বাড়িতে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমাবেন যেভাবে



 ODD বাংলা ডেস্ক: ঘরে পোকামাকড়ের উপদ্রব লেগেই থাকে। রান্নাঘরে খাবারদাবারে, মিষ্টি জাতীয় জিনিসে, ওয়াড্রোর্বের ভিতর জামাকাপড়ে মধ্যে সর্বত্র এদের যাতায়ত দেখা যায়। মশা, মাছি, ইঁদুর, আরশোলা, ঘুনপোকা ঘরের জিনিসপত্র, খাবারদাবার নষ্ট তো করেই, পাশাপাশি হাইজিনের জন্যও এগুলি ক্ষতিকারক। পোকার উপদ্রব থেকে বাঁচতে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি মেনে চলতে পারেন। যেমন-


১. পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে ঘরদোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। যেখানে সেখানে খাবারের টুকরো ছড়িয়ে রাখবেন না। রান্নাঘরে কভারড ডাস্টবিন ব্যবহার করুন। কিচেন সিঙ্ক, স্টোররুম, কাবার্ড বা শেলভ বিশেষভাবে পরিষ্কার রাখুন। কিচেন সিঙ্কের মধ্যে মাঝেমধ্যে গরম জল আর কোনও ডিসইনফেকট্যান্ট ঢেলে পরিষ্কার করুন। অন্ধকার, ভিজে জায়গায় রেডিমেড ইনসেক্ট কিলার স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।


২. চিনির কৌটো, বিস্কুটের কৌটো বা খাবারদাবারে প্রায়ই পিঁপড়ে ধরে যায়। পিঁপড়ের হাত থেকে বাঁচতে প্রথমেই ঘরের ভিতর এদের আগমন বন্ধ করতে হবে।  পিঁপড়ে যেখান দিয়ে ঢুকছে সেখানে কেরোসিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে আউটলাইন করে দিন। দরজা এবং জানলার কাছে বোরাক্স পাউডার দিয়ে রাখুন। পিঁপড়ে ঘরে ঢুকবে না। মাঝেমধ্যে গরম জলে সাবান আর কেরোসিন তেলের মিশ্রণ ফ্লোর ক্লিনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।


৩. ঘরের পাশেই বাগান থাকলে বা ঘরে ড্যাম্প ভাব থাকলে সেখানে পোকার উপদ্রব বেশি হয়। এরকম ক্ষেত্রে দেওয়াল ঘেঁষে খাট রাখবেন না। খাটের পায়ার নীচের অংশের চারদিক মেটাল স্ট্যান্ড লাগিয়ে দিন। সম্ভব না হলে পেট্রোলিয়াম জেলির কোট লাগান। পোকা খাটে উঠতে পারবে না। ফার্নিচারে কোন ফাটল থাকলে হোয়াইট সিমেন্ট দিয়ে ব্লক করে দিন। বিছানার ম্যাট্রেস মাঝে মাঝে পরিষ্কার করে রোদে দিন। তোষকের কোণায় কর্পুরের কিউব দিয়ে রাখুন। পোকার সমস্যা কমবে।


৪. বাড়িতে কার্পেট থাকলে নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ভ্যাকুয়াম ব্যাগ পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। তা না হলে আবার পোকা দেখা দেবে।


৫. অনেকসময় জামাকাপড়, সিল্কের শাড়ির মধ্যে মথের মতো পোকা দেখা যায়। সাধারণ অপরিষ্কার জামাকাপড় স্টোর করলে এই ধরনের পোকা হতে পারে। তাই পোশাক সবসময় পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকিয়ে তারপর ন্যাপথলিন বল দিয়ে ওয়ার্ড্রোবে গুছিয়ে রাখুন। ওয়ার্ড্রোবের ভিতর এই পোকা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সব পোশাক সরিয়ে ফেলুন।


৬. খোলা পাত্রে কাটা সবজি বা ফল রাখবেন না। মাছির সমস্যা হবে। একই কারণে পাকা বা পচে যাওয়া ফল একেবারেই রাখবেন না। সম্ভব হলে ইউভি লাইট ফ্লাই কিলার ব্যবহার করুন।


৭. আপনার যদি অনেক বই থাকে তাহলে বুক শেলফ বানিয়ে নিন। দেওয়াল লাগোয়া তাকেও বই রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, বাইরের দিকের দেওয়াল বা বাগানের সংলগ্ন দেওয়ালের শেলফে বই না রাখাই ভালো। কারণ বাইরের দেওয়াল সংলগ্ন তাকে ড্যাম্প ধরার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এরকম অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় পোকার উপদ্রবও বেশি হয়। বুক শেলফে ন্যাপথলিন বলস এবং নিমপাতা দিয়ে রাখুন।


৯. বাড়ির মধ্যে এক টুকরো বাগান থাকলে সবারই ভাল লাগে। কিন্তু বাগান থাকলে তা পরিষ্কার রাখাও জরুরি। তা না হলে পোকামাকড়ের উপদ্রব আরও বেড়ে যায়। বাগান নিয়মিত পরিষ্কার করুন। শুকনো পাতা, ছাঁটা ডাল বাগানে জড়ো না করে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলুন। ডাস্টবিন অবশ্যই ঢাকা দিয়ে রাখুন এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডাস্টবিন পরিষ্কার করুন। কীটনাশক হিসেবে নিমপাতাগুঁড়ো এবং কাঁচা মরিচের মিশ্রণ ব্যবহার করুন। এগুলো ক্ষতিকারক তো নয়ই, পোকাও দূরে রাখবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.