যায়, যা নির্দিষ্ট দিকে রাখলে ইতিবাচক শক্তির প্রভাব-প্রসার বৃদ্ধি পায়।
১৫. টাটকা ফুল
টাটকা ফুল বাড়িতে ইতিবাচক শক্তির প্রভাব বৃদ্ধি করে। বাড়িতে রাখার জন্য এটি অন্যতম শুভ জিনিস।
Post a Comment