শৌচালয়ে ভুল দিকে কোমোড রাখলেই বাড়বে বিপদ! বাস্তু জানাচ্ছে সঠিক নিয়ম

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বাস্তু শাস্ত্রকে আমরা বাস্তু বিজ্ঞানও বলে থাকি। এই শাস্ত্রটি বৈজ্ঞানিক দিক দিয়েও গড়ে উঠেছে। বর্তমানে আমরা প্রত্যেকে বাস্তু শাস্ত্র সম্মত বাড়ি তৈরি করার ওপর জোর দিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্য রশ্মি আসছে কি না, তার পাশাপাশি পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্রের ভৌগলিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিচার করা হয়। বাড়ি তৈরির সময় বাস্তু মেনে রান্নাঘর, ঠাকুরঘর, পড়াশোনার কক্ষ বা শয়নকক্ষ তৈরি করে থাকি আমরা। এর পাশাপাশি বাস্তুর নিয়ম অনিযায়ী সঠিক স্থানে শৌচালয় তৈরি করাও জরুরি। শুধু তাই নয়, শৌচালয়ে কোমোড কোন দিকে রাখবেন, তা-ও বাস্তুর নিয়ম মেনে নির্ধারণ করা উচিত। ভুল দিকে নির্মিত শৌচালয় আর্থিক লোকসান, স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কী ভাবে ও কোন দিকে শৌচালয় তৈরি করবেন জেনে নিন।


কোন দিকে শৌচালয়?

বাড়ির উত্তর-পশ্চিম বা উত্তর দিকে ডাস্টবিন রাখা উচিত। তাই এই দিকেই শৌচালয় তৈরি করবেন। এর ফলে পরিবারে নেতিবাচক শক্তির সঞ্চার হবে এবং শুভ শক্তি বিস্তার লাভ করবে।


কোন দিকে শৌচালয় বানাবেন না?


পূর্ব অথবা উত্তর পূর্ব দিকে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কাজ করা হয়ে থাকে। তাই বাড়ির এই অংশে কখনও শৌচালয় তৈরি করতে নেই। এর ফলে পারিবারিক সমৃদ্ধিতে প্রতিকূল প্রভাব পড়ে। পরিবারের সদস্যদের সুখ-সৌভাগ্যও প্রভাবিত হয়। তবে এক্কেবারেই সম্ভব না-হলে দক্ষিণ-পশ্চিম বা উত্তর-পূর্ব দিকে বাথরুম বানাতে পারেন।


শৌচালয়ের মধ্যে কোমোড কোথায় রাখবেন, সে সম্পর্কেও বাস্তু শাস্ত্রে উল্লিখিত রয়েছে। শাস্ত্র মতে কোমোড সব সময় এমন দিকে রাখা উচিত, যাতে তা ব্যবহারের সময় ব্যক্তির মুখ বাড়ির উত্তর বা দক্ষিণ দিকে থাকে। এর ফলে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।


কোমোড রাখুন ওপরের দিকে


বাস্তু অনুযায়ী শৌচালয় সাধারণ বাড়ির সমতলের তুলনায় একটু উঁচুতে বানানো উচিত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন করা সম্ভব হয় না। তাই শৌচালয়ের মধ্যে উঁচু স্থানে কোমোড রাখুন। অন্য দিকে টয়লেট সিটের ওপর জলের ট্যাঙ্ক ছাড়া অন্য কিছু রাখবেন না।


প্রাচীন কালে মহিলা ও পুরুষদের শৌচালয় পৃথক পৃথক হত। বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী মহিলাদের শৌচালয় দক্ষিণ-পশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে থাকা উচিত নয়। কারণ এর ফলে মহিলাদের স্বাস্থ্যে খারাপ প্রভাব পড়ে।


বাড়ির মাঝখানে শৌচালয়ে বানাবেন না


বাড়ির কেন্দ্র স্থানে অধিক শক্তি বিদ্যমান থাকে। একে ব্রহ্মস্থান বলা হয়। তাই বাড়ির মধ্য অংশে কখনও টয়লেট সিট বানাতে নেই। এর ফলে পরিবার ও পরিবারের সদস্যদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শুধু বাড়িই নয়, বাণিজ্যিক স্থানেও এমন করতে নেই।


বাথরুমের দরজা কী দিয়ে তৈরি করবেন, সে বিষয়েও শাস্ত্রে জানানো হয়েছে। শৌচালয়ের দরজা কোনও ধাতু দিয়ে তৈরি হলে, সেখান থেকে শক্তি বেরিয়ে বৈঠকে এসে পৌঁছয়, যা ইতিবাচক শক্তির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই নিজের বাথরুমে কাঠের দরজা লাগাবেন। এর ফলে শৌচালয় থেকে নির্গত নেতিবাচক শক্তির প্রভাব কম করা যাবে।


বাথরুমের দরজার দিক


বাথরুমের দরজাটি যাতে উত্তর অথবা পূর্ব দিকে খোলে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পূর্ব দিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য শুভ। তাই বাথরুমের মুখোমুখি কখনও ঠাকুরঘর বানাবেন না।


শাস্ত্র মতে বাড়ির উত্তর দিকে শৌচালয়ের মুখ থাকা উচিত। এর ঠিক ওপরের দিকে জানালা তৈরি করলে পরিবারের সদস্যদের লাভ হতে পারে।


বাথরুমের দেওয়ালে আয়না লাগানোর সঠিক দিক


বাস্তু শাস্ত্রে দর্পণকে বিশেষ মাহাত্ম্য দেওয়া হয়। আয়না ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ধরনের শক্তিকে প্রতিবিম্বিত করে। তাই বাথরুমের পূর্ব দেওয়ালে পশ্চিম দিকে মুখ করে অথবা দক্ষিণের দেওয়ালে উত্তর দিকে মুখ করে আয়না লাগানো উচিত।


বাস্তু অনুযায়ী শৌচালয় ও বাথরুম পৃথক পৃথক হওয়া শ্রেয়। কারণ বাথরুমে চন্দ্রের প্রভাব থাকে এবং শৌচালয়ে রাহু-কেতুর। চন্দ্র ও রাহু-কেতুর মধ্যে বৈরীতার সম্পর্ক রয়েছে। তাই এই দুটি পৃথক করাই শ্রেয়।


কোন দিকে ঢালু হবে বাথরুম?


বাথরুম উত্তর দিকে ঢালু হওয়া বাস্তু শাস্ত্র সম্মত। এ দিকেই জল নিকাশি পাইপ যুক্ত থাকা উচিত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.