বৃষ্টিতে ভিজার উপকারীতা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ভয়াবহ তাপদাহ। তীব্র গরমে প্রাণিজগতে নাভিশ্বাস উঠছে। মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। রাজধানী ঢাকায়ও গরমে অস্বস্তি উঠেছে চরমে। বৃষ্টির প্রতিক্ষায় ছিল নগরবাসী। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর এমন বৃষ্টি, আহ্!

এমন সময় অনেকে শখের বশে বৃষ্টিতে ভিজেন, আবার অনেকে কর্মক্ষেত্রে যেতে গিয়ে কিংবা পথচলতি অবস্থায় ভিজে যান বৃষ্টিতে। তবে সে যে করণেই আপনি বৃষ্টিতে ভিজেন না কেন, ভেজার পর আনন্দ অনুভূত হয়।


তবে অনেকেই ভাবেন বৃষ্টিতে ভিজলে সর্দি-জ্বর হতে পারে। জানলে অবাক হবেন, ক্ষতি নয় বরং বৃষ্টিতে ভিজলে বেশকিছু উপকার হয়। চলুন তবে জেনে নিই বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরে কী কী উপকার হয়-


স্বাস্থ্যকর চুল: বৃষ্টির জলে প্রাকৃতিকভাবে অ্যালকালাইন থাকে, যা চুলের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। এটি চুলের গোড়া থেকে সব ময়লা ও খুশকি দূর করে। তাই নিয়মিত বৃষ্টির জলে স্নান করলে রুক্ষ চুল অনেক বেশি স্বাস্থ্যজ্বল হয় ও চকচকে দেখায়। তবে বৃষ্টিতে ভেজার পর ভালোমতো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি নিমজাতীয় শ্যাম্পু বা সাবান ব্যবহার করেন।


ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে: ভারি বর্ষণের সময় পরিবেশে যে জলীয় বাষ্প থাকে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কেবল তাই নয়, বৃষ্টির পর জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশে থাকা একাধিক ক্ষতিকর জীবাণুর কর্মক্ষমতাও কমে যায়। ফলে ত্বক হয় আরো উজ্জ্বল ও নমনীয়। ত্বকের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরে পেতে বৃষ্টি দারুণ কাজ করে।


ভিটামিন বি-১২: বৃষ্টির জল খুব হালকা এবং অ্যালকালাইন পিএইচ সমৃদ্ধ। বৃষ্টির জলের মধ্যে কিছু অণুজীব থাকে যারা তাদের বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন বি-১২ তৈরি করে। সুতরাং আপনার যদি ভিটামিনের অভাব থাকে; তাহলে নিয়মিত ১০-১৫ মিনিট বৃষ্টিতে ভিজতে পারেন। তবে বৃষ্টিতে ভেজার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোমতো স্নান করে নিতে হবে।


দেহের টক্সিন উপাদান দূর করে: বৃষ্টির জল পান করলে শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। এটি রক্তের পিএইচ লেভেলকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে স্বাভাবিকের ঘরে। ফলে শরীরে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমে যায় এবং রোগের প্রকোপ কমে আসে।


শ্বাস-প্রক্রিয়া উন্নত করে: বৃষ্টির সময় হাওয়া-বাতাস বিশুদ্ধ থাকে। তাই এ সময়ে দেহে প্রবেশ করা বায়ু আমাদের শ্বাসপ্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে দূর হয় শরীরে অবস্থান করা বাজে টক্সিন।


কানের সমস্যার সমাধান: বৃষ্টিতে ভিজলে কানের সব ধরনের সমস্যা দূর হয়। কান ব্যথা বা ইনফেকশন সারানোর ক্ষেত্রে বৃষ্টির জল বেশ উপকারী। তবে মাত্রাতিরিক্ত ভিজলে বা বাতাস থাকলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। ১০-১৫ মিনিটের বেশি ভেজা উচিত নয়। ভেজার পরপরই হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করে ফেলতে হবে।


মানসিক অবসাদ কমায়: বৃষ্টির সময় মাটির যে গন্ধ বের হয় তার ঘ্রাণ কখনো নাকে এসেছে? এই গন্ধ যতটা পারেন মন-প্রাণ ভরে শরীরের ভেতর নিন, দেখবেন মন আপনাআপনিই ভালো হয়ে যাবে। গবেষকদের ভাষায় এ গন্ধকে বলা হয় ‘পেট্রিকোর’। বৃষ্টি পড়লে মটিতে উপস্থিত একধরনের ব্যাকটেরিয়া বিশেষ এক ধরনের কেমিক্যাল ছড়ায়। যার ফলে এমন সোঁদা গন্ধ বেরোতে শুরু করে। আর এ গন্ধ মানসিক অবসাদ দূর করতে বেশ সহায়ক।


হরমোনের ভারসাম্য: অনেকেই হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় ভুগে থাকেন। এ সমস্যারও সমাধান পাবেন নিয়মিত বৃষ্টিতে ভিজলে।


চুলকানির সমাধান: বর্ষা মৌসুমে অনেকেই চর্মরোগে ভুগে থাকেন। ত্বকের বিভিন্ন ফুসকুড়ি ও চুলকানির সমাধান আছে বৃষ্টির জলে। বৃষ্টির জলে ভিজলে বা নিয়মিত স্নান করলে চুলকানি ও ত্বকের খসখসে ভাব চলে যায়। একইসঙ্গে শরীরও ঠান্ডা হয়ে যায়।


মন খুশি হয়: বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরে এন্ডোরফিন ও সেরাটোনিন নামক হরমোনোর ক্ষরণ হয়, যা আমাদের আনন্দের অনুভূতি দেয়। এ কারণে বৃষ্টিতে ভিজলে সব দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই সুযোগ পেলেই ঝুম বৃষ্টিতে ভিজতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.