কেন আমি নতুন গাড়ি কিনি না: ওয়ারেন বাফেট

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বিলিয়নেয়ার ওয়ারেন বাফেট ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য খুবই কম দামে গাড়ি কিনে থাকেন। এক্ষেত্রে সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ কিংবা পুরনো হয়ে যাওয়া গাড়ি কিনে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী মেরামত করে নেন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এ ধনকুবের। খবর নিউ ট্রেডারের। 


সম্প্রতি বিবিসির এক ডকুমেন্টরিতে বাফেটের গাড়ি সম্পর্কিত ভাবনা নিয়ে এমন চমকপ্রদ সব তথ্য জানিয়েছেন মেয়ে সুসি বাফেট। তবে শুধু গাড়িই ক্ষেত্রেই নয়; ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনেক বেশি মিতব্যায়ী তিনি।


গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে কখনই দোকানের চড়া দামে নতুন গাড়ি কেনেন না বাফেট। এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম সময় ব্যবহার করা গাড়ি শিলাবৃষ্টির মতো কোন দুর্যোগ কিংবা দুর্ঘটনার ফলে অল্প ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেটি বাজারের দামের চেয়ে অনেকটা কম দামে কিনে নেন তিনি।  


বাফেটের কাছে সময়ের মূল্য অনেক। তাই নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি কিনতেও নিজের সময় অপচয় করেন না তিনি। বরং মেয়ে সুসিই বাবার হয়ে গাড়ি কেনা-বেচার বিষয়টি দেখে থাকেন।


এমনকি ব্যক্তিগত গাড়ি পুরনো হওয়া নিয়েও মাথাব্যাথা নেই বাফেটের। গাড়ি কতো পুরনো হয়েছে, কবে পুরনো গাড়ি পরিবর্তন করে নতুন গাড়ি নিতে হবে, সেগুলো তদারকি করেন মেয়ে সুসি।


একটি গাড়ি কিনে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেন ১১৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক বাফেট। পরিবারের পক্ষ থেকে সদিচ্ছা দেখানো না হলে এক গাড়ি দিয়েও জীবন পার করে দিতে সমস্যা নেই মার্কিন এ বিজনেস টাইকুনের।


গাড়ির ক্ষেত্রে ডিজাইন কিংবা আরামের ব্যাপারটি নিয়ে অতটা ভাবেন না বাফেট। বরং আত্মরক্ষা ও চালানোর ক্ষেত্রে সহজ ফিচারের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তিনি। এক্ষেত্রে সবদিক বিবেচনায় ক্যাডিলাক ব্র্যান্ডের গাড়িই তার পছন্দের শীর্ষে।


বাফেট গাড়িকে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে নয়, বরং নিজের প্রয়োজন মেটানোর পণ্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। দামি দামি পণ্য কিনলেই সুখী হওয়া যায়; এমনটি বিশ্বাস করেন না তিনি। বরং অতিরিক্ত পণ্য কিনলে জীবনে জটিলতা বেড়ে যায় বলে মনে করেন বাফেট।   


গাড়ি সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করতে যেয়ে বাফেট বলেন, "গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সেটি যথেষ্ট ভারী কি-না কিংবা উভয় পাশে এয়ারব্যাগ আছে কি-না সেটা আমি বিবেচনা করি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বড় ভারী ট্রাকের পাশ দিয়ে গাড়িতে চলাচল করতেও অনেকটা নিরাপদ বোধ করবো।"


বাফেট আরও বলেন, "আমি অযথা কাজে সময় নষ্ট করতে চাই না। গাড়ি কিনতে যেয়ে সময় অপচয় করার মানে নেই। আমি আমার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে খুশি আছি।"


মার্কিন বিলিয়নেয়ার চার্লি মাঙ্গার বলেন, "ব্যক্তিগত জীবনে বাফেট খুবই মিতব্যায়ী। তিনি ১৯৫০ সালে কেনা বাড়িতেই এখনো থাকেন।"


নিজের জীবনে মিতব্যায়ী দর্শন সম্পর্কে বাফেট বলেন, "আমার ছয়টা থেকে আটটা বাড়ি থাকলেই যে আমি বেশি সুখী থাকতাম; বিষয়টা এমন নয়। বরং এক্ষেত্রে অসুখী থাকার সম্ভবনাই বেশি। এমন অনেক কিছুই আমি কিনতে পারতাম, তবে প্রয়োজন মনে করিনি। দরকারি সবকিছুই আমার আছে। এরচেয়ে বেশি দরকার নেই।"


চলতি বছরের জানুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, বাফেট বর্তমানে ২০১৪ সালের ক্যাডিলাক এক্সটিএস মডেলের গাড়িটি ব্যবহার করছেন। বিশ্বের অন্যতম ধনী হয়েও খুবই সাধারণ মানের গাড়িটি ব্যবহারই প্রমাণ করে বাফেটের ব্যক্তিগত জীবনযাপন কতটা সাদামাটা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.