গাধা কি সত্যিই বোকা?
ODD বাংলা ডেস্ক: ‘গাধা’ শব্দটা আমরা বেশি ব্যবহার করি নেতিবাচক অর্থে। যাদের বুদ্ধি একটু কম, তাদের হরহামেশাই অনেকে গাধা বলে থাকেন। বোকা অথবা কেউ কোনো কাজ না পারলে আমরা তাকে গাধা বলে থাকি! বোকা অর্থেও গাধা শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তবে, গবেষণা বলছে, গাধা কিন্তু মোটেও বোকা নয়! আর পাঁচটা প্রাণীর চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান।
গাধার রয়েছে অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তি। ২৫ বছর আগে দেখা এলাকা, এমনকি বহু বছর আগে দেখা গাধাদের তারা সহজেই চিনতে পারে। পাশাপাশি, গাধা প্রচণ্ড জেদি, আত্মরক্ষা করার প্রবল ক্ষমতা রাখে। গাধাকে ভয় দেখিয়ে বা জোর করে কোনো কাজ করিয়ে নেয়া খুব কঠিন ব্যাপার।
কোনো ঘটনায় গাধা সহজে চমকে ওঠে না। এরা প্রখর কৌতূহলী। গাধার চিন্তাধারা ঘোড়ার থেকে স্বাধীন। একটি গাধা মরু পরিবেশে ৬০ মাইল দূরে থেকে অন্য গাধার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। ঘোড়ার থেকে তাদের আছে অনেক বড় কান, যা তাদের শরীর শীতল রাখে। গাধা নেকড়ে, বাঘ বা অন্য বন্য জন্তুদের হাত থেকে বাকি পশুদের রক্ষা করে বিশেষ সংকেত দিয়ে। গাধা গবাদি পশু, ভেড়া এবং ছাগলকে পাহারা দেয়।
আধুনিক গাধার দুটি পূর্বপুরুষ আছে। উভয়ই আফ্রিকান বন্য গাধার উপ-প্রজাতি এবং এগুলো হলো সোমালি বন্য গাধা ও নুবিয়ান বন্য গাধা। জানা যায়, গাধা কয়েক শতাব্দী ধরে মানুষের জন্য কাজ করছে। মানুষের প্রয়োজনে ধারাবাহিকভাবে সারা বিশ্বে গাধা ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণীটি। তারা দীর্ঘপথ ভ্রমণ করতে পারে। তারা শক্তিশালী এবং কঠোর পরিস্থিতিতেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।
এই প্রাণীটি কাজ থেকে পিছপা হয় না। তারা মাইলের পর মাইল কার্গো টানতে সক্ষম। আর সেখান থেকে গাধা টানার গাড়িগুলোর ধারণা আসে। তারা অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় বেশি সময় পরিশ্রম করতে পারে। তাদের চলার গতি ঘণ্টায় ৩১ মাইল পর্যন্ত হতে পারে। গাধার গড় আয়ু ৫০ থেকে ৫৪ বছরের মধ্যে হয়।
মিশরে ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যগুলির অধিকাংশ ধাতু বহন করা হয়েছিল গাধার মাধ্যমে। গ্রিসে সংকীর্ণ পথের ওপর কাজ করার জন্যও গাধা ব্যবহার করা হয়। রোমান আর্মিরা গাধাকে কৃষি পালিত ও পণ্য বহনকারী প্রাণী হিসেবে ব্যবহার করতো।
গাধার সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। এরপরও দেশটি গাধা আমদানি করে। সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তান বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। চীনে গাধার চাহিদা এতই বেশি যে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, একসময় চীন থেকে গাধা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এমনকি দেশটির কারণে সারা বিশ্বের গাধার সংখ্যাও কমে যেতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।
Post a Comment