'সেরা প্রার্থীকে চাকরির সাক্ষাৎকারে এ কাজটি করতে দেখেছি': গুগলের সাবেক নিয়োগকারী
ODD বাংলা ডেস্ক: প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গুগল এবং ডোরড্যাশ-এর মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিভা অন্বেষণে কাজ করেছেন নোলান চার্চ। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অসংখ্য চাকরির সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। আর এই সাক্ষাৎকারে ভালো করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় কোনটি তা সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি'র সঙ্গে শেয়ার করেছেন তিনি।
চাকরির সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় যে ভুল বা সমস্যাগুলো নোলানের সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে তার একটি হলো- একজন সাক্ষাৎকারদাতা যখন ভান করেন। 'আপনি স্পষ্টই বুঝতে পারবেন তারা একই উত্তরগুলো বারবার রিহার্সাল দিয়ে এসেছে; এবং তারা হয়তো গুণগত মানের চাইতে পরিমাণের ওপর বেশি জোর দেয়। অর্থাৎ তারা অনেক কথা বলে যায়, কিন্তু সেগুলো অর্থবহ নয়", বলেন নোলান।
বর্তমানে কন্টিনাম-এর সিইও হিসেবে কর্মরত নোলান জানান, চাকরির সাক্ষাৎকারে প্রশ্নকর্তাকে খুশি করতে হলে একটি কৌশল সবসময়ই কাজ করে; অন্তত তিনি নিজে এতে বেশ প্রভাবিত হন। "সেরা প্রার্থীদের কাছ থেকে সবসময়ই আমি নিজে কিছু না কিছু শিখি, আর এ ধরনের মানুষের সাথেই আমি কাজ করতে চাই", বলেন তিনি।
'এটা ছিল মাস্টারক্লাসের মতো'
ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম কার্টা'তে কাজ করার সময় প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা পদে একজনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে উদাহরণ দেন নোলান। সেসময় তিনি 'বিজনেস-টু-বিজনেস' (যখন দুটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন করে), সফটওয়্যার-অ্যাজ-আ-সার্ভিস কোম্পানি কিভাবে গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে জানতে খুব আগ্রহী ছিলেন।
নোলান বলেন, "সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ওই চাকরিপ্রার্থী আমাকে যেভাবে বোঝালো যে সে কিভাবে আমাদের ব্যবসাকে একেবারে শূন্য থেকে উপরে উঠিয়ে আনবে সেই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে, তাতে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। যেন আমি এই বিষয়ে একটা মাস্টারক্লাস করে ফেলেছি।"
একজন নিয়োগকারী হিসেবে প্রার্থীর মধ্যে এ ধরনের যোগ্যতাই সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করেন নোলান।
'আমি কি আপনাকে একটা ছোট্ট গল্প বলতে পারি?'
চাকরির সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়ায় সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে যদি আপনি সত্যিই কিছু শেখাতে চান, এক্ষেত্রে 'জোর করার' কোনো প্রয়োজন নেই বলে পরামর্শ দেন নোলান। যদি সেরকম সুযোগ আসে, নিজের মধ্যে সহজাতভাবেই সেই প্রবণতা আসতে দিন...
উদাহরণস্বরূপ, যখন অপরপ্রান্তের ব্যক্তি আপনাকে প্রশ্ন করবেন তখন আপনি এভাবে উত্তর দিতে পারেন: "শেষবার আমি যে পদে দায়িত্ব পালন করেছি সেখান থেকে কি শিখেছি তা নিয়ে কি একটা ছোট্ট গল্প বলতে পারি?" এরপর নিচের কাঠামো মেনে এগোন...
১. প্রথমে গল্পের প্রেক্ষাপট তৈরি করুন।
২. তাকে জানান, ঐ চাকরি থেকে শিক্ষা পাওয়ার আগে সেটা নিয়ে আপনার পূর্ব ধারণা বা অনুমান কেমন ছিল।
৩. আপনি কী শিখেছেন তা ব্যাখ্যা করুন, কিংবা তাকে বোঝান কিভাবে আপনি এক আলাদা অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করেছেন।
৪. এবার তাকে জানান যে কিভাবে পূর্ববর্তী শিক্ষা ও অন্তর্দৃষ্টি আপনি বর্তমান কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারবেন।
নোলানের ভাষ্যে, "সেরা প্রার্থীরা দুই ও তিন নম্বর পয়েন্টে সবচেয়ে ভালো করে। কারণ এ পর্যায়ে তারা বুঝিয়ে দেয় যে কঠোর পরিশ্রম ও কাজের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হয়ে তারা তাদের দক্ষতা আরও শাণিত করতে পারবে এবং তাদের নিরহঙ্কারতাও তখন ফুটে ওঠে।"
Post a Comment