বয়ঃসন্ধিকালে কেন সহজেই নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে 'ওরা', সমস্যা মোকাবেলায় পরামর্শ বিশেষজ্ঞের
ODD বাংলা ডেস্ক: কলকাতা-সহ দেশ জুড়ে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মাদকাসক্তি বাড়ছে। মাদকের কবলে পড়া অপ্রাপ্তবয়স্করা পেশা ও জীবন দুই-এর ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়ছে। তবে অভিভাবকরা যখন বুঝতে পারছেন, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। নেশার প্রবণতা এই বয়সে এতটাই বেড়ে যায় যে, মাদক থেকে রেহাই পেতে নেশা মুক্ত কেন্দ্রের আশ্রয় নিতে হয় পরিবারকে। এর জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতা প্রয়োজন। মাদককে ফ্যাশন মনে করে অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েরা এই মাদকের কবলে পড়ছে। এমন অবস্থায় কী করা উচিত তা জানাচ্ছেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সমীক হাজরা।
ওনার মতে, কিশোরীদের মধ্যে যে সমস্ত প্রলোভন কাজ করে তার মধ্যে সবথেকে মারাত্মক হলো নেশার দ্রব্যের প্রতি আসক্তি। দেখা গিয়েছে বয়ঃসন্ধিকালে নেশার প্রতি আসক্তি তৈরি হলে পরবর্তীকালে তা থেকে বেরিয়ে আসা খুব মুশকিল। সব থেকে আগে এক্ষেত্রে আসবে তামাকজাত পদার্থের কথা। তারপর সুরা এবং তার পর অন্যান্য সাইকোট্রপিক সাবস্টেন্স যাদের এক কথায় ড্রাগস বলা হয়। আসক্তির সূত্রপাত প্রায় সব ক্ষেত্রেই হয় নতুন কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার মধ্যে দিয়ে বা কোনও আইডল কে দেখে।
পরবর্তীকালে মাঝে মধ্যেই নিষিদ্ধ স্বাদ আস্বাদন করার আগ্রহ তৈরি হয় যা অচিরেই প্রাত্যহিক অভ্যাসে পরিণত হয়। অনূর্ধ্ব ১৯ বয়সে যদি সুরাসক্তি গড়ে ওঠে তবে চল্লিশের মধ্যেই মদ্যপ হয়ে যাওয়ার এবং মদ্যপানজনিত স্বাস্থ্যহানির সমস্যা খুব প্রকট। যেখানে অন্তত ২৫ বছর বয়স অবধি যদি নেশার থেকে দূরে থাকা যায় তাহলে আসক্তির সম্ভাবনা অনেক অংশে কমে যায় পরবর্তীকালে। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে নেশার বিবিধ ঋণাত্মক প্রভাব আছে।
বয়ঃসন্ধিকালীন মস্তিষ্ক সহজেই আসক্ত হয়ে পড়তে পারে এবং মস্তিষ্কের বিকাশ সম্পূর্ণভাবে না হওয়ায় আসক্তির থেকে উদ্ভূত অপরাধের জালে জড়িয়ে পড়াও স্বাভাবিক ঘটনা। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নেশার হাত থেকে বাঁচাতে সবার আগে সোচ্চারভাবে নেশাজ দ্রব্যের সমস্ত রকম বিজ্ঞাপনের বিরোধিতা করতে হবে এবং তাদের কাছে এমন রোল মডেল উপস্থাপিত করতে হবে যে নেশার থেকে শত হাত দূরে থাকে।
যদি কোনও কিশোর বা কিশোরী হঠাৎ করে নিজেকে গুটিয়ে ফেলতে থাকে, আচ্ছন্ন হয়ে থাকে, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়তে থাকে অথবা সামাজিক পরিসরে বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে মিশতে না চায়। যদি হঠাৎ করে তার খরচের পরিমাণ বেড়ে যায় তাহলে আমাদের সাবধান হতে হবে। কথা বলতে হবে তাদের সঙ্গে। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।বাবা-মা ,স্কুল, বন্ধুবান্ধব এবং শিশু তথা বয়সন্ধিকালীন রোগ বিশেষজ্ঞরা একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নেশা মুক্তির দিশা দেখাতে পারে।
Post a Comment