চাঁদের গায়ে কীসের দাগ? আগে দুধের মতো সাদা থাকলেও এই ঘটনার পরেই কলঙ্ক লাগে চাঁদে!
ODD বাংলা ডেস্ক: রাতের আকাশে আলো ঝলমল চাঁদ রানীর মতো বিরাজ করে। তবে সুন্দরী চাঁদের গায়েও রয়েছে কালো কলঙ্কের দাগ। বিজ্ঞানীরা চাঁদের গায়ের ওই কালো দাগগুলি আসলে চাঁদের বুকের পাহাড় পর্বত খানা খন্দ বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ধার্মিক দিক থেকে চাঁদের গায়ের এই কালো ছোপের অন্য ব্যাখ্যা আছে। জেনে নিন চাঁদের গায়ের কালো দাগ সম্পর্কে কী বলা আছে হিন্দুশাস্ত্রে।
বৈদিক জ্যোতিষে চাঁদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে চাঁদ হল জল ও মনের কারক গ্রহ। চাঁদ হল ২৭টি নক্ষত্রের গ্রহ অধিপতি। কথায় বলে চাঁদের ষোল কলা। এই ষোল কলা হল চাঁদের এক একটি পর্যায়। অমাবস্যায় আকাশে চাঁদ থাকে না। তার পরের দিন থেকে একটু একটু করে চাঁদ বাড়ে। অর্থাত্ একটি একটি করে কলা যুক্ত হয় চাঁদের সঙ্গে। এই ভাবে ষোল দিন পর পূর্ণিমার পূর্ণচন্দ্রে চাঁদের ষোল কলা পূর্ণ হয়।
পুরাণ অনুসারে চাঁদ এক সময় পুরো দুধের মতো সাদা ছিল। কিন্তু অভিশাপের কারণে চাঁদের গায়ে কালো ছোপ পড়ে এবং চাঁদের ঔজ্জ্বল্য কিছুটা ম্লান হয়। সতী যখন দক্ষ যজ্ঞের আগুনে আত্মাহুতি দেন, তখন সতীর বাবা রাজা দক্ষকেই এর জন্য দায়ী করেন মহাদেব এবং তাঁকে বধ করতে উদ্যত হন। মহাদেব যখন দক্ষরাজার দিকে তীর ছোঁড়েন, তখন তাঁর থেকে বাঁচতে চাঁদের পেছনে একটি হরিণের রূপ ধরে গিয়ে লুকোন দক্ষরাজ। বলা হয়ে থাকে এই হরিণই কালো ছোপের মতো ফুটে ওঠে চাঁদের গায়ে। এই কারণেই চাঁদের আর এক নাম মৃগাঙ্ক। মৃগ অর্থে হরিণ এবং অংক অর্থে কলঙ্ক বা দাগ।
আবার আরও একটি গল্প অনুসারে চাঁদ একবার শনির বোন যমুনার দিকে খারাপ দৃষ্টি দেন। সেই রাগে শনি চাঁদকে বধ করতে উদ্যত হন। চাঁদ গিয়ে মহাদেবের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। তখন মহাদেব শনিকে বলেন যে তাঁর সাত বার চোখের পাতা খুলতে ও বন্ধ করতে যত সময় লাগবে, সেই সময়টা ধরে চাঁদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবে শনি। শনির ছোঁড়া এই পাথরগুলিই চাঁদের গায়ে কালো দাগের সৃষ্টি করে। আর শেষ বার চোখের পাতা খোলার সময় মহাদেব উপলব্ধি করেন যে চাঁদের শাস্তি এখনও যথেষ্ট হয়নি। তখন শেষ বার চোখের পাতা খুলতে একটু বেশি সময় নেন মহাদেব। এই সাড়ে সাতবার মহাদেবের চোখ খোলা ও চোখ বন্ধ করার কারণেই হয় শনির সাড়ে সাতি দশা।
Post a Comment