বাড়ির নিচে ব্যাগভর্তি কয়েনের সন্ধান; বিনিময়ে নোট ভাঙিয়ে দিতে অস্বীকৃতি ব্যাংকের!
ODD বাংলা ডেস্ক: প্রায় নয় মাস আগের কথা। জন রিয়েস নামের এক মার্কিন ব্যক্তি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তার পরলোকগত শ্বশুরের লস এঞ্জেলসের বাড়ি পরিষ্কার করছিলেন। এমন সময় দম্পতি হঠাৎ খেয়াল করলেন, বাড়িটির নিচে বেজমেন্টে বেশ কয়েকটি ব্যাগভর্তি কপারের অজস্র কয়েন রাখা আছে।
প্রথমদিকে দম্পতি ভাবলেন, প্রচণ্ড ভারী এ কয়েনগুলো ব্যাংকের কাছ থেকে ভাঙিয়ে নেবেন। সেক্ষেত্রে কয়েনগুলোর জন্য মোটাদাগে তারা ১০ হাজার মার্কিন ডলার দাবি করেন।
তবে নোট ভাঙানোর বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি; বরং কয়েনগুলো নিয়ে উল্টো অনেকটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন এ দম্পতি।
জন রিয়েস বলেন, "স্থানীয় একটি ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের ভল্টে কয়েনগুলো রাখার জন্য এত বিশাল পরিমাণ জায়গা নেই।"
কয়েনগুলোকে নোট আকারে ভাঙাতে ব্যাংকে গেলে অস্বীকৃতি জানিয়ে ওয়েলস ফার্জো ব্যাংকের একটি ব্রাঞ্চের ম্যানেজার বলেন, "কয়েনগুলো এখানে আনবেন না।"
কয়েনগুলো প্রায় শত বছর ধরে তৎকালীন ব্যাংকের সরবারাহ করা ব্যাগে বেজমেন্টে রাখা ছিল। রিয়েস জানান, এগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের এখন আর অস্তিত্ব নেই।
ব্যাগভর্তি কয়েনগুলো বাড়ি থেকে সরাতে দম্পতির পুরো একদিন লেগেছে। রিয়েস বলেন, "আমাদের একের পর এক ব্যাগ বেজমেন্ট থেকে সরিয়ে সিঁড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসতে হয়েছে। এরপর সেগুলোকে ট্রাকে করে নিয়ে যেতে হয়েছে।"
রিয়েসের শ্বশুরের বাড়িটি ১৯০০ এর দশকে তৈরি করা হয়েছিল। এখানে পাওয়া একদম বিশুদ্ধ কপারের তৈরি কয়েনগুলো ১৯৪৩ সালেরও আগেরকার।
কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্রে এক সেন্টের কয়েনগুলো তৈরি করা হতো কপার দিয়ে। তবে বিশ্বযুদ্ধের কারণে ধাতুর সংকট দেখা দিলে দেশটি অন্য ধাতু দিয়ে কয়েন তৈরি শুরু করে। বর্তমানে জিংক দিয়ে কয়েন তৈরি করা হয়।
দম্পতির পক্ষে সবগুলো কয়েন গোণা সম্ভব হয়নি। এমনকি সেগুলো এতটাই ভারী ছিল যে, গাড়িটি তা বহন করতেও হিমশিম খাচ্ছিল। তাই পরিবহনের সময় তাদের গাড়িটিকে অপেক্ষাকৃত ধীরগতিতে চালাতে হয়েছিল।
সম্প্রতি একজন ব্যাংকারের সাথে পরামর্শ করে এ দম্পতি কয়েনগুলো অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ভেতরে কোনো মূল্যবান কয়েন আছে কি-না, সেটি না খুঁজেই বরং পুরো লট ধরে ২৫ হাজার ডলারে কয়েনগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ দম্পতি।
রিয়েস জানান, কয়েন বিক্রির অর্থ দিয়ে তারা পরবর্তী প্রজন্মের বসবাসের জন্য বাড়িটি সংস্কার করবেন। একইসাথে তিনি জানান, তার এমন অনুভূতি হচ্ছে যেন, শ্বশুরের মৃত্যুর ১০ বছর পরেও তিনি পরিবারকে সাহায্য করছেন।
Post a Comment