বিশেষজ্ঞকে ‘পাগলের ডাক্তার’ ভেবে যদি মানসিক ব্যধিগ্রস্ত মানুষ চিকিৎসা করাতে রাজি না হন, তাহলে তাঁকে সাহায্য করবেন কীভাবে?

 


ODD বাংলা ডেস্ক: দিন দিন মানুষের ব্যস্ততা যত বাড়ছে, ততটাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মনের চাপ এবং অসুস্থতা। অল্প চাপেই রাগে ফেটে পড়া, ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা অথবা নিজের ওপর অত্যাচার করে যাওয়ার মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলে কিছু মানুষের মধ্যে, যাঁরা একেবারেই মনরোগ বিশেষজ্ঞদের স্মরণাপন্ন হতে চান না। এইসমস্ত মানুষ যদি আমাদের আশেপাশে থাকেন, তাহলে আমরা নিজেরাই তাঁদের বেশ কিছুটা সাহায্য করতে পারি।


১) মানসিক চাপে থাকা ব্যক্তিদের সাথে কথা বলা উচিত ভীষণ খোলামেলা মন নিয়ে। তাঁরা নিজেদের জীবনে যা-কিছু করছেন, তার ভালো-মন্দ বিচার না করেই তাঁদের সমস্ত কথা চুপ করে শোনা দরকার। মনে রাখতে হবে, নিজের ভেতরের কথা সহজভাবে প্রকাশ করতে না পারাটাই আচমকা রেগে ফেটে পড়ার একটা অন্যতম প্রধান কারণ।


২) মানসিক অসুস্থ মানুষদের নিজস্ব গতিতে আলোচনা করতে দিন। কখনও এমন কিছু বলার জন্য চাপ দেবেন না, যে বিষয়ে তাঁরা কথা বলতে চান না। মনে রাখবেন, কথা বলা শুরু করার জন্য অনেক আস্থা ও সাহস দরকার হয়। আপনিই হয়তো তাঁর জীবনে সেই প্রথম ব্যক্তি, যাঁর সাথে তাঁরা এই বিষয়ে কথা শুরু করতে পেরেছেন।


৩) গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট! যদি আপনি একজন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ না হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের অনুভূতি কী, সেটা আপনি নিজে থেকে অনুমান করার চেষ্টা করবেন না। একজন সাধারণ মানুষের মতো কথা বলুন।


৪) ‘আমি জানি তুমি কী অনুভব করছ’, এই কথাটা কখনও বলবেন না। নিরপেক্ষ থাকুন। যিনি কথা বলছেন, তাঁকেই বলতে দিন যে, তিনি কী অনুভব করছেন। আশ্বাস দিন, ‘তুমি আমাকে বলতে পারো যে, তুমি এখন কী অনুভব করছ।’ অনেক ধরনের প্রশ্ন করে তাঁদের ছেঁকে ধরবেন না।


৫) মনে রাখবেন, মানসিক রোগীরা নিজের যত্ন নিতে ভুলে যায়। তাঁদের নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন, সেই উপায়গুলি নিয়ে আলোচনা করুন এবং তাঁরা আপনার আলোচনাকে সহায়ক বলে মনে করছেন কিনা, সেটা জিজ্ঞাসা করুন। ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং রাতে ভালোভাবে ঘুমনো, এগুলো মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করতে এবং সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।


৬) মানসিক অসুস্থ মানুষরা আপনাকে যে যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলো মনোযোগ সহকারে শুনুন। যদি আপনার মনোযোগ নিয়ে তাঁদের মধ্যে সংশয় থেকে থাকে, তাহলে তাঁরা এতক্ষণ ধরে যা যা বলেছেন, সেগুলো তাঁদের মনে করিয়ে দিন। তাঁরা যা বলছেন, সেগুলোর সাথে আপনি একমত না-ও হতে পারেন, কিন্তু, তর্ক করবেন না। মনে রাখবেন, তাঁরা কেমন অনুভব করছেন, সেটা আপনি বোঝার চেষ্টা করলে তাঁরা এটুকু বুঝবেন যে, আপনি তাঁদের অনুভূতিকে সম্মান করেন।


৭) মনোবিদের সহায়তা নেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে সাহায্যের প্রস্তাব দিন, কীভাবে তাঁরা এটা করতে পারেন, সেই উপায় সম্পর্কে যথাযথ তথ্য দিন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবেন না। নিজেকেই নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাহায্য এবং উৎসাহ দিন। তাঁরা রাজি না হলে তাঁদের জিজ্ঞেস করুন যে, তাঁরা নিজেদের চাপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কীভাবে চেষ্টা করছেন।


৮) কোনও ব্যক্তি যদি রাগের বশে নিজেকে আঘাত করে ফেলেন, তাহলে তাঁর শারীরিক চিকিৎসা করান। তাঁকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করুন।


৯) আপনি যে মানসিক চাপে থাকা মানুষকে সহায়তা দিনে পারেন, তার ওপরে নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা রাখুন। নিজেকেও বিশ্রাম নেওয়ার সময় দিন এবং তাঁরা আপনাকে যা যা বলেছেন, সেগুলো মাথার মধ্যে রেখে সাহায্য করার উপায় খুঁজতে থাকুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.