বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে টরিন, বলছে গবেষণা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সবাই দীর্ঘদিন তারুণ্যের স্বাদ পেতে চায়। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মেই একটা সময় চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকে। সেই বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে এমন একটি অণুর কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেটি হলো টরিন (Taurine)।


টরিন একটি অ্যামিনো অ্যাসিড, যা কোনো প্রাণীর কোষে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য এবং সঠিক হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন এনার্জি ড্রিংকে যোগ করা হয় এবং অনেক খাবারেও প্রাকৃতিকভাবে এটি পাওয়া যায়।


বৃহস্পতিবার সায়েন্স রিপোর্টে আন্তর্জাতিক মানের একদল গবেষকের গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে এনবিসি নিউজের এক খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।


এর একজন গবেষক নিউ ইয়র্ক সিটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল ভ্যাগেলোস কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জন-এর জেনেটিক্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সহকারী অধ্যাপক বিজয় যাদব। তিনি বলেন, ‘এটি সত্যিই একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময়। কারণ, গবেষকরা এখন টরিনের মতো নির্দিষ্ট অণুগুলি অন্বেষণ করছেন, যা স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে এবং প্রাণীদের দীর্ঘ জীবনযাপনে সাহায্য করতে পারে।’


ইঁদুর এবং বানরের ওপর গবেষণা করে গবেষকরা নাটকীয় ফলাফল পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তারা সায়েন্স রিপোর্টে জানিয়েছেন, টরিন প্রাণীর শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা উন্নত করে, হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্যকর লিভার ও উন্নত ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে প্রাণীর শরীরে বার্ধক্য আসে ধীর গতিতে। মানে কোনো প্রাণীকে স্বাভাবিক বয়সে যতটা বয়স্ক লাগে টরিন প্রয়োগের পরে তার সেই বার্ধক্য রোধ করে। এটি মানব শরীরেও ভালো কাজ করবে বলে আশা গবেষকদের।


কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইপিআইসি-নরফোক স্টাডি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ৪০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ৩০ হাজার পুরুষ ও নারীর স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং শারীরিক কার্যকলাপ ট্র্যাক করে গবেষকরা দেখেছেন, সামগ্রিকভাবে উচ্চ টরিনের মাত্রাযুক্ত ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যকর ছিলেন। নিম্ন স্তরের প্রদাহ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ বা মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল তাদের। এর ফলে তাদের শরীরে বার্ধক্যের ছাপ দেরিতে পড়ে।


টরিন বাড়াতে পারে ব্যায়াম


আরেকটি অনুসন্ধানে গবেষকরা মানুষের ব্যায়ামের পরিমাণ এবং তাদের টরিনের মাত্রার মধ্যে একটি সম্পর্ক আবিষ্কার করেছেন। ইপিআইসি-নরফোক গবেষণা থেকে তথ্য যাচাই করে, গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন ব্যায়ামের সঙ্গে টরিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।


টরিনযুক্ত খাবার


মানুষের শরীর অল্প পরিমাণে টরিন তৈরি করতে পারে, যার বেশিরভাগই খাবারের মাধ্যমে পাওয়া যায়।


ঝিনুক, গাঢ় রঙের মুরগি এবং টার্কির মাংসে সর্বোচ্চ মাত্রার টরিন থাকে। অন্যান্য মাংসে মাঝারি পরিমাণে টরিন থাকে। এ ছাড়া দুধ এবং আইসক্রিমের মতো দুগ্ধজাত দ্রব্যগুলিতেও টরিন থাকে স্বল্প মাত্রায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.