শুচিবায়ু হলে কী চিকিৎসা করবেন?

 


ODD বাংলা ডেস্ক: শুচিবায়ু রোগ হল উদ্বেগজনিত মানসিক ব্যাধি যা নিয়ন্ত্রণহীন, অযাচিত চিন্তাভাবনা এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজকর্ম বা আচরণের সমষ্টি যা আপনি  মনের অজান্তেই করছেন বা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এক কথায় একই কাজ বারবার করাই হলো শুচিবায়ুগ্রস্থতা।

শুচিবায়ুগ্রস্থতা মস্তিষ্ককে একটি বিশেষ চিন্তাভাবনায় আটকে দেয়। 


প্রধান কারণগুলো হচ্ছে-


জৈবিক কারণ: দেহের রাসায়নিক বা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপগুলির পরিবর্তনের ফলাফলস্বরূপ এ রোগ  হতে পারে।


জীনগত কারণ: জিনগত উপাদান দায়ী থাকতে পারে তবে বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট জিনগুলি এখনও সনাক্ত করতে পারেনি।


পরিবেশগত কারণ: কিছু পরিবেশগত কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে তবে এ জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন


এই শুচিবায়ু রোগের দুইটি ধাপ, অবসেশন ও কমপালশন:

অবসেশন হল অনিচ্ছাকৃত চিন্তাধারা যা আপনার মনের মধ্যে বারে বারে আসে। আপনি এই ধারণাগুলি রাখতে চান না তবে আপনি এগুলো থামাতেও পারেননা। দুর্ভাগ্যক্রমে, এ চিন্তাভাবনাগুলো প্রায়শই নেতিবাচক, বিরক্তিকর এবং বিভ্রান্তিকর হয়।


কমপালশন হল এমন একটি অবস্থা যা আপনাকে কোনো কাজ বারবার সম্পাদন করতে পরিচালিত  করে। এর ফলে আপনি একই কাজ বারবার করতে থাকেন। বাধ্যতামূলক এই  আচরণগুলো প্রায়শই অতিরিক্ত  দুশ্চিন্তার সৃষ্টি এবং সময়সাপেক্ষ হয়ে ওঠার কারণে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। 


লক্ষণসমূহ: শুচিবায়ুগ্রস্থতার লক্ষণগুলো সাধারণত অবসেসিভ চিন্তা ও কম্পালসিভ আচরণের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যখন আপনার মধ্যে কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দেয় এবং এই দুশ্চিন্তার ফলে আপনি একই কাজ বারবার করতে থাকে সেটাই হলো শুচিবায়ু রোগ।


চিকিৎসা: শুচিবায়ু রোগের প্রধান দুটি চিকিৎসা হ'ল সাইকোথেরাপি এবং ওষুধ।   আক্রান্ত  ব্যক্তির জন্য এক ধরণের সাইকোথেরাপি, কগনিটিভ বিহেভিয়রাল থেরাপি বা সিবিটি থেরাপি  সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা।


পারিবারিক থেরাপি: যেহেতু শুচিবায়ু রোগ প্রায়শই পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে সমন্বয়হীনতা সৃষ্টি করে, তাই পারিবারিক থেরাপি এই ব্যাধিটিকে বোঝার জন্য এবং পারিবারিক দ্বন্দ্ব হ্রাস করতে সহায়তা করে।  এটি পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রাণিত করতে এবং তাদের প্রিয়জনকে কীভাবে  সহায়তা করতে পারে তা শিখিয়ে দিতে পারে।


গ্রুপ থেরাপি: অন্য আক্রান্ত রোগীদের সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে গ্রুপ থেরাপি বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি হ্রাস করে এবং নিজের উপর আস্থা বাড়ায়।


প্রতিরোধ:শুচিবায়ু একটি জটিল মানসিক রোগ হলেও আপনি নিজেই কিন্তু অনেকাংশেই রোগটি প্রতিরোধ করতে পারেন। আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হন বা হওয়ার ভয় থাকে তাহলে আপনি আপনার জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসুন আজই। যেমন- নিয়মিত প্রার্থনা করুন, ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান, সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.