ধূমপান ছাড়ার কার্যকরী কিছু সহজ পদ্ধতি



 ODD বাংলা ডেস্ক: ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এ সম্পর্কে জানে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ সিগারেটের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ’। তারপরও অনেকেই দেদারছে ধূমপান করছে তো করছে...!!!

ধূমপান করলে যে কেবল শুধু ধূমপায়ীর ক্ষতি হয় তাই নয় বরং তার আশপাশে থাকা লোকজনেরও ক্ষতি হয় সমানভাবে। সিগারেটে ৫৭টি মারাত্মক রাসায়নিক উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তেমনি একটি হলো নিকোটিন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দুটি সিগারেট এ যে পরিমাণ নিকোটিন আছে তা যদি একটি সুস্থ মানুষ এর দেহে ইঞ্জেক্ট করে দেয় তাহলে সে মানুষটি তখনি মারা যাবে। ধূমপানের অভ্যাস থেকে দূরে থাকুন।


কোনো ব্যক্তি যদি সারাদিনে ১টি মাত্র সিগারেটও খান, তাহলেও তার মধ্যে হৃদরোগের হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেই ব্যক্তির মধ্যে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক এবং ফুসফুসের ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু তার পরও এই বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে পারেন না অনেকেই।


বিশেষজ্ঞরা জানান, ধুমপান এমন একটা অভ্যাস, যা একবার শুরু করলে, ছাড়া মুশকিল হয় কিন্তু অসম্ভব নয়। তারপরও তারা জানাচ্ছেন, যেকোনো অভ্যাসই যদি মানুষ মনে করে ত্যাগ করবে, তাহলে তা ত্যাগ করা সম্ভব। তার জন্য কিছু সহজ পদ্ধতি মেনে চলা প্রয়োজন।


অধিংকাংশ লোক সিগারেটের কুফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। অনেকে এমনও আছেন, যারা ধূমপান মন থেকে ছাড়তে চান। তবু পেরে ওঠেন না। অফিসে কোনো রকম সমস্যা হলেই নীচে গিয়ে একটা সিগারেটে টান না দিলে নাকি উদ্বেগ কমে না। কর্মক্ষেত্রে চাপ, সংসারিক টানাপড়েনের কারণে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে জীবনে। মানসিক চাপ কমাতে পারলেই ধূমপানের আসক্তিও কমবে। মানসিক চাপ কমতে পারে যোগাসনের গুণে।


কিন্তু নিয়মিত কোন আসন করলে এবং যেসব পন্থা অবলম্বন করলে আপনি নিত্য জীবনের উদ্বেগ কমাতে পারেন, তা জেনে নিন-


উষ্ট্রাসন: উষ্ট্রাসন আসন রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে মস্তিস্কে বেশি অক্সিজেন যায়। মন অনেক শান্ত হয়। মাটিতে হাঁটুর উপর ভর করে বসে শরীর পেছনের দিকে হেলিয়ে দিয়ে দু’হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন।


সেতু বন্ধাসন: সেতু বন্ধাসন আসনও শরীরের রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। শিরদাঁড়ার জন্যেও এ আসন খুব ভালো। মাটিতে শুয়ে পড়ুন। তার পর হাঁটু ভাঁজ করে সামনের দিকে নিয়ে আসুন। এ বার শরীরটা হাওয়ায় তুলে দু’হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। কয়েক সেকেন্ড এই অবস্থায় থেকে শবাসনে ফিরে আসুন।


ভদ্রাসন: যোগব্যায়ামের অন্যতম সহজ ও সাধারণ আসন ভদ্রাসন। কিন্তু আপনার পায়ের মাংসপেশিগুলো স্ট্রেচ করার জন্য দারুণ ব্যায়াম এটি। নিয়মিত করলে মনও অনেক শান্ত হবে। মাটিতে বসে দু’পায়ের পাতা একে অপরের সঙ্গে জুড়ে নিন। হাতের পাতা দু’টিও রাখুন পায়ের পাতার উপর।


বালাসন: যোগাসনের সবচেয়ে রিল্যাক্সিং আসন বালাসন। ইংরেজিতে এর নাম ‘চাইল্ডস পোজ’। মন শান্ত করার জন্য এই আসনের জুড়ি মেলা ভার। হাঁটু মুড়ে গোড়ালির ওপর বসুন। এ বার শরীরটা বেঁকান। শরীরটা এমন ভাবে বেঁকান যাতে বুক গিয়ে উরুতে ঠেকে। মাথা মেঝেতে রাখুন। আর হাত দু’টি সামনের দিকে প্রসারিত করে রাখুন। এই আসন স্নায়ুতন্ত্রের জন্য খুব উপকারী। সেই সঙ্গে ঘাড় ও পিঠের ব্যথা কমাতেও এর জুড়ি নেই।


ধ্যান: শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করলে মনের দুশ্চিন্তাগুলো অনেকটা কমানো সম্ভব। ১০-১৫ মিনিট চুপ করে ধ্যান করলেও উপকার পাবেন।


‘কুইট শিওর’ অ্যাপ: ‘কুইট শিওর’ অ্যাপের মাধ্যমেও ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য সেবনের মতো ক্ষতিকর অভ্যাস খুব সহজেই ত্যাগ করা সম্ভব। অ্যাপটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, খুব সহজেই মাত্র ৬ দিনেই ছাড়া যাবে ধূমপানের ক্ষতিকর অভ্যাস। ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রতিদিন তাদের অ্যাপে ঘণ্টা দেড়েক সময় কাটাতে হবে। এই অ্যাপে দেওয়া কিছু আর্টিকেল পড়তে হবে। ভিডিও দেখতে হবে এবং যেমন নির্দেশ দেওয়া থাকবে, তেমন শরীরচর্চাও করতে হবে। আর এর মাধ্যমেই ধূমপানের মতো ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে পারবেন ধূমপায়ীরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.