একা থাকা আর নয়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বন্ধুদের অনেকেই হয়তো ফুল কিনছে কিংবা কোনো গিফটের দোকানে গিফট পছন্দের কাজে মহাব্যস্ত সময় পার করছে। কারণ আর কিছুই নয়। পছন্দের মানুষকে পছন্দের জিনিসটি গিফট করতে হবে। এ সময় হয়তো আপনি খুবই একাকিত্ববোধ করছেন।


কারণ আর কিছুই নয়। এই তো কিছুদিন হলো আপনার পছন্দের মানুষের বিয়ে হয়ে গেছে অন্য জায়গায় কিংবা কয়েকদিন আগেই আপনার ভালোবাসার মানুষটির সাথে আপনার ব্রেকআপ হয়ে গেছে। আবার এমনও হতে পারে আজ পর্যন্ত আপনার জীবনে কোনো প্রেমই আসেনি। যেখানে আপনার বন্ধুরা দিব্যি চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছে, সেখানে আপনি রয়ে গেলেন একা। হয়তো সেজন্য আপনার মনের মাঝে খুবই কষ্টের খোঁচা খোঁচা ব্যথা হয়। আজ নিজেকে সেজন্য একটু বেশিই বোকা বোকা লাগছে এমনও মনে হতে পারে আপনার। সেজন্য অবশ্য অনেক চেষ্টাও করেছিলেন যদি কেউ একজন পাশে এসে দাঁড়াত। কিন্তু কিছু থেকে যখন কিছুই হলো না। 


এসএমএস কিংবা সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের রমরমাতেও এল না কেউ। জ্যোতিষী ফেংশুইয়েরও কয়েক ডোজ হয়ে গিয়েছে। তাতেও ফল মেলেনি এতটুকু। এ রকম অবস্থাতেই ভ্যালেন্টাইনের মতো দিনগুলো সত্যিই কাঁটা গায়ে নুনের ছিটার মতো ঠেকছে মনের মাঝে। বাইরে বসন্তের হাতছানি অথচ তাতে সাড়াও দিতে পারছেন না। জোড়ায় জোড়ায় বেরিয়েছে সকলে ঠিক কপোত-কপোতি হয়ে। সবাই যাচ্ছে পার্কে, মলে আরও অনেক জায়গায় হাতে হাত ধরে। কার্ড-গিফট আইটেমের দোকান, পিজ্জার আউটলেট, কফি শপ—এসব দিনে ওখানে যে একা যাওয়াটা অনেক লজ্জার বিষয়। এ একেবারে ক্লাসিক রোমান্টিক ব্যর্থতা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি এই ব্যর্থতার ফুটেজ দিয়ে টোটালি মুড অফ করে ‘এ জীবন বৃথা’ টাইপের ভাবনা নিয়ে বসে থাকব? নাকি প্রেম, ভালোবাসার ট্র্যাডিশনাল কনসেপ্টগুলোর প্রতি একটু অন্য অ্যাপ্রোচ নেব। খাওয়াদাওয়া, গান শোনা, গেমস খেলা, বই পড়া, ছবি দেখা বা শপিংসহ আমি যা যা করতে ভালোবাসি—সেইসব একটু অন্যভাবে করব। 


নিজেকে নিজে ট্রিট দেওয়া যায় না, প্যাম্পার করা যায় না? অবশ্যই যায়। বন্ধুদের মধ্যে যারা সিঙ্গল আছে তাদের সাথেও আড্ডা দিয়ে নিঃসঙ্গ দিনগুলোকে মধুময় করে রাখা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিপরীত লিঙ্গের কেউ হলে তার সাথে শুধুমাত্র বন্ধুত্বটাই রাখা ভালো। নিজেকে যতভাবে ব্যস্ত রাখা যায় তার সবটুকু না করলে তাহলেই দেখা যাবে একাকিত্ব পেয়ে বসবে না। নিজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখাটাও এক ধরনের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। চারদিকের পরিবেশ দেখে আবেগে গা ভাসাব না, হীনম্মন্যতায় ভুগব না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমাদের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস কখনও আমাদের পরিচয় নয়। বাড়িতে থাকলে বাড়ির কাজগুলো করতে পারি। পুরোনো কাজ বাকি পড়ে থাকলে তাও সম্পন্ন করা যেতে পারে। তবে নতুনত্ব চাইলে নতুন কিছু রান্না করেও এসব নিঃসঙ্গ দিনকে আলাদা করে রাখতে পারি জীবনে। 


তাই এসব দিনে নতুন রেসিপি’র পরীক্ষাটা বেশ আনন্দ দিবে বলেই মনে হয়। কারও সঙ্গে নিজের এসব কাজের তুলনা না করাই শ্রেয়। তবে এই সময়গুলোতে নিজের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনাটা আঁটতে পারলে এবং তা সঠিকভাবে পালন করতে পারলে যেকোনো একটি দিন আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। একটা কথা অনেকের মধ্যেই চালু আছে। যা হলো—লাইফ ইজ ফুল অব সারপ্রাইজেজ। কখন কী হবে কেউ জানি না। তাই প্রতিটা দিনকেই নতুন নতুন আনন্দের ছকে সাজাতে পারলেই ভালো। এই কথাগুলো মাথায় রেখে এগোতে পারলেই সিঙ্গেল দিনগুলোতে বিষণ্নতা বা হতাশায় ডুবে না গিয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল আনন্দে ভরিয়ে তুলুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.