সহকর্মীর সঙ্গে যা করবেন, যা করবেন না
ODD বাংলা ডেস্ক: ক্যারিয়ার গ্রাফের উন্নতি করতে হলে শুধু দক্ষতা এবং কাজের মানই যথেষ্ট নয়। প্রতিষ্ঠান যেহেতু একটি কাঠামো এবং শেষতক মানুষই এখানে একত্রিত হয় তাই ব্যক্তিত্বের একটা স্বাভাবিকত্বও এখানে আছে। তাই কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর সঙ্গে আচার-ব্যবহারের দিকেও সতর্ক থাকতে হয়। এই সতর্কতা ব্যতীত আপনি চাকরিক্ষেত্রে নিজের নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পারবেন না৷ অনেক সময় দেখা যায় কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ আপনার ব্যক্তিগত জীবনকেও প্রভাবিত করে।
কিন্তু কর্মক্ষেত্রে কেমন হবে অন্যান্য কলিগদের সঙ্গে আপনার ব্যবহার? সেটাও জানা জরুরি। রইলো কিছু পরামর্শ:
নিজের কাজের কথা ভাবুন তবে অসামাজিক হবেন না
চাকরিতে নতুন ঢুকেছেন। প্রতিষ্ঠানটিও নতুন হতে পারে৷ এসময় আপনার মাথায় থাকবে নিজেকে প্রমাণ করার৷ কিন্তু কাজ তো আর একা একা হয় না। অন্যদের সঙ্গে নিজের সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। একটা দল হয়ে কাজ করতে হয়৷ অনেকে মনে করেন নিজের কাজ নিয়েই থাকবো। এভাবে তারা অসামাজিক হয়ে থাকেন। তখন দেখা যায় অন্যরা জরুরি কাজ বাদে সচরাচর আপনাকে ঘাঁটান না। কিন্তু আপনার ক্যারিয়ারের উন্নতির জন্য ভালো নয়৷ সেজন্য সবার সঙ্গেই ভাব জমান। সামাজিক সৌজন্যটুকু রাখুন। সবার সঙ্গেই হাসিমুখে থাকুন৷ টুকিটাকি খোঁজ নিন। নিজেকে পরিচিত করুন সবার কাছে।
সংযত সুরে কথা বলুন
আপনি আমুদে। আপনি বদরাগী৷ আবার আপনি ভীষণ চুপচাপ। আপনার চরিত্রে যেকোনো বৈশিষ্ট্যই থাকতে পারে। তবে অফিসে আপনার স্বকীয়তা না হারিয়েও এমন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধরে রাখা যেতেই পারে৷ ক্লাসরুমের হৈচৈ এর দিন ফেলে অফিসে উচ্চ-সুরে কথা বলবেন না। কারণ কাজের পরিবেশে অনেকের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটলে তারা বিরক্ত হতে পারেন। দূর থেকে অনেকে বিরক্ত হন আসল ঘটনা না বুঝে। এটা ভালো নয়। কেউ যেন আপনাকে ভুল না বোঝে।
কারো সঙ্গে মন দেওয়ার বিষয়ে
অফিসে কাউকে ভালো লাগতেই পারে৷ সেটা পরিণয়েও যেতে পারে। কিন্তু যদি একেবারেই আপনাদের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা না থাকে তাহলে এমন সম্পর্ক পরিণত হওয়ার আগেই খোলাসা হয়ে যাওয়া ভালো। যে সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোনো রূপ নেয় না সেটিকে লালনের মাধ্যমে সমস্যাই বাড়ে।
কোরাম যেন না হয়
অফিসে পক্ষপাতিত্ব বা কোরাম হওয়াটা একেবারে অস্বাভাবিক না। তবে এমনটা সচরাচর অফিসের পরিবেশে বোঝা যায় না। তবে প্রায় সব অফিসেই এমন কোরাম থাকে। তাও একাধিক৷ এমন কিছুতে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথম পরামর্শটি মনে আছে? আপনি আপনার নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। এই কাজের বাইরে অন্য কিছু নিয়ে ভাববেন না। কলিগরা যদি আপনার কাজের আওতায় কিছু সাহায্য চায়, অবশ্যই করবেন। তবে কারো খুঁত খুঁজে নালিশের খোজ করবেন না। এটাও দীর্ঘমেয়াদে ক্যারিয়ার গ্রাফের জন্য ক্ষতি।
মনোমালিন্য হলে মিটমাট, নালিশে বরবাদ
অফিসে অনেক সময় কলিগের সঙ্গে বাজে অভিজ্ঞতা বা মনোমালিন্য হতেই পারে। তবে এই মনোমালিন্যকে পুঁজি করা ঠিক না। যেমনটা বলেছি, অফিসে কোরাম তৈরি হয়। সবাই কোরামে থাকে এমন না। কিন্তু আপনি কস্ট পেলে অন্য অনেকের কাছে বলতে পারেন। অথবা সোজা বসকেই জানালেন। এমনটা করলে নানাদিকেই নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। প্রতিষ্ঠানে সমঝে চলাটাই আখেরে ভালো।
সহযোগিতাই সব
প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতা এই দুইয়ের মধ্যে কোনটিকে ভালো বলবেন? নৈতিকভাবে অনেকে হয়তো সহযোগিতা বলবেন। কিন্তু সবাই মনে মনে প্রতিযোগিতাই বাছবেন। কিন্তু সহযোগিতাই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে ভালো পথ। কারণ আপনার কাছে সব কলিগ যদি নিরাপদ অনুভব করে তারা আপনাকে নিয়ে নালিশ করার সুযোগ পাবে না। ফলে আপনার ট্র্যাক রেকর্ড হবে ভালো৷ সহযোগী হোন। এটা ভালো। দক্ষতা ও ব্যক্তিত্ব থাকলে সবই সম্ভব।
ব্যক্তিগত জীবন অফিসে নয়
অফিসে আপনি যাচ্ছেন জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে। একটি শক্ত ও ভালো ব্যক্তিত্ব নিয়ে যাবেন। সেখানে আপনার ব্যক্তিগত জীবন দেখিয়ে সহানুভূতি আদায় হওয়ার চেষ্টা হয়তো আপনি করেন, কিন্তু অনেকে তাই মনে করে। তাই ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখুন।
অপ্রয়োজনে কাউকে বিরক্ত করবেন না
অফিসের বাইরে কলিগের সঙ্গে অপ্রয়োজনে যোগাযোগ করার প্রয়োজন কম। নিজের ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখার স্বার্থেই করুন এমন কিছু। অযথা তাদের সঙ্গে হুটহাট যোগাযোগে সমস্যা হতেই পারে। দূরত্ব রাখুন।
Post a Comment